শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় প্রায় ছয় বছর ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত স্ত্রীকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মো. খলিলুর রহমান (৮০) নামে এক ব্যক্তি।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর কানিপাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

অভিযুক্ত খলিলুর রহমান খোশালপুর মধ্যপাড়ার মৃত জহুর আলীর ছেলে।

আরো পড়ুন:

সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার ৫

৫ কেজি গাঁজাসহ নারী মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

ভিডিওতে দেখা যায়, খলিলুর রহমান তার স্ত্রীকে ঘর থেকে টেনে উঠানে নিয়ে যান। এর আগেই, উঠানের একটি অংশে কোদাল দিয়ে সামান্য পরিমাণ গর্ত করেন তিনি। সেই গর্তের ভেতরে স্ত্রীকে রেখে তার ওপর কোদাল দিয়ে মাটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন খলিলুর। অসুস্থ বৃদ্ধাকে আত্মরক্ষায় চিৎকার করতে দেখা গেছে ভিডিওতে। 

ভিডিওতে একাধিক ব্যক্তিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে দেখা গেলেও কেউ ওই নারীকে রক্ষায় এগিয়ে যাননি।  

স্থানীয়রা জানান, ভিডিওটি ওই দম্পতির নাতি মো.

খোকন (১৯) ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। এই ভিডিও রাতারাতি ভাইরাল হয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ছয় বছর ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী ওই বৃদ্ধা। অনেক চিকিৎসা করা হলেও তিনি সুস্থ হননি। বিরক্তি থেকে খলিলুর এমন কাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা তাদের।

স্থানীয় রহিম মিয়া বলেন, ‍“খলিলুর কাকা খারাপ লোক না। সবার সঙ্গে হাসি মুখে চলেন। স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পর থেকে মন খারাপ থাকে তার। তিনি আজ এমন কাণ্ড কেন ঘটালেন বুঝতে পারছি না।”

ভুক্তভোগীর পাশের বাড়ির সুজন বলেন, “খলিলুর তেমন ঝামেলায় জড়ান না, তবে গরিব মানুষ। গতকালই স্ত্রীর জন্য একটি চেয়ার কমোড কিনে আনেন। স্ত্রী চোখে ভালো দেখেন না। একটু কথা না শোনায় এই ঘটনা ঘটে। তার নাতি ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করায় বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।”

শ্রীবরদী থানার ওসি মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, “ভিডিও দেখার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে সামাজিকভাবে সমাধান হয়েছে বলে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, “আমি ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি সত্যিই মর্মান্তিক। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ

এছাড়াও পড়ুন:

বাজারে এসেছে টয়োটার প্রথম বৈদ্যুতিক পিকআপ

সারা বিশ্বেই অটোমোবাইল শিল্পে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে। রিভিয়ান আর১টি, ফোর্ড এফ-১৫০ লাইটনিং আর টেসলা সাইবারট্রাকের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জাপানি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা প্রথম পূর্ণাঙ্গ বৈদ্যুতিক পিকআপ ট্রাক তৈরি করেছে। বিশ্বজুড়ে গাড়িশিল্পে স্থায়িত্বের জন্য পরিচিত টয়োটা হাইলাক্স এবার বৈদ্যুতিক যুগে প্রবেশ করল। পূর্ববর্তী মডেল চালু হওয়ার ১০ বছর পর, নতুন নবম প্রজন্মের হাইলাক্স থাইল্যান্ডে আত্মপ্রকাশ করে। টয়োটা ডিজেল ও হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল পাওয়ারট্রেনের পাশাপাশি নতুন বৈদ্যুতিক গাড়ি হিসেবে এই ট্রাকের ওপর জোর দিয়েছে।

নতুন টয়োটা হাইলাক্স সিঙ্গেল ও ডবল কেবিন উভয় ক্ষেত্রেই পাওয়া যাবে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বাজারে শুধু ডাবল কেবিন সংস্করণ মিলবে। এতে একটি একক অল-ইলেকট্রিক সেটআপ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি অ্যাক্সেলের জন্য একটি করে মোট দুটি বৈদ্যুতিক মোটর ও একটি ৫৯.২ কিলোওয়াট-ঘণ্টার ব্যাটারি প্যাক নিয়ে চলবে পিকআপটি। এতে সর্বোচ্চ শক্তি পাওয়া যাবে ১৯৩ হর্সপাওয়ার। সামনের মোটরটি ১৫১ পাউন্ড-ফুট টর্ক সরবরাহ করে, যখন পিছনের ড্রাইভ ইউনিটটি আরও ১৯৮ পাউন্ড-ফুট টর্কের জন্য দায়ী। টয়োটা হিলাক্স ব্যাটারি ইলেকট্রিক ভেহিকলের সর্বোচ্চ পেলোড ক্ষমতা হলো ১৫৭৬ পাউন্ড বা ৭১৫ কিলোগ্রাম। আর টোয়িং ক্ষমতা ৩৫২৭ পাউন্ড।

নতুন পিকআপ গাড়িটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এর ড্রাইভিং রেঞ্জ। টয়োটা বলছে, নতুন হাইলাক্স বিইভি ডব্লিউএলটিপি চক্রের উপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ চার্জে প্রায় ১৫০ মাইল বা ২৪০ কিলোমিটার যেতে সক্ষম। আধুনিক ইভি মান অনুসারে এই রেঞ্জ খুব বেশি নয়। যারা মূলত খামার বা কাজের স্থানে স্বল্প দূরত্বে তাদের ট্রাক ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এই দূরত্ব যথেষ্ট।

পিকআপে ব্যাটারি নিচে ও ল্যাডার চ্যাসিস ফ্রেম রেলের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। গাড়ির মাধ্যাকর্ষণ কেন্দ্র নিম্ন রাখার জন্য এমন করা হয়েছে। পিকআপটি একটি ডিসি ফাস্ট চার্জার থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ কিলোওয়াট ইনপুট নিতে পারে। স্টাইলিংয়ের দিক থেকে নবম-প্রজন্মের টয়োটা হিলাক্স আগের তুলনায় বেশ আধুনিক বলা যায়। হিলাক্সে প্রথমবারের মতো বৈদ্যুতিক পাওয়ার স্টিয়ারিংও যুক্ত করা হয়েছে। ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম ওভার দ্য এয়ার (ওটিএ) আপডেট সমর্থন করে।

সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক সংস্করণ ছাড়াও টয়োটা বাজারভেদে ৪২-ভোল্টের মাইল্ড-হাইব্রিড প্রযুক্তি সহ ২.৮ লিটার টার্বোডিজেল ইঞ্জিন আর নন-ইলেকট্রিফাইড ২.৮-লিটার ডিজেল ও ২.৭-লিটার গ্যাসোলিন ইঞ্জিনেও নতুন হিলাক্স বাজারে আনবে। এ ছাড়া ২০২৮ সাল থেকে একটি হাইড্রোজেন ফুয়েল-সেল সংস্করণও যুক্ত হবে। নতুন টয়োটা হাইলাক্স ইউরোপে আগামী ডিসেম্বরে বিক্রি শুরু হবে।

সূত্র: ইনসাইড ইভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ