নাজমুল শান্ত বাংলাদেশ টি-২০ দলের নেতৃত্ব ছাড়ছেন এটা গত বছরই নিশ্চিত হয়ে গেছে। তার জায়গায় নতুন অধিনায়ক হিসেবে লিটন দাস বোর্ডের প্রথম পছন্দ ছিল। আলোচনায় ছিলেন তাওহীদ হৃদয়ও। রোববার সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজের আগে লিটন দাসকে অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়েছে।

তার ডেপুটি হিসেবে শেখ মেহেদীর নাম ঘোষণা হতেই সংবাদ সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকরা মুখ চাওয়া-চাওয়ি। শেখ মেহেদীর নাম যে অপ্রত্যাশিত। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে প্রশ্ন পর্বে প্রথম উত্তরও দিতে হলো সহঅধিনায়ক নির্বাচন নিয়ে, ‘মেহেদী অভিজ্ঞ এবং টি২০ দলে অপরিহার্য, তাই তাকে লিটনের ডেপুটি করা হয়েছে।’

এই একটি বিষয় ছাড়া টি২০ দলে পরিবর্তন মোটামুটি মেনে নেওয়ার মতেই। যদিও ১৮ ইনিংসে ফিফটি না পাওয়া নাজমুল শান্তর দলে থাকা, মেহেদী মিরাজের বাদ পড়া, নাসুম আহমেদকে ছেঁটে ফেলা আলোচনার খোরাক দেয়। জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন এবং খালেদ মাসুদ পাইলটও কয়েকটি সিদ্ধান্ত দেখে অবাক হয়েছেন।

শেখ মেহেদী ঘরোয়া ক্রিকেটে কখনও নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে কেউ মনে করতে পারলেন না। মাঠের মানুষ কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনও বলতে পারলেন না। অধিনায়ক, সহঅধিনায়ক এবং টি২০ দল নিয়ে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বিসিবির সাবেক এ পরিচালক বলেন, ‘শেখ মেহেদীর ক্যাপ্টেন্সি কখনও দেখিনি। কেমন হবে বলতে পারব না। অধিনায়ক হিসেবে লিটনকে বেছে নেওয়া ভালো সিদ্ধান্ত। ভাইস ক্যাপ্টেন হিসেবে তরুণ কাউকে দিতে পারত তৈরি হওয়ার জন্য। তাওহীদ হৃদয় ভালো বিকল্প। তার ক্রিকেট মেধাও খুব ভালো। আমি বলছি না শেখ মেহেদী খারাপ। ভবিষ্যৎ চিন্তা করলে হৃদয় হতে পারত।’

সহঅধিনায়ক হিসেবে খালেদ মাসুদ পাইলটেরও প্রথম পছন্দ হৃদয়। তাঁর মতে, ‘সহকারী হিসেবে তাওহীদ হৃদয়কে রাখলে ভালো হতো। সে টি২০তে সব ম্যাচই  হয়তো খেলবে। স্পিন-পেস সব উইকেটেই খেলবে। কিন্তু শেখ মেহেদী হয়তো অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে না।’

সাদা বলের ক্রিকেটে ফর্ম ও ভবিষ্যত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সহঅধিনায়ক হিসেবে সুজন-মাসুদের মতো তাওহিদ হৃদয়ের ব্যালট বক্সে ভোট দেওয়ার লোকের অভাব হওয়ার কথা নয়। আলোচনায়ও ছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি শেষ হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) একাধিকবার আচরণবিধি ভঙ্গ করে বেশ বিতর্কিত হয়েছেন মোহামেডানে খেলা হৃদয়।

প্রথমে মাঠে থাকা আম্পায়ারের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেন হৃদয়। এরপর সংবাদ সম্মেলনে ‘মুখ খোলার’ হুমকি দেন। ম্যাচ রেফারির সঙ্গেও বাজে ব্যবহার করেন। যে কারণে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান হৃদয়। এক ম্যাচ নিষিদ্ধ থাকার পরে মোহামেডানের চাপে অন্য ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। এক ম্যাচ খেলার পর আবার তার নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হয়। পরে ওই নিষেধাজ্ঞা আগামী মৌসুম পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।

পরের ম্যাচে মাঠে নেমে আবারও আচরণবিধি ভঙ্গ করেন হৃদয়। আউট হয়েও ক্রিজ থাকতে না চাওয়ায় নতুন করে সাতটি ডি মেরিট পয়েন্ট পেয়ে চার ম্যাচের নতুন নিষেধাজ্ঞা পান। আচরণবিধির কারণে ভক্তদের সমর্থন হারিয়েছেন হৃদয়। এসব কারণ বিবেচনা করে তাকে সহঅধিনায়কের ভার থেকে আড়াল করে থাকতে পারে বোর্ড।

বাংলাদেশ স্কোয়াড: লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), শেখ মেহেদী হাসান (সহ-অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তানজিম হাসান তামিম, শামীম হোসেন পাটোয়ারি, জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, তানভির ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তানজিম হাসান সাকিব, নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলাম।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

অভিনয় থেকে দূরে প্রিয়দর্শিনী

একটা সময় ছিল, যখন তাঁর একটুখানি হাসি, চোখের দৃষ্টি কিংবা নিঃশব্দে ঘুরে যাওয়া চুলের ভঙ্গিমাও মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিত। নাম তাঁর মৌসুমী। ‘প্রিয়দর্শিনী’– এ নামটা যেন তাঁর জন্যই সৃষ্টি। শুধু অভিনয় দিয়ে নয়; নিজের ব্যক্তিত্ব, সৌন্দর্য এবং কোমল আচরণে তিনি হয়ে উঠেছিলেন কোটি ভক্তের হৃদয়ের রানী। 

মৌসুমী এখন আছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে। দুই বছর ধরে সেখানেই। মায়ের অসুস্থতা আর মেয়ের পড়াশোনার কারণে পরিবারকে সময় দিচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে পর্দায় দেখা মিলছে না তাঁর। ফলে ক্যামেরার ঝলক, শুটিং সেটের কোলাহল কিংবা মেকআপ রুমের আয়নায় প্রতিফলিত হয় না প্রিয়দর্শিনীর মুখ। তিনি আছেন শুধুই আপনজনের সঙ্গে– নীরবে, নিশ্চুপে। ওমর সানী– যিনি একসময় ছিলেন পর্দার নায়ক, বাস্তবে আছেন তাঁর জীবনসঙ্গী হয়ে। সম্প্রতি তিনি বললেন এক গভীর বিষাদের কথা, ‘মৌসুমী ভুলে যেতে চাইছে, সে কখনও মৌসুমী ছিল।’

ওমর সানীর এই কথায় আছে তীব্র এক নীরবতা। যে অভিনেত্রী একসময় সিনেমা হলের অন্ধকার ভেঙে আলো হয়ে উঠতেন, তিনিই আজ নিজেকে পেছনে সরিয়ে রাখছেন সময়ের গহ্বরে। সিনেমাকে ভালোবেসে এক জীবন কাটিয়ে দেওয়া সেই মৌসুমী কি তবে বিদায় নিতে চাইছেন? কারণ? একটা সময় আসে, যখন মানুষ নিজেকেই প্রশ্ন করে– আর কতদূর? কী পেলাম? আর কী চাই? মেয়ের পড়াশোনা, অসুস্থ মা, পরিবার– এসব হয়তো ‘উত্তর’ নয়, তবে ব্যাখ্যা। 

তবু প্রশ্ন থাকে, এত সহজে কি বিদায় বলা যায়? একজন মৌসুমী কি হারিয়ে যেতে পারেন? তিনি তো শুধু একজন অভিনেত্রী নন; একসময়ের আবেগ, এক প্রজন্মের ভালোবাসা। নতুন প্রজন্ম হয়তো তাঁর নাম জানে, ছবিগুলো চেনে, কিন্তু অনুভব করে না তাঁর পর্দার উপস্থিতি। সেই সৌজন্যবোধ, সেই মায়া– সব যেন ধীরে ধীরে আটকে যাচ্ছে সময়ের ফ্রেমে। একজন বলেছিলেন, ‘যদি কোনো অভিনেতা তাঁর চরিত্রের চেয়েও বড় হয়ে ওঠেন, তবে সে-ই সত্যিকারের কিংবদন্তি।’ মৌসুমী ঠিক তেমনই একজন। ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে যাঁর যাত্রা শুরু, তা থেমে থেমে নয়; বরং গানে, গল্পে, কান্নায় আর ভালোবাসায় ছিল পূর্ণ। সেই সিনেমায় সালমান শাহর পাশে দাঁড়িয়ে তিনি এক নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন।

এখন প্রশ্ন মৌসুমী কি কখনও চলে যেতে পারেন? তিনি তো আমাদের স্বপ্নের মতো সুন্দর। যারা মৌসুমীর সিনেমা দেখে বড় হয়েছেন, যারা আজও তাঁর পুরোনো ছবির গান শুনে একা রাতে জানালার বাইরে মেঘের দিকে তাকিয়ে থাকেন, তাদের জন্য খবরটা যেন হারিয়ে যাওয়ার গল্প– একটা সময়ের, একটা আবেগের, একটা ভালোবাসার। 

হয়তো এ বিরতিটা তাঁর প্রয়োজন ছিল। হয়তো তিনি আর ফিরবেন না। অথবা একদিন, হঠাৎ করেই আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে বলে উঠবেন– ‘আমি ফিরেছি।’ যদি না-ই ফেরেন, তাহলেও মৌসুমী ঠিক যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন। স্মৃতির মণিকোঠায়, আলো-ছায়ার কল্পনায় আর কোটি ভক্তের ভালোবাসায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রোডম্যাপ অনুযায়ী রাকসু নির্বাচনের দাবি
  • রংতুলিতে আঁকা এক সকাল
  • অভিনয় থেকে দূরে প্রিয়দর্শিনী
  • এবার মানুষের রক্ত থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী বিষনাশক
  • ‘বিপজ্জনক’ অটোরিকশা নিরাপদ করা সম্ভব
  • ১৮ বছর সাপের কামড় খাওয়া ব্যক্তির রক্তে অ্যান্টিভেনম
  • ইচ্ছেমতো ভাড়ায় জিম্মি যাত্রী
  • রক্তবর্ণ চাঁদ