‎জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও নিপীড়ন মামলায় গড়িমসি এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের মামলা থেকে বাদ দেওয়ার চক্রান্তের প্রতিবাদে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা জানায় দাবি যদি না মানা হয় তাহলে সামনে কঠোর আন্দোলন দিবে।

সোমবার (‎৫ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে মিছিলটি শুরু করে শিক্ষার্থীরা আবু সাঈদ চত্বর ঘুরে প্রধান ফটকে এসে সমাবেশে মিলিত হন।

‎এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘মামলা নিয়ে টালবাহানা, মানি না মানব না’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।

আরো পড়ুন:

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবি প্রক্টরের নাম, প্রতিবাদে মানববন্ধন

তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন ২ উপদেষ্টা

সমাবেশে শিক্ষার্থী সুমন সরকার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ আবু সাঈদ হত্যার মামলার কোনো সঠিক পদক্ষেপ দেখছি না। সব জায়গায় টালবাহানা চলছে। যেখানে গুটি কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে এবং আসামিদের অধিকাংশই ধরা ছোয়ার বাইরে। শহীদ আবু সাঈদ হত্যার সঠিক বিচার না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের যাদের ইশারায় শহীদ আবু সাঈদের উপর গুলি করা হয়েছে, তারা এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বহাল তবিয়তে আছে।”

শিক্ষার্থী ‎ইমরান হোসেন বলেন, “‎যে শিক্ষার্থীরা জুলাই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তারা ঘুমিয়ে যায়নি। কোন নিয়মে স্বৈরাচারের দোসরদের পদায়ন করা হয়েছে, তা শিক্ষার্থীরা জানতে চায়। স্বৈরাচারের দোসরকে লালন করার জন্য কি এ প্রশাসন এসেছে? প্রশাসন যদি মামলা বাণিজ্য করে কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার তীব্র থেকে তীব্রতর প্রতিবাদ জানাচ্ছে।”

‎মোরসালিন মুন্না বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা আওয়ামী লীগের দোসর এবং জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী, তারা এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বহাল তবিয়তে কাজ করছেন। অনেককে পদায়নও করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো মামলা করা হয়নি। আমরা মনে করি, এ প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাসি-তামাশা করছে।”

তিনি বলেন, “এটা শহীদ আবু সাঈদের ক্যাম্পাস। আমরা রক্ত দিতে জানি, জান দিতে জানি। সুতরাং এখানে কোনো ধরনের তালবাহানা চলবে না। আমরা চাই সঠিক তদন্তের বিচার করে আওয়ামী লীগ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় করতে হবে।”

এ বিষয়ে বেরোবি ‎উপাচার্য অধ্যাপক শওকাত আলী বলেন, “সাক্ষ্য প্রমাণের  মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীরা আরো নাম দিতে পারে। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে আমরা যাচাই করে তাদের নামও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করব।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়ার ফেরা: নাগরিকদের চলাচলে ডিএমপির নির্দেশনা

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছানোর পর তাঁকে পথে পথে অভ্যর্থনা জানাবেন দলের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। এ ক্ষেত্রে সাধারণ নাগরিকদের চলাচলে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সে জন্য কিছু বিষয় মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

সোমবার এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।

ডিএমপির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জনসাধারণকে গুলশান–বনানী থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত রাস্তায় অবস্থান না করে ফুটপাতে অবস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আগত জনসাধারণকে রাস্তা থেকে সরিয়ে ফুটপাতে অবস্থান করানোর জন্য প্রয়োজনীয় স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

ডিএমপির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গুলশান-বনানী থেকে উত্তরা পর্যন্ত সড়ক যথাসম্ভব পরিহার করে বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের অনুরোধ করা হয়েছে। বিকল্প রাস্তার মধ্যে রয়েছে:

• আবদুল্লাহপুর কামারপাড়া ধউর ব্রিজ-পঞ্চবটী-মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে গাবতলী হয়ে চলাচল।

• ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার।

• উত্তরা ও মিরপুরে বসবাসকারীদের এয়ারপোর্ট সড়ক ব্যবহার না করে বিকল্প হিসেবে হাউস বিল্ডিং–জমজম টাওয়ার–১২নম্বর সেক্টর খালপাড়–মেট্রোরেল উত্তরা উত্তর স্টেশন–উত্তরা সেন্টার স্টেশন–মিরপুর ডিওএইচএস হয়ে চলাচল এবং উত্তরা সেন্টার স্টেশন থেকে ১৮ নম্বর সেক্টর-পঞ্চবটী হয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে চলাচল করতে পারেন।

• গুলশান, বাড্ডা এবং প্রগতি সরণি এলাকার যাত্রীরা কাকলী, গুলশান-২, কামাল আতাতুর্ক সড়কের পরিবর্তে গুলশান-১, পুলিশ প্লাজা-আমতলী-মহাখালী হয়ে মহাখালী বাস টার্মিনাল সংলগ্ন র‍্যাম্প ব্যবহার করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে এয়ারপোর্ট–উত্তরা যেতে পারবে।

• মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইলগামী যানবাহন মিরপুর-গাবতলী রোড হয়ে চলাচল করতে পারবে।

• এয়ারপোর্ট, ৩০০ ফিট রাস্তা থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন বনানী, কাকলী র‍্যাম্পের পরিবর্তে মহাখালী র‍্যাম্প, এফডিসি র‍্যাম্প ব্যবহার করতে পারবে।

এ ছাড়া ডিএমপির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা সেনানিবাস কর্তৃপক্ষ ঢাকা সেনানিবাসের রাস্তা (জিয়া কলোনি, জাহাঙ্গীর গেট, সৈনিক ক্লাব, স্টাফ রোড) সকাল আটটা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত শুধু হালকা যানবাহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে। সুতরাং সেনানিবাসের রাস্তা ব্যবহার করতে পারেন।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নির্ধারিত টোল পরিশোধপূর্বক ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার গতিসীমা মেনে ও এক্সপ্রেসওয়ের বাঁ পাশের সেফ লেন ব্যবহার করে সকাল সাতটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ওভারস্পিড ও লেন পরিবর্তন করলে আইন প্রয়োগের জন্য পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

বিকল্প হিসেবে ঢাকা-জয়দেবপুর চলাচলকারী ট্রেন ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। রেলওয়ের সব আন্তনগর ট্রেন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টঙ্গী, এয়ারপোর্ট এবং তেজগাঁও স্টেশনে ২ মিনিটের জন্য থেমে যাত্রী বহনের ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কমলাপুর-টঙ্গী রুটে অতিরিক্ত একটি শাটল ট্রেন পরিচালনা করবে।

হজযাত্রীসহ বিদেশগামীদের এয়ারপোর্টে গমনাগমনের ক্ষেত্রে এবং ওই এলাকায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের যথেষ্ট সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। মিরপুর ও উত্তরাবাসীকে বিকল্প হিসেবে মেট্রোরেল ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

কোনো ব্যাগ, লাঠি ইত্যাদি বহন না করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনাকারীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে। অভ্যর্থনাকারীরা কোনো যানবাহন নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরে যুক্ত হতে পারবেন না।

অভ্যর্থনাকারী ব্যক্তিরা মোটরসাইকেল নিয়ে কোনোক্রমেই গুলশান, বনানী থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত রাস্তায় অবস্থান করতে পারবেন না বা মোটরসাইকেলযোগে জনতার মধ্য দিয়ে চলতে পারবেন না। তবে এ রাস্তা দিয়ে (জনসমাগম না হলে) সাধারণ যানের সঙ্গে মোটরসাইকেল চলতে পারবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ