নোয়াখালীতে জুলাই আন্দোলনে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর ছোট ভাই রিমনের ওপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এসিসিই) বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মো.

জিহান উদ্দিন।

শনিবার (৩ মে) এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জিহান ও তার পরিবারের সদস্যরা।

আরো পড়ুন:

নোবিপ্রবিতে ছাত্রলীগ নেতার জন্য বিশেষ পরীক্ষার আয়োজন

সোনাপুর-নোবিপ্রবি সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণে অংশীজন সভা

তাদের দাবি, জুলাই মাসের আন্দোলন এবং শহীদ পরিবারকে পুঁজি করে একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলনের শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর ছোট ভাই শাহরিয়ার হাসান রিমন গত ২৭ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নোয়াখালী সদর উপজেলার মাইজদী শহরের বার্লিংটন মোড়ে দুষ্কৃতকারী কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন ২৮ এপ্রিল ভুক্তভোগীর মা সুধারাম থানায় ২৪ জনের নাম পরিচয়সহ অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জন আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জিহান উদ্দিনকে ১৯ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

জিহানের পরিবারের দাবি, ঘটনার আগের দিন থেকে জিহান নোয়াখালী শহরের বাইরে ছিল। লক্ষ্মীপুরে বোনের বাসায় অবস্থান করছিল। জিহান নোয়াখালীর একটা স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত। মূলত সংগঠনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে এমন মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। এ মামলা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে জানান তারা।

জিহান উদ্দিন বলেন, “ঘটনার সময় আমি এই শহরে ছিলাম না এবং কোনোভাবেই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নই। একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে এবং আমার সংগঠনের একজন সদস্যকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে, সে ওই সময় ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। তারা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে এবং আমার সংগঠনের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে চাচ্ছে।”

তিনি বলেন, “আহত রিমনকে আমি চিনি না এবং জানার কথাও না। বৈষম্যবিরোধীর একটি অংশ মামলায় সহযোগিতা করতে গিয়ে মামুনুর রহমান তুষার ও ইয়াছিন আরাফাতসহ কয়েকজন আমার নাম যুক্ত করে দিয়েছে, যেখানে ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।"

তিনি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি এবং তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর চেষ্টাকারীদের মুখোশ উন্মোচন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

জিহানের বড় বোন তানজিনা বেগম জানান, গত ২৭ এপ্রিল তার এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ের পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল। সেই কারণে তার ছোট ভাই রিমন তাদের বাসায় মেয়েকে পড়াতে এসেছিল। পরীক্ষা শেষে ২৮ এপ্রিল সকালে রিমন বাড়ি ফিরে যায়।

এ বিষয়ে নোবিপ্রবি প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান জানান, তিনি এখনো জিহানের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি জানেন না। তবে খুব শীঘ্রই এ মামলার ব্যাপারে খোঁজখবর নেবেন।

মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসা সুধন চন্দ্র দাস বলেন, “আমাদের তদন্ত চলমান আছে। তবে তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী যারা দোষী, শুধু তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সিসিটিভি ফুটেজসহ বিভিন্ন তথ্য মতে যারা নির্দোষ থাকবে, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে না।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ব প রব পর ক ষ ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

রায় প্রত্যাখ্যান আওয়ামী লীগের

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে। এই রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও বার্তায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “আজ যে রায় ঘোষণা করেছে এ রায় বাংলার জনগণ প্রত্যাখ্যান করে। বাংলার জনগণ এ রায় মানে না, মানবে না।”

আরো পড়ুন:

রায়কে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বললেন শেখ হাসিনা

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘অতীতের প্রতিশোধ নয়’: প্রধান কৌঁসুলি

তিনি বলেন, “অবৈধ আদালত যে মামলার রায় দিয়েছে সেটি ১৪ অগাস্ট শুরু করে ১৭ নভেম্বর মামলা শেষ করেছে। ৮৪ জন সাক্ষীকে সামনে রেখে ৫৪ জনকে হাজির করে ২০ দিনে মামলা শেষ করেছে। এই দুই মাসের মধ্যে মাত্র ২০ দিন আদালত চলেছে।”

“এর প্রধান বিচারক গত এক মাস অনুপস্থিত ছিলেন। তারপরেও প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে মানুষের প্রিয় নেত্রীর বিরুদ্ধে যে রায় দিয়েছে।”

জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, “অচিরেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করব”।

এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ২ নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া মামলার অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড এবং দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় পড়া শুরু হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলা, যার রায় ঘোষণা হলো আজ।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ