তিন বছরের সাজা এড়াতে পালিয়ে বেড়ান ৪ বছর, অবশেষে ধরা
Published: 23rd, September 2025 GMT
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা থেকে ফিরোজ বাবু (৩৫) নামের এক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ডাকাতি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। ২০২১ সালে মাদক মামলায় ফিরোজের তিন বছরের সাজা হয়। তবে সাজা এড়াতে তিনি চার বছরের বেশি সময় ধরে পলাতক ছিলেন।
গ্রেপ্তার ফিরোজ বাবুর বাড়ি মতলব উত্তর উপজেলার এখলাশপুর গ্রামে। ওই গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে তিনি।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার রাতে মতলব উত্তর থানা-পুলিশ এখলাশপুর গ্রামে ফিরোজের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে লুণ্ঠিত কিছু মালামালও উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফিরোজ বাবুর বিরুদ্ধে ২০২১ সালে ডাকাতি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়। ওই বছরের জুলাইয়ে করা মাদক মামলার রায়ে তিন বছরের সাজা দেন চাঁদপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এর পর থেকে তিনি বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে ছিলেন।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হক বলেন, গ্রেপ্তার ফিরোজ বাবুর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। একটি মামলায় তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। কয়েক দিন আগেও তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়েছে। আজ তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
উড়োজাহাজের চাকার বক্সে ঢুকে কাবুল থেকে দিল্লিতে আফগান কিশোর
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে এক কিশোর উড়োজাহাজের চাকা রাখার বক্সে ঢুকে (ল্যান্ডিং গিয়ার বক্স) ভারতের রাজধানী দিল্লি পৌঁছে গেছে। তবে সে সুস্থ আছে।
অবশ্য ১৩ বছর বয়সী ওই আফগান কিশোর ভারত নয়, যেতে চেয়েছিল ইরানে। এ লক্ষ্যে রোববার ভোরে সে গোপনে কাবুল বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকেছে। তারপর সবার চোখ এড়িয়ে যাত্রীদের একটি দলের সঙ্গে রানওয়েতে চলে যায়। সেখানে সে কেএএম এয়ারের উড়োজাহাজের চাকা রাখার বক্সের ভেতর লুকিয়ে পড়ে। তাঁর কাছে শুধু একটি লাল রঙের অডিও স্পিকার ছিল।
আফগান কিশোর যে উড়োজাহাজের চাকা রাখার বক্সে লুকিয়ে পড়েছিল, সেটি প্রায় ৯০ মিনিটের উড়াল শেষে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। কেএএম এয়ার আফগানিস্তানের বেসরকারি মালিকানাধীন একটি বিমান সংস্থা।
আফগান কিশোর যে উড়োজাহাজের চাকা রাখার বাক্সে লুকিয়ে পড়েছিল, সেটি প্রায় ৯০ মিনিটের উড়াল শেষে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিস্ময়করভাবে ওই কিশোর জীবিত এবং একদম অক্ষত অবস্থায় চাকা রাখার বক্স থেকে বেরিয়ে আসে।
বিমানবন্দরের কর্মীরা রানওয়েতে সাদা রঙের কুর্তা-পায়জামা পরা একটি কিশোরকে এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের জানান। তখনই কাবুল থেকে এক কিশোরের বিস্ময়কর যাত্রা সম্পর্কে তারা জানতে পারেন।
পরে সেদিন সন্ধ্যায় ওই কিশোরকে কাবুলগামী একটি ফ্লাইটে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) এক কর্মকর্তা বলেন, ওই বালক আফগানিস্তানের কেএএম এয়ারের কাবুল থেকে দিল্লিগামী একটি উড়োজাহাজের চাকা রাখার বক্সে গোপনে উঠে পড়ে। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সেটি দিল্লি পৌঁছায়।
সিআইএসএফের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে উড়োজাহাজের পেছন দিকের ল্যান্ডিং গিয়ার বক্সের ভেতর লুকিয়েছিল। সে আফগানিস্তানের কুন্দুজ শহরের বাসিন্দা।’
বিকেল ৪টার দিকে একই উড়োজাহাজে করে তাকে কাবুলে ফেরত পাঠানো হয়।...কিশোর বেরিয়ে আসার পর উড়োজাহাজটিতে প্রথমে নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হয়। পরে প্রকৌশলীরা সেটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি আছে কি না, তা পরীক্ষা করেন। পেছনের ল্যান্ডিং গিয়ার বক্সে একটি ছোট লাল রঙের অডিও স্পিকার পাওয়া যায়।
ওই কিশোরকে বিমানবন্দরের অভিবাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে নেওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর বিকেল ৪টার দিকে একই উড়োজাহাজে করে কিশোরকে কাবুলে ফেরত পাঠানো হয়।
বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ সাধারণত ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে ওড়ে। ওই উচ্চতায় তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। এ ছাড়া উড়োজাহাজ যখন অত উঁচুতে ওড়ে, তখন প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি হয়।
ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৩২ জন এ কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।কেবিন চাপমুক্ত রাখার ব্যবস্থা থাকলেও নিচের চাকা রাখার বাক্সে তেমন ব্যবস্থা থাকে না। তাই সেখানে কেউ থাকলে তার অক্সিজেনের অভাবে, প্রচণ্ড চাপে এবং ঠান্ডায় জমে মরে যাওয়ার কথা। এমনকি চাকা ওঠা-নামার সময় মারাত্মক আঘাত পাওয়া বা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে।
উড়োজাহাজের চাকা রাখার বক্সে লুকিয়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা এটাই প্রথম নয়। এমন ঘটনায় মৃত্যুর ঝুঁকি ৭৭ শতাংশের বেশি।
ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ কাজ করতে গিয়ে ১৯৪৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৩২ জন প্রাণ হারিয়েছেন।