যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারার ওপর হামলা এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে হেনস্তার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি আমন্ত্রণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্র সফরে অংশ নেওয়া এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারার ওপর পতিত ফ্যাসিস্ট, গণহত্যাকারী ও কার্যক্রম নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেও তারা হেনস্তা করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের বিমানবন্দরের ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে মির্জা ফখরুলের প্রতিক্রিয়া৪১ মিনিট আগে

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেড় দশক ধরে বিরোধী মত দমন, গুম-খুন ও জুলুম-নির্যাতনের ভয়াবহ আওয়ামী দুঃশাসন দেশের ছাত্র-জনতা প্রত্যক্ষ করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর সেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখন দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগেও অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বিদেশে একাধিকবার আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়েছেন; যা তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেরই ধারাবাহিকতা।

জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতারা বারবার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। অভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারাসহ বিভিন্ন ঘটনায় এই সরকার ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে; যা অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।

আরও পড়ুনএটি ব্যক্তি আখতার হোসেনের ওপর আক্রমণ নয়: তাসনিম জারা৪৮ মিনিট আগে

অভ্যুত্থানের যোদ্ধা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পাশাপাশি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ারও আহ্বান জানায়।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে আখতার হোসেন সেখানে পৌঁছান। বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার সময় স্থানীয় সময় ২২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বিকেল পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আখতার হোসেনের সঙ্গে হাঁটছিলেন সফরসঙ্গী হিসেবে আসা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা এ সময় তাসনিম জারাকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করেন। তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আখত র হ স ন ত সন ম জ র সন ত র স সরক র ফখর ল র ঘটন র ওপর ঘটন য

এছাড়াও পড়ুন:

পরকীয়া ও ছিনতাইয়ের জালে প্রাণ গেল সায়েদুরের

ঢাকার ধামরাইয়ে অটোরিকশা চালক সায়েদুর রহমান হত্যা ও অটোরিকশা ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা (পিবিআই)। দুই বছর আগে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় সদর আলী ও আলমগীর নামে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পিবিআই ঢাকা জেলা কার্যালয়ে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পরকীয়া সম্পর্ক ও অর্থসংকটের জটিল টানাপোড়েন থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত। আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।

গত ২০২৩ সালে ২৮ নভেম্বর সকালে ধামরাইয়ের বাইশাকান্দার কেষ্টখালী গ্রামের জনৈক ফজলে মাহবুবের ধানক্ষেতের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাতনামা এক পুরুষের লাশ। এই ঘটনায় ধামরাই থানার এসআই আব্দুল জব্বার বাদী হয়ে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় এসআই পাভেল মোল্লাকে। 

তদন্তে সনাক্ত হয় অজ্ঞাত লাশের পরিচয়। তার নাম সায়েদুর রহমান। পেশায় অটোরিকশা চালক। পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে ন্যস্ত হয় এবং এসআই আনিসুর রহমান মামলাটি তদন্ত করেন।

পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার কুদরত-ই-খুদা জানান, তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের হত্যা ও অটো ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সদর আলী ওরফে সোহরাবকে (৪৭) গ্রেপ্তার করে আদালতে মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আসামি সদর আলী ওরফে সোহরাবের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঘটনার মূল আসামি আলমগীরকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন তারা।

পিবিআই বলছে, আসামিদের জবানবন্দি পর্যালোচনায় জানা যায় যে, আসামি সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) ও আলমগীর (২৫) এবং আসামি জুয়েল একই বাসায় পাশাপাশি রুমে বসবাস করতো। আলমগীর এবং জুয়েল অবিবাহিত ছিল। পরবর্তীতে সদর আলী ওরফে সোহরাব (৪৭) এর স্ত্রী ও আসামি জুয়েলের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয় এবং জুয়েল, আলমগীরের সহায়তায় সদর আলীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। 

পরে আসামি সদর আলী ভিকটিম সায়েদুর রহমানের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্কের চেষ্টা করে এবং আলমগীরও ভিকটিম সায়েদুর রহমানের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়াতে চায়। সদর আলীর স্ত্রী জুয়েলের সাথে ছয় মাস থাকার পর আবার সদর আলীর কাছে ফিরে আসে।

নগদ টাকার প্রয়োজন হলে সদর আলী সদর আলী, আলমগীর ও জুয়েল অটোরিকশা চালক সায়েদুর রহমানের অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা সায়েদুর রহমানকে ফুসলিয়ে গান শোনার অজুহাতে বাইরে নিয়ে যায়। ফেরার পথে ধামরাই থানাধীন কেষ্টখালি গ্রামের নির্জন স্থানে গামছা দিয়ে মুখ, হাত ও পায়ে রশি বেঁধে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। 

হত্যাকাণ্ডের পর তারা সায়েদুর রহমানের অটোরিকশা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে এবং উক্ত টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে।

এ বিষয়ে পিবিআই ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা, পিপিএম-সেবা বলেন, “দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা ঘটনার বিষয়ে প্রকাশ্য ও গোপনে তদন্ত শুরু করি। এক পর্যায়ে তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামী সদর আলী ও আলমগীদ্বয়কে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করি। আসামীদ্বয় বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। নগদ টাকার প্রয়োজনে পরিকল্পিতভাবে আসামীদ্বয় ভিকটিমকে হত্যা করে তার অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রি করেছে।”

ঢাকা/সাব্বির/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩০ আসন চাওয়া নিয়ে মির্জা ফখরুলের বক্তব্য ‘অসত্য’: জামায়াত
  • পরকীয়া ও ছিনতাইয়ের জালে প্রাণ গেল সায়েদুরের
  • সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীর ৩০ হাজার টাকা আত্মসাতের
  • কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল
  • খুলনায় চাঁদাবাজির অভিযোগে বাড়ি থেকে ধরে এনে পিটুনি, যুবক নিহত