ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় সড়কে পাট শুকানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিদাদপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিক করেছেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাজিদাদপুর গ্রামের নিতিশ কুমার বালা ও জগদীশ কুমার বিশ্বাসের মধ্যে বাড়ির সামনের রাস্তা সংলগ্ন জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে একাধিক সালিশ বৈঠকও হয়। সম্প্রতি সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি বসানো হয়।

আরো পড়ুন:

কলেজ মাঠের পানি নিষ্কাশন নিয়ে শিক্ষক-স্থানীয়দের সংঘর্ষ

টাঙ্গাইলে বিএনপির ২ পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

আজ শুক্রবার সকালে জগদীশ বিশ্বাসের পক্ষের লোকজন সড়কে পাট শুকাতে গেলে নিতিশ বালার পক্ষের লোকজন তাদের বাধা দেয়। পাট শুকানোর বাঁশ সরানো নিয়ে তাদের মধ্যে শুরু হওয়া কথা কাটাকাটি পরবর্তীতে সংঘর্ষে রূপ নেয়। 

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে বিশ্বাস পক্ষের জগদীশ বিশ্বাস (৬০), জয়ন্ত বিশ্বাস (২৬), অপূর্ব বিশ্বাস (৩৫) এবং বালা পক্ষের শিবু বালা (৬০), রতন বালা (৪০) ও সুজন সরকার (২৫) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ইতি বিশ্বাস (৫২), সুশান্ত বিশ্বাস (৩০), রবিন বিশ্বাস (৫০), সমীর বিশ্বাস (৪০), শুক্লা বিশ্বাসসহ (৩৩) অন্য আহতরা বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। গুরুতর আহত উত্তম সরকারকে (৩০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

শেখর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাইদ (পান্নু) বলেন, “ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছি। সংঘর্ষ থামার পর টহল পুলিশ মাঝপথ থেকে ফিরে গেছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.

সাবরিনা হক রুম্পা বলেন, “সংঘর্ষে আহত ১৭ জন হাসপাতালে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।”

বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, “এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”

ঢাকা/তামিম/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত স ঘর ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলও কি স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে

১৫ বছর ধরে অনেক ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল আর সংগঠন মিলে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসেন।

এর ফলে হাসিনা সরকারের পতন হয় ও তিনি এবং তাঁর দলের কর্মীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এ পরিবর্তন শুধু একটা সরকারের পরিবর্তন নয়, বরং দীর্ঘ সময়ের ভয় ও দমনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সাহস, আশা ও গণতান্ত্রিক চেতনার একটি বড় জয় ছিল।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, কিছু গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল এই আন্দোলনের সফলতাকে শুধু নিজের নামে দাবি করতে শুরু করে। কেউ কেউ বলতে থাকে, তাদের কারণেই সরকার পতন ঘটেছে। তাই তারাই ভবিষ্যতে ক্ষমতার একমাত্র ভাগীদার।

আবার কিছু ধর্মীয় বা আদর্শিক গোষ্ঠী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যারা আগে প্রকাশ্যে তেমন সক্রিয় ছিল না। এ ছাড়া কিছু নতুন দল, যারা আগে রাজনীতিতে খুব একটা পরিচিত ছিল না, তারাও হঠাৎ করে সামনে চলে এসেছে। তারা নিজেদের ‘নতুন শক্তি’, ‘ভিন্নধারার দল’ হিসেবে উপস্থাপন করে, কিন্তু তাদের আচরণে কখনো কখনো পুরোনো রাজনীতির কৌশলই দেখা যায়।

আরও পড়ুনশেখ হাসিনা স্বৈরশাসকদের টিকে থাকার দুটি মূলমন্ত্রেই ব্যর্থ২২ আগস্ট ২০২৪

এই আন্দোলনের সময় বিভিন্ন গোষ্ঠী একসঙ্গে থাকলেও আন্দোলনের পর তারা নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে গিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আবার নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ করছে। এতে আন্দোলনের মূল চেতনা—জনগণের অধিকার, গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেন ধীরে ধীরে পেছনের দিকে চলে গেছে।

এ বাস্তবতায় প্রশ্ন ওঠে, যাঁরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন, তাঁরাই কি আবার ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গিয়ে নতুন একধরনের স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেবেন?

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ৫ আগস্ট, ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ