Prothomalo:
2025-11-07@17:28:19 GMT

‘আমার তর্পণে সেই পরম ব্রহ্ম..’

Published: 23rd, September 2025 GMT

মহালয়ার তাৎপর্যের দিকে তাকালে বোঝা যায় কতটা বৈশ্বিক ও মানবিক দর্শন যেকোনো ধর্মবিশ্বাস আমাদের উপহার দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই ‘মহালয়া’ পদটি মূলত আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথির অপর নাম।

এই মহালয়া তিথিতে আমরা মূলত আমাদের ছয় উর্ধ্বতন পিতৃপুরুষের স্মৃতি, কাজ, করে যাওয়া কর্তব্যের উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতা জানাই। এই ছয় পিতৃপুরুষ হচ্ছেন বাবা, ঠাকুর্দা, ঠাকুর্দার বাবা; মায়ের বাবা, মায়ের বাবার বাবা, মায়ের বাবার ঠাকুর্দা।

তবে এখানের মন্ত্রে ‘পিতরঃ’ শব্দের অর্থে মা, ঠাকুর্মা, দিদাও চলে আসে। কারণ সংস্কৃতে ‘পুত্রাঃ’ দিয়ে কিন্তু শুধু ছেলে না, ছেলে-মেয়ে উভয়কে বোঝায়। পুত্রা মানে বাংলাতে যাই হোক, সংস্কৃতে ‘সন্তান’। তেমনি এই ‘পিতরঃ’ শব্দটি। অর্থাৎ, পিতৃপক্ষ মানে কোন পুরুষতান্ত্রিকতা না।

মহালয়া তিথিতে আমরা মূলত আমাদের ছয় উর্ধ্বতন পিতৃপুরুষের স্মৃতি, কাজ, করে যাওয়া কর্তব্যের উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতা জানাই।

মাতৃগণের জন্যও এমন নিয়ম আছে, সেটি সুবিস্তারে আরো সংশ্লিষ্ট প্রসঙ্গে বলব। আপাতত বলি, মহালয়ার পরের পনেরটি তিথি তো ‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা’র জন্যই রাখা

আর যাদের বাবা মা জীবিত আছেন, বুঝতেই পারছেন, আপনাদের তর্পন করার দরকার নেই।

তো এই কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য প্রতীক হচ্ছে তিল, যব, চাল প্রদান, পণ্ডিত ব্যক্তি ও দরিদ্র ব্যক্তিদের সহায়তা করা ইত্যাদি। এই সমস্ত ব্যাপারকে ‘তর্পণ’ বলে।

আরও পড়ুনমহালয়া: পূর্বপুরুষদের স্মরণ ও শ্রদ্ধার তিথি২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এই যে তর্পণটা করা হয়, তা শুধু নিজের পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যেই করে কিন্তু কেউ ছাড় পাবে না। এগুলোর সঙ্গে দেবতর্পণ, মানুষ তর্পন, যম তর্পন এবং ঋষিতর্পণও করতে হয়। দেবতর্পণের মন্ত্রে তো উদ্ভিদকুল, সরীসৃপ, পাখি, পশু সবার অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে হয়।

আবার রামতর্পণ ও লক্ষ্মণতর্পণে এসে ত্রিভুবনের সমস্ত প্রয়াতকে জল তর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাতে হয়। সে যে ধর্ম, যে জাতি, যে মতবাদের হোক না কেন। এমনকি তাঁদের উদ্দেশেও তর্পণ করা হয়, জন্ম-জন্মান্তরে যাঁদের আত্মীয়-বন্ধু কেউ কোথাও নেই।

কী সুন্দর এই মন্ত্রটি:

ওঁ নমঃ যে বান্ধবা অবান্ধবা বা, যে অন্য জন্মনি বান্ধবাঃ।

তে তৃপ্তিং অখিলাং যান্ত, যে চ অস্মৎ তোয়-কাঙ্খিণঃ।।

অনুবাদ: যাঁরা আমাদের বন্ধু ছিলেন এবং যাঁরা বন্ধু নন, যাঁরা অন্য কোন জন্মে আমাদের বন্ধু ছিলেন (বা ছিলেন না), যাঁহারা আমাদের কাছ থেকে জলের (শ্রদ্ধার) প্রত্যাশা করেন , তাঁরা সম্পূর্ণরূপে তৃপ্তিলাভ করুন।

তাহলে বাঙালি হিন্দুদের মহালয়া নিয়ে এত আবেগ কেন? এর পেছনে আছেন মহাত্মা শ্রীবীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ও রেডিওতে তাঁর পরিবেশিত শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের অনুষ্ঠান ‘মহালয়া’।

মানে অনেক লোকের হয় না, নিঃসন্তান অবস্থায় মারা যায়? বা পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় মারা যায়.

..গণহত্যা জাতীয় ব্যাপারে এমন কত হয়, পরিবার জানেও না বেঁচে আছে না মরে গেছে, বা এমন কোনো সংস্কৃতিতে তার জন্ম যারা এসব করে না, কিন্তু সেই পরমাত্মার অংশ হিসেবে তারও তো এতে সমান ভাগ, তাই আমরা তাকেও বাদ দিচ্ছি না।

তাই তো মন্ত্রে বলে ‘আব্রহ্মস্তম্ভ পর্যন্তং জগত্‍ তৃপ্যতু...’। মানে আমার তর্পনে সবকিছু যিনি ধারণ করে আছেন সে ব্রহ্ম তৃপ্ত যেন হন, আবার নিজের স্বরূপ সম্পর্কে জানে না, জগতের এমন সব সত্তা, এমনকি সামান্য স্তম্ভ.. অর্থাৎ তৃণ-ঘাস, যাকে মাড়িয়ে আমি হয়তো একরকম জীবননাশই করি, তার সত্ত্বাও তৃপ্তি পাক।

তো এই সমস্ত কিছুর বিরাট এই সমাবেশটা, আলয়টাই মহালয়া। যার পরেই দেবীপক্ষের সূচনা। এখন ব্যাপারটার সঙ্গে মৃতরা জড়িয়ে তো, মৃত্যু মানেই তো মনে শোক জন্ম নেয়, তাই কথার মারপ্যাঁচে শুভ মহালয়া বলা গেলেও, ইংরেজি অনুবাদে ‘হ্যাপি’ মহালয়া বলা আসলেই যায় না। বরং একটু স্থির মনে পূর্বজদের কথা ভাবলে বিনয়ী ব্যক্তি বিষাদগ্রস্তই হন নিজের দিকে তাকিয়ে।

আরও পড়ুনমনসা: বাংলার লোকপ্রকৃতির দেবী১৬ জুলাই ২০২৫

তাহলে বাঙালি হিন্দুদের মহালয়া নিয়ে এত আবেগ কেন?

এর পেছনে আছেন মহাত্মা শ্রীবীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ও রেডিওতে তাঁর পরিবেশিত শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের অনুষ্ঠান ‘মহালয়া’। এটির জনপ্রিয়তা এতই বেশি যে অনেকে এটি একরকম ধর্মীয় অনুষঙ্গই মনে করেন। মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে উচ্চারিত স্তোত্র পাঠ না শুনলে মায়ের আগমনী সুরটা যেন ঠিক বেজে উঠে না।

প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী সঙ্গীতালেখ্য ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’ জনপ্রিয় প্রভাতী বাংলা বেতার আকাশবাণীর সর্বাধিক কাল ধরে প্রচারিত একটি অনুষ্ঠানের নাম। ১৯৩১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি মহালয়ায় এই অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হয়। তবে তখন মহালয়াতে না, বরং ষষ্ঠী তিথিতে ষষ্ঠ্যাদিকল্পারম্ভ সময়ে এটির সম্প্রচার করা হতো।

অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ দুর্গা সপ্তশতী থেকে দেবী চন্ডীর স্তোত্রপাঠ, বাংলা ভক্তিগীতি, ধ্রুপদীসঙ্গীত এবং বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনীর নাট্যরূপ। এই অনুষ্ঠানের সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন পঙ্কজ কুমার মল্লিক এবং গ্রন্থনা ও স্তোত্র পাঠ করেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র।

এই আবেগপ্রবণতা থেকেই মূলত বাঙালি ব্যাকরণে অশুদ্ধ রেখেও শুভ মহালয়া বলতে চায়। তবে এটার বিরোধিতা করা মানেও এই না যে মহালয়া অশুভ।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক সমগ্র কলকাতায় খুঁজে যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে নির্বাচন করেন। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র প্রথম রেকর্ড ধারণের আগে টানা তিন দিন উপবাস থেকে মাতৃভাবনায় আত্মনিমগ্ন ছিলেন যার কারণে তাঁর অন্তরে এমন ভাবের উদয় হয়েছিল যে তাঁর সেই স্তোত্রপাঠ কালজয়ী হয়েছে সকল বাঙালির হৃদয়ে।

১৯৬৬ সাল পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানটি সরাসরি প্রচারিত হতো। এরপর থেকে নানা কারণে ১৯৬৬ সালের রেকর্ডটি বাজানো হয়। ১৯৭৬ সালে সরকারমহলের চাপে আকাশবাণী মহিষাসুরমর্দিনীর পরিবর্তে ‘দেবীং দুর্গতিহারিণীম্‌’ নামে একটি ভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করেন। যেখানে শ্লোকপাঠ করেন উত্তমকুমার এবং সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।

কিন্তু বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের পরিবর্তে অন্য কারো চন্ডীপাঠ মেনে নিতে পারে নি সাধারণ জনগণ। বাধ্য হয়ে পরবর্তীতে দুর্গাষষ্ঠীর দিন পুনরায় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে অনুষ্ঠিত পূর্বের মহিষাসুরমর্দ্দিনী সম্প্রচার করা হয়। সম্প্রতি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সম্মানে এই ঘটনাটি নিয়ে ‘মহালয়া’ নামে কলকাতায় একটি সিনেমাও নির্মাণ করা হয়।

এই আবেগপ্রবণতা থেকেই মূলত বাঙালি ব্যাকরণে অশুদ্ধ রেখেও শুভ মহালয়া বলতে চায়। তবে এটার বিরোধিতা করা মানেও এই না যে মহালয়া অশুভ। মহাপুরুষদের দেহত্যাগের দিনকে আমরা তিরোভাব তিথি বলি। সেদিন অনেক ভাল ভাল কাজও করি। কিন্তু সেজন্য যেমন শুভ তিরোধান দিবস বলি না, তেমনি এই মহালয়ার স্মৃতি তর্পণের বিষয়টি।

সায়ন্তন সৈকত রায়: লেখক, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র সমালোচক

আরও পড়ুনমহালয়া কী কেন ১৭ অক্টোবর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র উদ দ শ র জন য মন ত র আম দ র র পর ব

এছাড়াও পড়ুন:

কারো চোখে পানি, ফেলছেন স্বস্তির শ্বাস: মামদানির জয়ে কী বললেন গার্ডিয়ানের পাঠকেরা

‘নিউইয়র্ককে যেন আবার নিউইয়র্ক বলে মনে হচ্ছে। এটা শুধু একটা নির্বাচন ছিল না। সবাই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন, যেন বহুদিন ধরে লাখ লাখ মানুষ তাঁদের শ্বাস আটকে রেখেছিলেন।’ কথাগুলো বলছিলেন নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটান এলাকার বাসিন্দা কেইথ অ্যালান ওয়াটস। শহরের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির জয়ে যারপরনাই খুশি তিনি।

নিউইয়র্কের বাসিন্দারা মামদানির জয়ে খুশি হবেন—এটাই স্বাভাবিক। তাঁদের সমর্থনেই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে মেয়র পদে জিতেছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির এই প্রার্থী। তবে নিউইয়র্কের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য শহরের বাসিন্দারাও মামদানিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, তাঁর ওপর ভরসা করছেন। তাঁরা বলছেন, ‘মামদানির জয় নির্মল বাতাসে নতুন করে শ্বাস নেওয়ার মতো।’

গত মঙ্গলবার স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমো ও রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে টপকে বিজয়ী হন ৩৪ বছর বয়সী মামদানি। এ নিয়ে পাঠকদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এর জবাবে নিউইয়র্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলের শত শত পাঠক তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার গার্ডিয়ানের ওয়েবসাইটে সেগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।

তরুণদের আস্থা

নির্বাচনী প্রচারে নিউইয়র্কবাসীর জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মামদানি। ম্যানহাটানের বাসিন্দা অ্যালান ওয়াটস দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে নিউইয়র্কবাসী একধরনের গ্লানির মধ্যে ছিলেন। বাড়িভাড়া বাড়ছিল, বেতন বৃদ্ধি থমকে ছিল, আশা হারিয়ে গিয়েছিল। তবে মামদানি যখন মুখ খুললেন, মনে হলো তিনি মানুষের জন্যই কথা বলছেন।’

মামদানিকে নিয়ে একই ধারণা নিউইয়র্কের বাসিন্দা মার্গারেট কোগানের। ৮১ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা এখন অবসর যাপন করছেন। তাঁর আশা—মামদানির নেতৃত্বে নিউইয়র্ক শহরে বসবাস করাটা আরও সাশ্রয়ী হবে; বিশেষ করে শ্রমিক শ্রেণি সুবিধা পাবেন, যাঁদের ওপর সবাইকে নির্ভর করতে হয়। মামদানির জয় ‘ঘুমিয়ে থাকা’ ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্য একটি জাগরণের বার্তা বলে মনে করেন তিনি।

মার্গারেট কোগানের বয়স হয়েছে। মার্কিন রাজনীতির বহু কিছু দেখেছেন তিনি। সেদিক দিয়ে ৩২ বছর বয়সী ডিলান এখন তরুণ। তিনি রাজনীতিতে আগ্রহ হারাচ্ছিলেন। তবে মামদানির প্রচারে মুগ্ধ ডিলান বলেন, তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাইমারি বা প্রার্থী বাছাইপর্বে ভোট দেননি। শেষ পর্যন্ত প্রচারে মামদানির উৎসাহ–উদ্দীপনা দেখে মেয়র নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন।

নিউইয়র্কের বাইরেও আনন্দের ছোঁয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রক্ষণশীল রাজনীতির মুখে মামদানির এই জয়ের আনন্দে ভাগ বসিয়েছেন নিউইয়র্কের বাইরের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দারা। যেমন ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা স্কট রিচিংয়ের কথা বলা যায়। ‘মেধাবী তরুণ’ মামদানি যেভাবে সাহসিকতার সঙ্গে ট্রাম্প ও ধনকুবেরদের একহাত নিয়েছেন, তা মন জয় করে নিয়েছে ৭৪ বছর বয়সী এই নারীর। রিচিংয়ের এখন নজর নিউইয়র্কের ভবিষ্যতের দিকে।

স্কট রিচিং বলেন, ‘আমি জানি, প্রচারে মামদানি যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার সব কটি পূরণ করতে পারবেন না। তবে আশা করি, নিউইয়র্কের যোগাযোগব্যবস্থা ও খাদ্যস্বল্পতার সমস্য নিয়ে কিছু করবেন। পাশাপাশি ধনীদের ওপর কর আরোপ করতে পারবেন। তিনি এগুলো করতে পারলে, আশা করা যায় তা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অন্যান্য নির্বাচনী প্রার্থীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’

মামদানির জয়ের খবরে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি টেনেসি অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা কেফিয়াস স্ট্রাচান (৫৪)। তিনি বলেন, বহু বছরের মধ্যে এই প্রথম ঘুম থেকে উঠে কোনো ভালো খবর পেয়েছেন। আর মিশিগানের বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সী ডেভন বলেন, ‘মামদানিকে কেন্দ্রীয় সরকার নানাভাবে বাধা দেবে জানি। আশা করি, ভোটাররা তা বুঝতে পারবেন এবং বামপন্থী রাজনীতির প্রতি আশা হারাবেন না।’

আরও পড়ুনপ্রভাবশালী মার্কিন ডানপন্থীরা কীভাবে মামদানিকে আইএসের সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন৭ ঘণ্টা আগেউদ্বিগ্ন অনেকে

মামদানিকে নিয়ে আশাবাদের পাশাপাশি তাঁর সামনে থাকা কিছু চ্যালেঞ্জ নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন অনেকে। ফ্লোরিডার বাসিন্দা ৭১ বছর বয়সী ব্রুস ওয়েকস বলেন, মামদানির জয় নিউইয়র্ক ও পুরো দেশের জন্য বড় একটি মোড়বদল। তাঁকে এখন বড় লড়াইয়ের মুখে পড়তে হবে। ট্রাম্প প্রশাসন যেকোনো উপায়ে মেয়র হিসেবে তাঁর যাত্রায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে।

মেয়র হিসেবে মামদানির কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই—এ বিষয় নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন বলেন, মামদানি নিউইয়র্ক নিয়ে যেসব পরিকল্পনা করেছেন, তার অনেকগুলো ‘অবাস্তব’। তাই ভবিষ্যতে সেগুলো কতটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে, তা নিয়ে শঙ্কা আছে তাঁর।

তবে উদ্বেগ ও শঙ্কার মধ্যেও সবশেষে নিউইয়র্কের জন্য ভালোটাই হবে বলে গার্ডিয়ান–এর কাছে আশা প্রকাশ করেছেন বেশির ভাগ নিউইয়র্কবাসী। আগামী জানুয়ারিতে মেয়র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছেন মামদানি। শহরটির বাসিন্দা, ৩৩ বছর বয়সী কিম্বারলি মাইকেল বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, ভালো কিছু হবে। এখন যেটি দরকার, তা হলো আমাদের সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকা।’

আরও পড়ুনমামদানি একই সঙ্গে ভারতের গর্ব, আবার মোদির মতো নেতাদের কঠোর সমালোচক৩ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ