উদ্ভাবিত কার নিয়ে চীনা প্রতিযোগিতায় যাচ্ছেন আইইউটি শিক্ষার্থীরা
Published: 22nd, September 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অব টেকনোলজির (আইইউটি) একদল শিক্ষার্থী ৩ বছর চেষ্টার পর ফর্মুলা-স্টাইল কার তৈরি করেছেন। সফলভাবে তারা এই গাড়ি তৈরি করতে পারায় আনন্দিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আগামী মাসে শিক্ষার্থীদের নিজের ডিজাইনে তৈরি এ ফর্মুলা-স্টাইল রেস কার চীনে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে। এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশ, রাশিয়া, ইতালি, চীনসহ ১৪টি দেশ।
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রামে হয়ে গেল কলাগাছের ভেলার বাইচ প্রতিযোগিতা
রাবিতে প্রযুক্তি প্রেমীদের নিয়ে ‘রোবটিড ২.
শিক্ষার্থীরা জানান, গাড়িটিতে ব্যবহৃত হয়েছে KTM Duke 390 ইঞ্জিন (৩২ কিলোওয়াট, ৩৫ নিউটন-মিটার টর্ক), স্টেইনলেস স্টিল ওয়েল্ডেড স্পেসফ্রেম চ্যাসি, ডাবল এ-আর্ম সাসপেনশন এবং ৯১ অকটেন জ্বালানি।
গাড়িটির দৈর্ঘ্য ৩১৮১ মিমি, প্রস্থ ১৪০৯ মিমি এবং উচ্চতা ১০৩৯ মিমি। আইইউটির মেকানিকাল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের এ দলটি যাত্রা শুরু করেন ২০২১ সালে। ইতোমধ্যে তারা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ফর্মুলা ভারত ২০২৩ (কনসেপ্ট ক্লাস)-এ তৃতীয় স্থান এবং ফর্মুলা ইম্পেরিয়াল ২০২৪-এ সপ্তম স্থান অর্জন করেন তারা।
শিক্ষার্থী ও টীম লিডার আনসানুল আমীন বলেন, “এবার আমরা প্রথমবারের মতো সরাসরি অংশ নিচ্ছি ফর্মুলা স্টুডেন্ট চায়নাতে (FS China), যা এশিয়ার অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ফর্মুলা স্টুডেন্ট প্রতিযোগিতা। আমাদের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করে অভিজ্ঞতা অর্জন, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং সেরা দলের মধ্যে অবস্থান নিশ্চিত করা। ভবিষ্যতে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি তৈরি করে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করাই আমাদের লক্ষ্য।”
মেকানিকাল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আহসান হাবিব বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এ সফলতা অর্জন করেছে। চলতি মাসেই তারা গাড়িটির সফল হয়েছে। এখন গাড়িটি প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত। তারা দেশের বাহিরে প্রতিযোগিতায় যাচ্ছে, এটি যেমন শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা বাড়াবে, তেমনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের জন্য গৌরবের।”
আগামী অক্টোবর মাসের ৮-১২ তারিখ চীনে অনুষ্ঠিত হবে শিক্ষার্থীদের এ কার প্রতিযোগিতা। আগামী সপ্তাহে গাড়িটি বিমানে পাঠানো হবে। আইইউটি থেকে ৪০ সদস্যের একদল শিক্ষার্থী ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিবে। তাদের বানানো গাড়ি নিয়ে যেমন আশাবাদী ও আনন্দিত। বিশ্ব পরিমণ্ডলে নতুন কিছু চেখার পাশাপাশি দেশের মানচিত্র উজ্জ্বল করতে চান তারা।
ঢাকা/রেজাউল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র ফর ম ল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃষ্টির মধ্যে অনশনে একদল শিক্ষার্থী, অসুস্থ দুজন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কাফনের কাপড় জড়িয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন এক শিক্ষার্থী। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে সামনে এই অনশন অব্যাহত রেখেছেন তিনি। রাতে তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন আরও তিন শিক্ষার্থী। পরে আজ শনিবার সকালে একদল শিক্ষার্থী সেখানে যুক্ত হয়েছেন।
আজ শনিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে সামনে এসব শিক্ষার্থীদের অনশনরত অবস্থায় দেখা গেছে। পরে সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুজন। তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনপোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনাকে রাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র বলছেন প্রার্থীরা১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫অনশন শুরু করা ওই শিক্ষার্থীর নাম আসাদুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর ব্যানারে লেখা আছে—‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নামক বিষফোড়া পুনর্বহাল রাখার প্রতিবাদে আমরণ অনশন ধর্মঘট’। রাতে আসাদুলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রমজানুল মোবারক, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সজিবুর রহমান এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে সমাজকর্ম বিভাগের আরিফুল ইসলাম। এ ছাড়া আজ সকালে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে যোগ দিয়েছেন। তাদের রমজানুল মোবারক ও সাঈদ নামের দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়।
অনবরত অবস্থায় আসাদুল ইসলাম বলেন, পোষ্য কোটা নামের বিষফোড়া আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এটিকে নির্মূল করার জন্যই এই কর্মসূচি। পোষ্য কোটা বাতিল না করা পর্যন্ত তিনি অনশন ভাঙবেন না।
আরও পড়ুনপোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ২১ ঘণ্টা আগেরমজানুল মোবারক বলেন, রাকসুকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সুযোগ নিয়েছেন। তাঁরা পোষ্য কোটা বাতিলের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদও (রাকসু) চান।
আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে যান প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও ছাত্র উপদেষ্টা সহযোগী আমিরুল ইসলাম। কিন্তু তাঁদের কথাতেও অনশন ভাঙেননি শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই অনশন চালিয়ে যান তাঁরা।
আরও পড়ুনপোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে সাড়ে ৪ ঘণ্টা বিক্ষোভ, আজ দুপুরে নতুন কর্মসূচি১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ বিষয়ে আমিরুল ইসলাম আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনশনরত দুই শিক্ষার্থী বৃষ্টিতে ভিজে অসুস্থ পড়েছে। তাঁদের মেডিকেলে নিয়ে এসেছি। দুজনেরই ঠান্ডাজ্বর লেগেছে। তাঁদের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের একজনকে আবাসিক হল এবং অন্যজনকে মেসে দিতে যাচ্ছি।’
গত বৃহস্পতিবার প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১০টি শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনের সভাপতিত্বে সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি উপকমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই প্রতিবাদ শুরু করেন। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চলে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পরও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।
আরও পড়ুনরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ শর্তে ফিরল পোষ্য কোটা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫