কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনায় উত্তেজনার মধ্যে সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাতে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এ নিয়ে টানা ১১ রাত ধরে কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটল। আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

অবশ্য ভারতীয় গণমাধ্যমে গোলাগুলির বিষয়ে বরাবরের মতো পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হলেও গতকাল রাতের ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বা দেশটির সংবাদমাধ্যম থেকে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর থেকে টানা ১১ রাত ধরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর একতরফা গুলিবর্ষণ করছে। সবশেষ ৪ ও ৫ মে মধ্যবর্তী রাতে কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধার, নওশেরা, সুন্দরবনি ও আখনুর সেক্টরে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘পাল্টা জবাব’ দিয়েছে।

এছাড়া চলমান এই সংঘর্ষের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরের একজন করে সেনাকে আটক করেছে। ভারতের বিএসএফ সদস্য পূর্ণম কুমার সাহু গত ২৩ এপ্রিল সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানে প্রবেশ করলে তাকে পাকিস্তান রেঞ্জার্স আটক করে। এর পাল্টা হিসেবে ৩ মে রাজস্থানে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করে বিএসএফ।

ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশির ভাগই পর্যটক। এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে নয়াদিল্লি। তবে এই অভিযোগ নাকচ করেছে পাকিস্তান। ওই হামলার পর থেকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে।

পেহেলগাম হামলার পরদিনই ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে ছিল সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, আতারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক অবনতির ঘোষণা। ভারতের দাবি, হামলার সঙ্গে সীমান্তপারের সন্ত্রাসীদের সংযোগ আছে।

জবাবে পাকিস্তান একগুচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। পাকিস্তানের আকাশসীমা ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য বন্ধ করে দেয় এবং ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে। এমনকি তৃতীয় দেশের মাধ্যমে বাণিজ্যও বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান।

এই পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তান গত শনিবার ‘আবদালি’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ৪৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। তবে ভারতের কর্মকর্তারা এটিকে ‘খোলামেলা উসকানি’ বলে মন্তব্য করেছেন। 

গতকাল শনিবার সামরিক শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরদিন ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিংহের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিবি–বিএসএফ পতাকা বৈঠকের পর দুই দেশের নাগরিকদের হস্তান্তর

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধর্মজৈন সীমান্তে দুই বাংলাদেশি নাগরিককে ধরে নিয়ে যাওয়া ও দুই ভারতীয় নাগরিক আটকের ঘটনায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠক শেষে উভয় দেশের নাগরিকদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়েছে।

দিনাজপুর বিজিবি সেক্টর কমান্ডার গাজী মিজানুল হক আজ রাত সোয়া ৯টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ধর্মজৈন বিওপি ক্যাম্পের মল্লিকপুর কারুলিয়াপাড়ার ৩২০/১০ এস পিলার-সংলগ্ন এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের সময় দুই বাংলাদেশি কৃষককে ধরে নিয়ে যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক দুই ভারতীয় কৃষককে ধরে এনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যের মাধ্যমে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের কাছে সোপর্দ করেন বাংলাদেশিরা।

বিএসএফের ধরে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশিরা হলেন ধর্মজৈন এলাকার বাসিন্দা ইসরাইলের ছেলে এনামুল হক (৪৫) ও বনগাঁও এলাকার এনামুলের ছেলে মো. মাসুদ রানা (২২)। অন্যদিকে বিজিবির হেফাজতে থাকা ভারতীয় নাগরিকেরা হলেন ভারতের গঙ্গারামপুর থানার অনন্তপুর গ্রামের সরেন টুডুর ছেলে অবিনাশ টুডু (২০) ও লরদু সরেনের ছেলে ফিলিপ সরেন (৩০)।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে বাংলাদেশি নাগরিক মাসুদ রানা, এনামুল হকসহ কয়েকজন ৩২০/১০ এস পিলারের কাছে বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে নিজ জমিতে ধান কাটছিলেন। ধান কাটা শেষে একই পিলার–সংলগ্ন ভারতীয় নাগরিকের জমিতে ধানমাড়াই কার্যক্রম শুরু করেন। তখন বিএসএফ সদস্যরা দুজনকে ধরে নিয়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে কারুলিয়াপাড়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা ভারতীয় দুই কৃষককে ধরে নিয়ে কারুলিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আটকে রাখেন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুর রহমানের মাধ্যমে বিজিবি সদস্যদের হাতে তুলে দেন।

আরও পড়ুনদিনাজপুর সীমান্তে দুই বাংলাদেশি কৃষককে ধরে নিয়ে গেল বিএসএফ, দুই ভারতীয় আটক৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে আবারো গোলাগুলি
  • বাংলাদেশ-পাকিস্তান সীমান্তে ১৬টি ব্যাটালিয়ন ও ২ হেডকোয়ার্টার করবে বিএসএফ
  • পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করল ভারত, নিয়ন্ত্রণরেখায় বড় সংঘর্ষ
  • ঝিনাইদহ সীমান্তে নারী-শিশুসহ আটক ৪৪
  • পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের হাতে আটক দুই বাংলাদেশিকে ৮ ঘণ্টা পর ফেরত
  • ৮ ঘণ্টা পর দুই বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ
  • পাটগ্রামের ২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ
  • বিজিবি–বিএসএফ পতাকা বৈঠকের পর দুই দেশের নাগরিকদের হস্তান্তর
  • পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের খাদ্য মজুতের নির্দেশ