রাবিতে স্টুডেন্টস অ্যাচিভমেন্টস ফেয়ার
Published: 4th, May 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের আয়োজনে প্রথমবারের মতো “স্টুডেন্টস অ্যাচিভমেন্টস ফেয়ার–২০২৫” অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (৪ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী অ্যাকাডেমিক ভবনের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বিভাগের সভাপতি ড. মো. শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে অতিথি ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার দাবিতে রাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
রাবির ‘সি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ
এ উপলক্ষে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন হাসিবুল হাসান তুর্য এবং দ্বিতীয় হন জাহিদ হাসান রানা। ভিডিও নির্মাণ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন রায়ান ইস্তিয়াক এবং যৌথভাবে দ্বিতীয় হয়েছেন মোহাম্মদ ইস্তিয়াক ও শারমিন জাহান সেতু।
দ্বিতীয় পর্বে ‘শরণার্থী সংকট নিরসন নিয়ে ভাবনা: উত্তর-উপনিবেশবাদ প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের দৃষ্টিভঙ্গির বিশ্লেষণ’ শীর্ষক বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিমেক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্রের সমন্বয়ক ড. শরিফুল ইসলাম।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চাঙ্গা রেমিট্যান্স প্রবাহে কাটছে ডলার সংকট
রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধিতে স্বস্তিতে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার। চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৪৫৪ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৫৪২ কোটি ডলার বা ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি। রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। বাজারে ডলার সংকট কাটছে। দীর্ঘদিন ধরে ১২২ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে ডলার। ডলার নিয়ে হাহাকার নেই ব্যবসায়ীদের।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর অর্থ পাচার ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ কারণে হুন্ডি চাহিদা কমেছে। ব্যাংকিং চ্যানেলের সঙ্গে এখন খোলাবাজারের ডলার দরে পার্থক্য নেই। বরং ব্যাংকে পাঠালেই প্রণোদনাসহ বেশি অর্থ পাচ্ছেন প্রবাসীরা।
এর আগে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর দেশে দেশে লকডাউনের মধ্যে হুন্ডি কমে যাওয়ায় রেমিট্যান্স চাঙ্গা হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার, যা ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, আগে প্রবাসী আয়ের বড় একটি অংশ আসত হুন্ডির মাধ্যমে। বিদেশে পুঁজি পাচারকারীরা হুন্ডি ডলার কিনে নিত। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুঁজি পাচার অনেক কমেছে। হুন্ডিতে ডলারের চাহিদা অনেক কমে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ছে। পুঁজি পাচার ঠেকানোর অবস্থান রাখতে পারলে আগামী মাসগুলোতেও রেমিট্যান্স বাড়বে। তিনি বলেন, রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণেই দেশের অর্থনীতি মোটামুটি ভালো অবস্থানে আছে। উচ্চ প্রবাহ ধরে রাখা গেলে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও ভালো হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই ছাড়া চলতি অর্থবছরের সব মাসেই আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। একক মাস হিসেবে গত এপ্রিলে প্রবাসীরা ২৭৫ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় যা প্রায় ৭১ কোটি ডলার বা ৩৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। এপ্রিল মাসের রেমিট্যান্স একক মাস হিসেবে এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত কোনো এক মাসে সর্বোচ্চ প্রায় ৩৩০ কোটি ডলার এসেছে গত মার্চে। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলার আসে গত ডিসেম্বরে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের ১০ মাসেই গত অর্থবছরের পুরো সময়ের তুলনায় বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। গত অর্থবছর রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলার।
রেমিট্যান্সের পাশাপাশি রপ্তানি আয়েও ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৭১৯ কোটি ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১০ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের ভালো প্রবৃদ্ধির ওপর ভর করে টানা ২০ মাস পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবার ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গত ৩০ এপ্রিল রিজার্ভ উঠেছে ২২ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলারে। অবশ্য গতকাল রিজার্ভ সামান্য কমে আবার ২১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে।
দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল ২০২২ সালের আগস্টে। সেখান থেকে প্রতি মাসে কমতে কমতে সরকার পতনের আগে গত জুলাই শেষে ২০ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে নামে। তবে গত ৮ আগস্টের পর রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি করছে না সরকার। বরং আগের সরকারের রেখে যাওয়া ৩৭০ কোটি ডলার মেয়াদোত্তীর্ণ বকেয়ার বড় অংশই পরিশোধ করেছে। এর পরও রিজার্ভ বেড়ে এ পর্যায়ে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, অর্থ পাচার ঠেকাতে বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ চলমান আছে। এ ছাড়া প্রবাসীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স বাড়ছে। রপ্তানি আয়েও ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। যে কারণে ডলার বাজারে এখন অস্বস্তি নেই।
ব্যাংকাররা জানান, রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ভালো প্রবৃদ্ধির কারণে এখন ডলার নিয়ে ব্যবসায়ীদের হাহাকার নেই। বিগত সরকারের সময়ে আমদানিতে সর্বোচ্চ ১২৭ টাকায় উঠে যাওয়া ডলার অনেক দিন ধরে ১২২ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি, ভ্রমণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আরোপ করা বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আমদানিকারকরা এখন ব্যাংকে গিয়ে ডলার পাচ্ছেন। আগে যেখানে ডলারের অভাবে আমদানি কমে যাচ্ছিল। চলতি অর্থবছরের গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমদানিতে আট মাসে আমদানি বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বিদেশি বিনিয়োগ না কমলে ডলার বাজারে স্বস্তি আরও বাড়ত।