আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে সাত বছর আগে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় করা মামলা বাতিলকে স্বাগত জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। একই সঙ্গে বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় আরও অগ্রগতি প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি।

অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক গবেষণা পরিচালক ইসাবেল লাসে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘শহিদুল আলমের এই রায় অনেক আগেই পাওয়া দরকার ছিল। তাঁকে যখন আটক করা হয়েছিল, তখন আমরা তাঁকে বিবেকের বন্দী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলাম। তাঁর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে গ্রেপ্তার হওয়া কখনো উচিত ছিল না। ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বাংলাদেশের (তৎকালীন) কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও দমন-পীড়নের সমালোচনা করার কারণেই তাঁকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।’

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর পদ্ধতিগত ও সহিংস উপায়ে দমন-পীড়ন চালানোর ধারা পরিবর্তন করাটা অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন ইসাবেল লাসে। তিনি বলেন, ‘এ জন্য প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে, নিজেদের আইনকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং যেসব কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ বা হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিচার নিশ্চিত করা। যাঁরা এসবের নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। যেহেতু বাংলাদেশ একটি ন্যায়ভিত্তিক ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সমাজের দিকে যাত্রা করছে বলে অনেকে আশা করছেন, তাই সেখানে এ ধরনের দমনমূলক কৌশলের কোনো স্থান নেই।’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মনে করে, শহিদুল আলমের মামলা বাতিল করাই যথেষ্ট নয়। মতপ্রকাশের কারণে তাঁকে ১০০ দিনের বেশি আটকে রাখা হয়েছে এবং হেফাজতে থাকা অবস্থায় তাঁর ওপর নির্যাতন হয়েছে। তাঁর এগুলোর প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।

শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় করা মামলাটি বৃহস্পতিবার বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য মন স ট র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

আধুনিক মোটরসাইকেলের জন্ম আজ

একটু আগে রাজধানী ঢাকার বনানী থেকে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো অফিসে মাত্র ২০ মিনিটে চলে আসি। রাস্তায় যানজট থাকার পরেও রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহার করে রাস্তায় দ্রুতগতির মোটরসাইকেল পাই। রাস্তায় এখন নানা ধরনের মোটরসাইকেল দেখা যায়। এই মোটরসাইকেলের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮৮৫ সালের ১০ নভেম্বর। প্রায়ই প্রথম আধুনিক মোটরসাইকেল হিসেবে বিবেচিত ডেমলার রাইটওয়াগেনের প্রথম পরীক্ষামূলক চালনাকে মোটরসাইকেলের জন্মদিন ধরা হয়।

রাইটওয়াগেন উদ্ভাবন করেছিলেন গটলিব ডেমলার ও উইলহেম মেব্যাখ। প্রথম দ্বিচক্রযান হিসেবে এতে গ্যাসোলিনকে অভ্যন্তরীণ দহন ইঞ্জিনে ব্যবহার করা হয়। এর আগে ১৮৬৭ সালের পেরো ও রোপার বা ১৮৮৪ সালের কোপল্যান্ডের মতো মোটরসাইকেলে বাষ্প শক্তি ব্যবহার করতে দেখা যায়। ডেমলারের রাইটওয়াগেনের ইঞ্জিন ব্যবহারকারী স্থল, সমুদ্র বা আকাশযানের পথপ্রদর্শক হিসেবে ধরা হয়। রাইটওয়াগেনে রাবারের ব্লকের ওপর একটি ২৬৪ কিউবিক সেন্টিমিটারের একক সিলিন্ডার ফোর–স্ট্রোক ইঞ্জিন বসানো হয়। এতে দুটি লোহার তারযুক্ত কাঠের চাকা ও ভারসাম্যের জন্য স্প্রিংসহ এক জোড়া চাকা ছিল।

ঐতিহাসিক প্রথম পরীক্ষামূলক চালনায় চালকের আসনে ছিলেন ১৭ বছর বয়সী পল ডেমলার। পল উদ্ভাবক গটলিব ডেমলারের ছেলে। জার্মানির ক্যানস্ট্যাট থেকে উন্টারটুর্কহেইম পর্যন্ত মোটরসাইকেল চালান তিনি। সেই যাত্রাকে কার্যকরভাবে বিশ্বের প্রথম বাইক রাইড বলা হয়। পৃথিবীর প্রথম বাইকার পল সেই সময়ে ৩ দশমিক ১ থেকে ৭ দশমিক ৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা গতিতে ভ্রমণ করেছিলেন। যাত্রাপথে ইঞ্জিনের ঠিক নিচে থাকা হট টিউব ইগনিশনের কারণে তাঁর আসনে একবার আগুন ধরে গিয়েছিল।

যদিও রাইটওয়াগেন নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে। এটিকে প্রথম মোটরসাইকেল বলতে অনেক ইতিহাসবিদ দ্বিধা করেন। বড় চাকার সঙ্গে সেই যানে এক জোড়া ছোট চাকা ছিল। আবার অনেকে এনরিকো বার্নার্দির ১৮৮২ সালের এক সিলিন্ডার পেট্রলচালিত ট্রাইসাইকেল মোট্রিস পিয়াকে প্রথম অভ্যন্তরীণ দহন ইঞ্জিনযুক্ত যান হিসেবে গণ্য করেন।

সূত্র: অটোমোটিভ হিস্টোরি

সম্পর্কিত নিবন্ধ