বনুড়িয়া

আমি এখন থেকে দুষ্টুমি করব না
বনুড়িয়া হাওয়া
ফুঁ দিয়ে শূন্যে উড়িয়ে নাও, আকাশ দেখব

মাঠ: বনুড়িয়া অসমাপ্ত জিজ্ঞাসার পরিধি

তাঁর আমন্ত্রণ পেয়ে
আমরা সমগ্র একটা দুপুর অপরাহ্ণ কাটালাম
কিছুক্ষণ কালো গাছ ঝিঁঝিঁর কথা শুনলাম
তাদের কথা ভাবতে ভাবতে সূর্যাস্ত হলো

বনুড়িয়া বিলে হাঁটছি...

মৃত্যুর বিভীষিকার বিরুদ্ধে
অন্ধকারের বিরুদ্ধে
প্রকাণ্ড কিংবা ক্ষুদ্র অহংকারের বিরুদ্ধে

স্তম্ভিত প্রকৃতি দাঁড়িয়ে আছে
বনুড়িয়া মাঠের আজ কোনো অস্তিত্ব নেই

ঘুম ঘুম চোখ

কাকের ডাক ফুলের ঈষৎ অভিমান
গোল গোল কান্না
ঠিকরে উঠল চোখ.

..

ঘুমোতে পারিনি।

বেসুরা খনখনে গলায় ডাকলাম: ওঠো
প্রাণের ভয়ে শিশুরা ছোট ছোট দিগন্তের ওপারে
ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়োচ্ছে।

উচ্ছ্বসিত,
একটি সবুজ বালক সার্কাসে দড়িতে
পার হতে চাইছে ইহকাল–ক্রোধ–ক্ষুধা–বিষণ্নতা

ভয়ে চক্ষু আবেগে অস্থির বিশ্বাস হারিয়ে
ঘুমের ওষুধ খুঁজে বেড়াচ্ছি।

ঘুমোতে পারিনি

ভয়াবহ একটা দক্ষযজ্ঞ খাঁচা দোলে অন্ধকারে।

বিশুদ্ধ ভাইব্রেশন

পাহাড়ের ধারে হ্রদের সবুজ জলে
ঘ্রাঁও ঘ্রাঁও করে হাঙর মাছ গজরাচ্ছে
অরণ্যে গাছেরা হাত তুলে ধেই ধেই নাচছে
বলছে সর্বশান্তি সাম্যমৈত্রী সমন্বয়

এত শোভার আঁধার
আমি হাসতে ভুলে গেছি, চোখের নিচে অশ্রুমোছা হাসি
জ্যোৎস্নায় মিশে যায় ঝিঁঝিঁর শব্দে

দূরে নির্বাক ভূমিকায় উদ্ভ্রান্ত অবিরল ক্রোধ
অত অনুরাগ! অত শূন্যতা!
আমি কী করে সই!

স্থবিরতা ও অস্পষ্ট যাপন
ক্ষুধার্তে অপূর্ব গান ছুঁয়ে যায় যে অন্ধকার-ভাষা

ক্যাকোফোনি

বনুড়িয়া বিলে সূর্য নিল বিদায়
ফেউ ধরা ধুলোর আভাস
অন্ধকারে গোল গোল কান্নার কুয়াশা পড়ছে

ফেউ ভয় শিরায় ও লোমকূপে
আধো অন্ধকার, কে যাবে, কীভাবে যাবে

লবণাক্ত জল হাঙর মাছের সন্ত্রাসে
পেটের গভীরে

এই মর্মে রহস্যের গল্প শুনছি ছুটন্ত লরির বাঁশিতে

অমিমাংসিত কী এক ক্যাকোফোনি বোধচিহ্ন
হয়তো নয় সংজ্ঞায় ফিরে দেখি
শুদ্ধ ও নিরাশা স্মৃতিই ভাঙতে পারে

কটি মুখ ভাসে

সুদিনের প্রতীক্ষায়...
নিস্তব্ধ রাত, নিঝুম সন্ধ্যে, নীল অন্ধকার

গাজার শিশুরা জয়তুন শিশিরে
বাঁচার জন্য অশ্রুজল বুকে

খাবার মেলেনি মুখের, খাদ্য মানে সবুজ ঘাস কটি

সীমান্তে দাঁড়িয়ে—
মানবতা ছুঁয়ে যায় রেফাত আলিরের চোখ
মানবতা রয়ে যায় একটি ফুলে!

এ পৃথিবীর বুকে দুর্বল মানে প্রবল অশ্রুপাত

সারা রাত যুদ্ধর পর, সে যায় নির্জন সমুদ্রতীরে
সেখানেও তার জন্য অপেক্ষা
জ্বলন্ত বুলেট, আর শোকার্ত ঢেউ দু–চারটে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন ড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পাইনি: আবরারের বাবা

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্মম নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘আমরা এখনো সুষ্ঠু বিচার পাইনি। আপিল বিভাগে এখনো মামলা বিচারাধীন। সরকারের কাছে আবেদন, বিচারের কাজটি যেন দ্রুত শেষ করা হয়।’’

আজ মঙ্গলবার (৭ আক্টোবর) ছিল আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটি ঘিরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে স্মৃতিচারণসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজন ছিল। ছেলেকে স্মরণ করে এ কথা বলেন আবরার ফাহাদের বাবা। 

আরো পড়ুন:

আবরারের রক্ত বৃথা যায়নি, জাতিকে জাগিয়ে তুলেছে

কুষ্টিয়ায় আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করলেন এনসিপির শীর্ষ নেতারা

শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘‘ছেলেটিকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। নিষ্ঠুরতম এ অপরাধ করার পরও নিহতের পরিবার এখনো এর সুষ্ঠু বিচার পায়নি। আমরা দ্রুত রায় বাস্তবায়নের দাবি জানাই।’’ 

আবরার বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট।

ওই ঘটনায় চকবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আবরারের বাবা। সেই মামলার রায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্টের আপিল বেঞ্চ এ বছর ১৬ মার্চ সেই সাজাই বহাল রাখে।

আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, “হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখেছেন। আশা করছি আপিল বিভাগেও হাই কোর্টের রায় বহাল থাকবে। এই সরকার রায় কার্যকর করবে।”

এ মামলায় দণ্ডিত ২৫ আসামির মধ্যে চারজন এখনো পলাতক। তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান বরকত উল্লাহ।

দিনটি উপলক্ষে রায়ডাঙ্গা গ্রামে আবরারের কবর জিয়ারত করেন এনসিপির নেতারা। দুপুর ২টায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক নয়ন আহমেদের নেতৃত্বে দলটির নেতারা কবর জিয়ারতে অংশ নেন। এ সময় তারা আবরার ফাহাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

এসময় এনসিপির কুষ্টিয়া জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী জান্নাতুল ফেরদৌস টনি, যুগ্ম সমন্বয়কারী কে এম আর শাহীনসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবের সামনে শহীদ আবরার ফাহাদের হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করে শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি গ্রন্থাগারের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ছাত্র-জনতা। 

সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহীদ আবরার ফাহাদের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ