পাকিস্তানে ভারতের ‘অপরাশেন সিঁদুর’ অভিযানের মধ্যে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয়, যাতে তিনজন বেসামরিক ভারতীয় নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।

রয়টার্স ও এএফপি জানিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারত-শাসিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হামলায় তিনজন ভারতীয় বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

৭ মে গভীর ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলার মধ্যে সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলির রেশ এখনো রয়েছে বলে জানিয়েছে দুই দেশের গণমাধ্যম। পারমাণবিক অস্ত্রে বলিয়ান ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধপরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্ক ও উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে, একে অপরের বিরুদ্ধে বিমান হামলা ও সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে।

পহেলগাম জঙ্গি হামলার জবাবে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে আঘাত হেনেছে ভারতীয় সেনারা। ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীনই জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ-রাজৌরি এলাকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গোলাবর্ষণ শুরু করেছে পাকিস্তান। ভারতীয় সামরিক বাহিনী তাদের এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে এমন দাবি করেছে।

পোস্টে বলা হয়েছে,পুঞ্চ-রাজৌরি এলাকার ভিম্বর গলিতে কামান থেকে গোলাবর্ষণ করছে পাকিস্তান। ভারতীয় সেনা তার জবাব দেওয়া শুরু করেছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে বিমান বাহিনীর সব ইউনিটকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান কোনো ধরনের হামলা চালালে তার চরম জবাব দিতে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। 

গত ২২ এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর বারবার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। একই অভিযোগ পাকিস্তানও করছে ভারতের বিরুদ্ধে।

এদিকে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানে নারী-শিশুসহ আটজন নিহত হওয়ার দাবি করেছে ইসলামাবাদ। অবশ্য এই দাবির বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ভারত। 

আবার হামলার সময় ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি ড্রোন ভূপাতিত করার যে দাবি করেছে পাকিস্তান, সে বিষয়েও কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি নয়াদিল্লি। 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশিদের ভিসা চালুর বিষয়ে অগ্রগতি হওয়ায় ইউএইকে ধন্যবাদ প্রধান উপদেষ্টার

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা চালু করার বিষয়ে অগ্রগতি অর্জিত হওয়ায় সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বিভিন্ন খাতে দেশটির বিনিয়োগ প্রস্তাবকে স্বাগত জানান।

আজ বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউএইর টলারেন্স অ্যান্ড এক্সিসটেন্স-বিষয়ক ক্যাবিনেট মন্ত্রী শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ানের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় অধ্যাপক ইউনূস ইউএইকে ধন্যবাদ জানান।

শেখ নাহিয়ানের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলটি বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় স্বল্প সময়ের সফরে পৌঁছায়। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী তাঁদের অভ্যর্থনা জানান।

প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-বিষয়ক মন্ত্রী আহমেদ বিন আলী আল সায়েঘ, বিনিয়োগ মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবদুর রহমান আল হাওয়ি।

আল নাহিয়ান প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং আমাদের বন্ধুত্ব পুনর্ব্যক্ত করতে আমি আমাদের প্রেসিডেন্টের নির্দেশে এখানে এসেছি।’

আল নাহিয়ান আরও বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের সরকারের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ের বাড়তি সংলাপকে আমরা প্রশংসা করি। আমরা বিনিয়োগ থেকে শুরু করে ভিসা পর্যন্ত সব খাতে সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি এবং আমরা একসঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।’

এই সৌহার্দ্যমূলক উদ্যোগের প্রশংসা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা এ ধরনের সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতাকে স্বাগত জানাই। আমরা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ প্রস্তাবকেও স্বাগত জানাই।’

ভিসা নীতিতে শিথিলতার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিসার দরজা খোলার জন্য ধন্যবাদ। এখনো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া বাকি আছে, আশা করি আমরা সম্পৃক্ত থাকব এবং সমস্যাগুলো সমাধান করব।’

সম্প্রতি ইউএই প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০টি ভিজিট ভিসা ইস্যু করছে। ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের জন্য ভিসাগুলোও সাম্প্রতিক সময়ে দ্রুত অনুমোদিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় দক্ষ কর্মীদের জন্য অনলাইন ভিসা সিস্টেম আবার চালু করেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিপণন ব্যবস্থাপক, হোটেলকর্মীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ভিসাও এই পদ্ধতিতে দেওয়া হয়। এ ছাড়া নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য ৫০০ ভিসা ইতিমধ্যে ইস্যু হয়েছে এবং আরও ১ হাজার ভিসা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

ঢাকায় নিযুক্ত ইউএই রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আল হমোদি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে ইউএই প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ত্যাগ করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ