সন্তানহীন সংসারে পাকা অভিনেত্রী হয়ে ওঠার গল্প বললেন অপরাজিতা
Published: 8th, August 2025 GMT
ভারতীয় টিভি ও বড় পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপরাজিতা আঢ্য। মাত্র ১৯ বছর বয়সে টলিউডের সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার অতনু হাজরাকে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনের ২৮ বছর পূর্ণ করে ২৯ বছরে পা দিলেন এই দম্পতি।
সংসার জীবনের সময়সীমা প্রায় ৩ দশক হলেও তা যেন চোখের পলকে কেটে গেছে। বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে একান্নবর্তী পরিবারে দীর্ঘ এই জার্নির গল্প জানিয়েছেন অপরাজিতা আঢ্য।
‘প্রাক্তন’খ্যাত অপরাজিতা আঢ্য বলেন, “যাহ ফস করে বেরিয়ে গেল ২৮টা বছর! ২৯-এর দরজায় এসে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কি অদ্ভুত এই সময় কোথা দিয়ে যে সরে যায়, কিছুই টের পাওয়া যায় না। ফিরে তাকিয়ে দেখি—এই ২৮ বছর ধরে ১২ জনের সংসার করে কী শিখলাম? আসলে আমরা তো এই জগৎ সংসারে এসেছি শেখার জন্যই। এই সংসারজীবন থেকে ঠিক কী শিখলাম? শিখে তো আগেই ছিলাম—বিয়ের আগে আমার দিদিমা বলেছিলেন, ‘বিয়ে কোনো সুখ নয়, বিয়ে হলো দায়িত্ব।”
আরো পড়ুন:
বাথরুমে গিয়ে কেঁদেছি: শুভশ্রী
বাংলাদেশি অভিনেত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে মুখ খুললেন শ্রাবন্তীর প্রাক্তন স্বামী
দিদিমার কথাকে মাথায় রেখে সংসার জীবনের যাত্রা শুরু করেছিলেন অপরাজিতা আঢ্য। তার ভাষায়, “এই কথাটাকে মাথায় রেখেই আমি সংসার নামক মঞ্চে অভিনয় করতে নেমে পড়েছিলাম। এ যে এক বিশাল নাটক! চরিত্রের অভাব নেই। বাবা রে বাবা! চারপাশে সবাই বাঘা বাঘা অভিনেতা-অভিনেত্রী। দিদি শ্বাশুড়ির মা তখনো বেঁচে—মানে ঝি মা শ্বাশুড়ি! আর মাসি শ্বাশুড়ি, খুড়শ্বশুর, জ্যাঠাশ্বশুর, পিসি শ্বাশুড়ি-শশুর, শাশুড়ি, দেওর গুণে শেষ করা যাবে না; কে কে যে মঞ্চে ঢুকছে আর ডায়ালগ বলছে, বুঝতেই পারছিলাম না! তখন বুঝলাম, এইভাবে তো নাটক চলবে না। পুরোটাই একেবারে জট পাকানো। তাই আমি নিজেই নেপথ্যে চলে গেলাম— পরিচালকের আসনে বসিয়ে দিলাম আমার শাশুড়ি মাকে। তারপর আর দেখে কে!”
সংসারে পাকা অভিনেত্রী হয়ে ওঠার গল্প জানিয়ে অপরাজিতা আঢ্য বলেন, “আমরা, মানে শাশুড়ি মা, আমি আর ননদ—একসাথে মিলে নাটকটাকে একেবারে জমিয়ে দিলাম। সব চরিত্রদের নিয়ে শুরু হলো একেবারে রঙ্গমঞ্চের ঝলকানি! আর উপদেশ জ্ঞাপন ও বোধের চরিত্রে রেখেছিলাম আমার বর মশাইকে। মা-দিদিমার পরে তিনিই আমার গুরু, যে আমায় শিখিয়েছেন ক্ষমার ওজন কেমন হয়, আর শিখিয়েছেন চূড়ান্ত রাগের মুহূর্তে মিষ্টি কথা বলার প্রয়োজন ঠিক কতটা। এই নিত্যদিনের নানা রকম গল্পে, নানা অভিনয়ে নিজেই পাকা অভিনেত্রী হয়ে উঠলাম—কালিদা।”
অপরাজিতার মাকে ভীষণ ভয় পেতেন তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তা স্মরণ করে অপরাজিতা আঢ্য বলেন, “তবে হ্যাঁ, কিছু কড়া সমালোচকও ছিলেন। তাদের মধ্যে প্রধান ছিলেন আমার মা। মায়ের ভয়ে পুরো শ্বশুরবাড়ির লোক তটস্থ! আমি বোধহয় সেই দুর্লভ কন্যাদের একজন, যার মাকে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ভয় পেত। এইভাবেই মজায় মজায়, নাচে-গানে, আনন্দে কখন যে ২৯-এর দোরগোড়ায় পৌঁছে গেলাম, নিজেই টের পাইনি।”
প্রিয় মানুষগুলো এক এক করে পৃথিবীতে বিদায় নেওয়ার কথা উল্লেখ করে অপরাজিতা আঢ্য বলেন, “এর মাঝে কিছু প্রিয় অভিনেতা যাদের ঈশ্বর নিজের মঞ্চে ডেকে নিলেন। যেমন: আমার শশুর মশাই, দিদি শ্বাশুড়ি, জ্যাঠাশ্বশুর, জেঠি শাশুড়ি, পিসে শ্বশুর এবং শেষমেশ আমার মা। যিনি হয়তো ঐশ্বরিক মঞ্চেও একজন কড়া সমালোচকের প্রয়োজন ছিল বলেই সেখানে গেলেন। আমরা অনেক ওজর-আপত্তি করেছিলাম, অনেক আন্দোলন করেছিলাম। কিন্তু ‘সুপ্রিম কে’ কি আর কেউ টলাতে পারে?”
বয়স বাড়ছে ৪৭ বছরের অপরাজিতার, তা-ও টের পাচ্ছেন। তার ভাষায়—“যাই হোক, এখন বেশ আছি। মাথার চুলে রুপোলি রং লেগেছে, হাঁটু মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেয় আমি প্রবীণের পথে হাঁটছি। তবু কে মানে বলো! আমাদের এই রঙ্গমঞ্চে আমরা সবাই রাজা আর রানীদের জোর সব থেকে বেশি!”
পর্দায় বহুবার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অপরাজিতা। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে এখনো সন্তানের মা হননি এই অভিনেত্রী। এর আগে এক সাক্ষাৎকারে অপরাজিতা বলেছিলেন, “আমাদের সন্তান নিয়ে সেভাবে প্ল্যানিং কখনো করা হয়নি বা হয়ে ওঠেনি বা হয়তো কোনো শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ছিল, সে কারণেও হতে পারে। সেটা নিয়ে আমরা কোনো দিনই খুব একটা মাথা ঘামাইনি। আমাদের বাড়িতে অনেক বাচ্চা, তারা আমাদের মা-বাবা বলে মনে করে। তাই আমাদের মনে খেদ বা দুঃখ বা অনিশ্চয়তা কখনো তৈরি হয়নি।”
বায়োলজিক্যাল সন্তানের মা না হলেও অপরাজিতার একটি পাতানো মেয়ে রয়েছে। তার নাম গার্গি। সে পেশায় ব্যাংকার। অপরাজিতা-অতনুকে মা-বাবা বলে ডাকেন। গার্গির আসল বাড়ি হাওড়ায়। ১৬-১৭ বছর বয়স পর্যন্ত নিজের বাবা-মায়ের কাছেই থাকতেন। তারপর চলে আসেন অতনু-অপরাজিতার কাছে। গার্গির বয়স এখন ৩১ বছর।
১৯৯৮ সালে ‘শিমুল পারুল’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় নাম লেখান অপরাজিতা। অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো—‘চুপ কথা’, ‘গয়নার বাক্স’, ‘ওপেনটি বায়োস্কোপ’, ‘বেলা শেষে’, ‘প্রাক্তন’, ‘সমান্তরাল’ প্রভৃতি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ন অপর জ ত অপর জ ত র আম দ র চর ত র
এছাড়াও পড়ুন:
আজ টিভিতে যা দেখবেন (৭ নভেম্বর ২০২৫)
চতুর্থ যুব ওয়ানডেতে আজ মুখোমুখি বাংলাদেশ–আফগানিস্তান। ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে আছে ব্রাজিলের ম্যাচ।৪র্থ যুব ওয়ানডে
বাংলাদেশ–আফগানিস্তান
সকাল ৯টা, টি স্পোর্টস
ইংল্যান্ড–হাইতি
সন্ধ্যা ৬–৩০ মি., ফিফা+ টিভি
ব্রাজিল–ইন্দোনেশিয়া
রাত ৯–৪৫ মি., ফিফা+ টিভি
ব্রেমেন–ভলফসবুর্গ
রাত ১–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২
এলচে–রিয়াল সোসিয়েদাদ
রাত ২টা, রাজধানী টিভি ও বিগিন অ্যাপ