দীর্ঘ বছর ধরে ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশ পাহাড়ের আদিবাসীরা। তারা মনে করেন, পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি ফিরে আসবে। তাই দ্রুত পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ পাহাড় আর সমতলের সকল আদিবাসীদের, আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন পাহাড়ের আদিবাসীরা।

৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবসকে ঘিরে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি এমএন লারমার দল ও বিভিন্ন সংগঠন খাগড়াছড়িতে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সেসব কর্মসূচি উপলক্ষ্যে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন পাহাড়িরা। 

পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমতলের সকল আদিবাসীকে ‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি দীর্ঘদিনের কিন্তু এতদিন পরেও সেই স্বীকৃতি না পাওয়ায় হতাশার কথা জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসকৃত বিভিন্ন জাতিস্বত্তার মানুষ। 

তারা জানিয়েছেন, আদিবাসী হিসেবে তাদের নিজস্ব ঐহিত্য, ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, কালচারসহ সবকিছু থাকা সত্ত্বেও বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী সরকার তাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। তাদের ভূমি অধিকারও হরণ করা হয়েছে।

আদিবাসী বিষয়ক জাতীয় কোয়ালিশন, জেলা সমন্বয়কারী, নমিতা চাকমা বলেন, “পাহাড়ের ১৯০০ সালের আইন অনুসারে প্রথাগত আইনের মাধ্যমে ভূমির দখলি সত্ত্বটা বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। তাই তাদের অনেকের ভূমির কোনো দলিল বা কাগজপত্র নেই। আর এই সুযোগে আমাদের ভূমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে ১৯৭৪ সালের পর পাহাড়ে বাঙ্গালী পুর্নবাসন শুরু করার পর থেকে পাহাড়ের ভূমি বেদখল হয়ে গেছে, এখনো যাচ্ছে। বেদখলকৃত ভূমি উদ্ধার করার জন্য ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক ভূমি কমিশন করা হয়, সেই কমিশনে প্রায় ১৬ হাজার আবেদন জমা পড়লেও কমিশনের কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেই।”

ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরনার্থীর সভাপতি অজিত বরণ চাকমা বলেন, “ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরনার্থীদের সাথে সরকারের যে ২০ দফা প্যাকেজ চুক্তি ছিল, তাও বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই পাহাড়ের আদিবাসীরা মনে করেন, পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিলে পাহাড়ের আদিবাসীদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত হবে আর স্থায়ী শান্তি ফিরে আসবে।”

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির এমএন লারমা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, “আদিবাসী স্বীকৃতির দাবিটা দীর্ঘ বছরের। পাহাড়-সমতল মিলিয়ে ৪৪/৪৫টি জাতিসত্ত্বা আছে বাংলাদেশে। বিগত সরকারের কাছে জোর দাবি ছিল, দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল- সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের জন্য। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারের কাছে দাবি দাওয়া পেশ করে আসছি। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হলেও আমাদের দাবি সরকারের কাছেই। দেশে যে সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকুক বা যে সরকার আসুক, আমাদের দাবি আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি।”

তিনি আরো বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমরা আশা করেছিলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের দাবি নিয়ে যথেষ্ট নমনীয় হবেন, আন্তরিক হবেন কিন্তু সে ধরনের কোন আলামত দেখছি না। আগামীতে যে সরকার ক্ষমতায় আসুক, আদিবাসী হিসেবে যেন স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশে আদিবাসীরা যেসব অধিকার ভোগ করে, বাংলাদেশের আদিবাসীরাও যেন সেসব অধিকার ভোগ করতে পারেন।”

ঢাকা/রূপায়ন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ববি প্রেসক্লাবের দায়িত্বে আরিফ ও উবাইদা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রেসক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার ববি প্রতিনিধি আরিফ হোসাইন। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সংবাদদাতা মো. আবু উবাইদা।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এবং সাধারণ সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে (কণ্ঠভোট) আগামী ১ বছরের জন্য (২০২৫-২৬) ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদিত হয়।

আরো পড়ুন:

ববি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘ভিত্তিহীন’ সংবাদ প্রচারের অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: আবাসন-পরিবহনে ভোগান্তি চরমে, বাড়ছে শুধু বিভাগ

ববি প্রেসক্লাবের উপদেষ্টামণ্ডলী, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেস রিলিজ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

কমিটির অন্যান্যরা হলেন, সহ-সভাপতি নওরিন নুর তিষা, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম নিওন, সাংগঠনিক সম্পাদক ডালিয়া হালদার, কোষাধ্যক্ষ আবির হোসেন ওমর, দপ্তর সম্পাদক সাইফুল, প্রচার সম্পাদক সিয়াম, গ্রন্থগার সম্পাদক শিমু আক্তার।

এছাড়া কার্যনির্বাহী সদস্যরা হলেন- আব্দুল কাদের জীবন ও তাহসিন সারাকে নির্বাচিত করা হয়েছে।

নবগঠিত কমিটির সভাপতি মো. আরিফ হোসাইন বলেন, “অন্যায় ও অপরাধের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় সোচ্চার থাকব। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অর্জন সকলের কাছে তুলে ধরার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিতে পাশে থাকব।”

ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ