শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শামীম ওসমানের মতো মাফিয়া চলে গেলেও দেশে অনেক ছোট ছোট শামীম ওসমানের জন্ম হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, এই সরকারের এক বছর পূর্তি হলেও ত্বকী হত্যার বিচারের জন্য কথা বলতে হচ্ছে, এটা খুবই দুঃখজনক ও বিস্ময়কর।

শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ নগরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার মিলনায়তন প্রাঙ্গণে ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪৯ মাস উপলক্ষে মোমশিখা প্রজ্জ্বালন কর্মসূচিতে আনু মুহাম্মদ এই মন্তব্য করেন।

প্রতি মাসের ৮ তারিখে ত্বকী হত্যার বিচারের দাবিতে ধারাবাহিকভাবে এই মোমশিখা প্রজ্জ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

কর্মসূচিতে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘ত্বকী, তনু, সাগর-রুনি, মুনিয়াসহ এই হত্যাকাণ্ডগুলো শেখ হাসিনা শাসনামলের একেকটা চিহ্ন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে অন্যতম বড় আকাঙ্ক্ষা ছিল মাফিয়াতন্ত্রের পরিবর্তন হবে, হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। এই সরকারের অনেক উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি ছিল বহুল আলোচিত হত্যাকাণ্ডগুলো তারা দ্রুত সমাধান করবেন। কিন্তু এক বছর পার হওয়ার পরও আমরা দেখছি একই জায়গায় আছি।’

আনু মুহাম্মদ বলেন, শামীম ওসমানের মতো মাফিয়া চলে গেলেও অনেক ছোট ছোট শামীম ওসমানের জন্ম হচ্ছে দেশে। তিনি আরও বলেন, শামীম ওসমানের জন্ম হচ্ছে, মব সন্ত্রাস হচ্ছে, নারীর ওপর আক্রমণ হচ্ছে; সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগরিষ্ঠের মধ্যেও যারা দুর্বল, তাদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে এবং বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জোরজবরদস্তি, মব সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, নতুন নতুন মাফিয়াতন্ত্র তৈরি হচ্ছে, সরকারের মধ্য থেকে একধরনের নিষ্ক্রিয়তা, নির্লিপ্ততা ও পৃষ্ঠপোষকতার কারণে।

ত্বকীর বাবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার বিচারব্যবস্থাকে ধ্বংস করে গেছে। যে স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মানুষ রাজপথে দলে দলে নেমে এসেছে, দেড় হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে এবং প্রায় ২০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ববরণ ও আহত হয়েছে, তাদের আকাঙ্ক্ষার কোনো বাস্তবায়ন নাই। বরং এর বিপরীত দিকটা আমরা লক্ষ করছি। ত্বকীর ঘাতক ওসমান পরিবার পালিয়ে গেলেও তাদের সহযোগী সন্ত্রাসী ও খুনিরা বিএনপির বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঢুকে পড়ছে। প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় ওসমান পরিবারের সেই চাঁদাবাজি, হাট–ঘাট, মাঠ, মাদক এখন বিএনপির লোকেরা নিয়ন্ত্রণ করছে। ওসমান পরিবারের এই খুনিরা বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন মাফিয়াতন্ত্র গড়ে তোলার তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিশু সংগঠক রথীন চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হালিম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদের টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ম হ ম মদ সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে মামুন মাহমুদের উদ্যোগে ৮ম ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদের উদ্যোগে সোনারগাঁয়ে ৮ম ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সোমবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাইকারটেক নবাব হাবিবুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাম্পে ১২শ’ রোগীর চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।

এতে ২২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সেখানে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী বিনামূল্যে ঔষধ, চশমা সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও ডায়াবেটিস, রক্তের গ্রুপ, ডেঙ্গু টেস্ট করা হয়েছে।

এর আগের ৭টি ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্পে ১৬ হাজারের বেশী রোগীর এসব সেবা গত ১৮ দিনে দেওয়া হয়েছে বলে ক্যাম্প পরিচালনায় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এই ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প পরিদর্শন করতে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সভায় অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, আমি এই এলাকায় এমপি-মন্ত্রী হতে আসিনি। মানুষের সেবা করতে এসেছি। আগামী নির্বাচনে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে ৩১ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে সেবার মাধ্যমে তার প্রচারণা করতে এসেছি। 

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাজী সামসুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে এসময়ে আরো বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক এসোসিয়েশনের সভাপতি ডাক্তার মজিবুর রহমান, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, কাইকারটেক নবাব হাবিবুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো:ওবায়দুর রহমান এবং ধ্রুবতারা যুব সংঘের সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম লিটু।

উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা দলের সভাপতি রহিমা শরীফ মায়া, জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুল, মহানগর শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনির মল্লিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাকের আহমেদ সোহান, নাসিক ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি গাজী মনির হোসেন, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তার হোসেন মৃধা প্রমূখ। সভা শেষে তিনি রোগীদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
 ‎
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডেঙ্গু প্রতিরোধে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সতর্কতামূলক প্রচারাভিযান 
  • বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদের পক্ষে আনুর নেতৃত্বে ‎শহরে গণসংযোগ
  • ফতুল্লায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা, কথিত বিএনপি নেতাকে কারাগারে প্রেরণ
  • বন্দরে গভীর রাতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মশাল মিছিল 
  • নারায়ণগঞ্জে ভাবি ও ভাতিজাকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
  • দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্রী সালমার স্বপ্নপূরণে ডিসি জাহিদুলের সহায়তা
  • মাসুদ ভাই আপনাদের উন্নয়নে, সমস্ত কর্মকাণ্ডে পাশে থাকবেন : সজল
  • সিদ্ধিরগঞ্জে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলার আসামি কারাগারে
  • নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া অফিসের আয়োজনে বালকদের ভলিবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
  • সোনারগাঁয়ে মামুন মাহমুদের উদ্যোগে ৮ম ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত