স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি বলেছেন, পুলিশের প্রত্যেক সদস্যকে জনগণের সঙ্গে সুবিচার ও সদয় ব্যবহার করতে হবে। অহংকার, লোভ, হিংসা, পরচর্চা ও অন্ধ আনুগত্য বর্জন করে আরও উদ্ভাবনী কার্যক্রম হাতে নিতে হবে।

আজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে রাজারবাগ পুলিশ মিলনায়তনে ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা’ শীর্ষক বিশেষ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব নাসিমুল গনি সুরা সোয়াদ-এর ২৬ নম্বর আয়াত উল্লেখ করে বলেন, ‘হে দাউদ, আমি তোমাকে পৃথিবীতে খলিফা বানিয়েছি, সুতরাং মানুষের মাঝে ন্যায়বিচার করো এবং ব্যক্তিগত খেয়ালখুশির অনুসরণ করো না, নইলে তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে সরিয়ে দেবে।’

অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ পেশাদারত্ব ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসন্ন নির্বাচনকে দেশে-বিদেশে একটি দৃষ্টান্তে পরিণত করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সাজ্জাত আলী আরও উল্লেখ করেন, গত বছরে বিশেষ করে মহানগর পুলিশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একসময় যে ভঙ্গুর অবস্থায় পুলিশ চলে গিয়েছিল, তা থেকে এখন অনেকটাই পেশাদারত্বে ফিরে এসেছে। এই পেশাদারত্ব আরও উন্নত করে দেশ ও জাতির সেবা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিষয়ে বক্তব্য দেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) ফারুক আহমেদ। অনুষ্ঠানে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পদবির পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন ড এমপ

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াত নতুন নতুন মত নিয়ে হাজির হয়: মেজর (অব.) হাফিজ

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী জামায়াতে ইসলামী নতুন নতুন মত নিয়ে হাজির হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন হাফিজ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘এই যে দল জামায়াতে ইসলামী, তারা সেদিন বলেছে যে জাতীয় ঘোষণাপত্রে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাকে অত্যন্ত গৌরবের সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়নি। তারা ভেবেছে যে বাংলাদেশের মানুষের স্মরণশক্তি খুবই দুর্বল। তারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। এখন তারা নতুন নতুন মত নিয়ে হাজির হয়।’

জুলাই ২৪ গণ–অভ্যুত্থানের ‘বর্ষপূর্তিতে দ্রুত বিচার সম্পন্ন, মৌলিক সংস্কার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে অগ্নিসেনা সোশাল ফাউন্ডেশন ও আমাদের নতুন বাংলাদেশ।

নির্বাচন বিলম্বিত হয় কিংবা নির্বাচন যাতে না হয়, এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা কাম্য নয় উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তবে বিচারের ভার জনগণের কাছে। গণতন্ত্রে প্রত্যেকে নিজেদের বক্তব্য দেওয়ার অধিকার আছে।’

আগামী সংসদ নির্বাচনে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাই সংস্কার নিয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন হাফিজ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এত দিন ভোট দিতে পারেনি। কিন্তু কিছু দল ধরে নিয়েছে, নির্বাচন হলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে, তারা নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে পিআর সিস্টেমের কথা বলে। আমি মনে করি, আগামী নির্বাচন বিদ্যমান পদ্ধতিতে আয়োজন করা উচিত, যাতে মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে।’

ইভিএম প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, দেশের মানুষ এখনো ইভিএমের সঙ্গেও পরিচিত নয়। জনগণ এখনো সচেতন হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোও এখনো এতটা পরিপক্বতার পরিচয় দিতে পরেনি যে একটি প্রতীকে ভোট দিলে তাদের অবস্থার পরিবর্তন হবে। বরং মানুষ এখনো স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে সব সুখ–দুঃখ নিয়ে হাজির হন।

বর্তমান সরকারের কাছে পুলিশ বাহিনীর সংস্কার অন্যতম আকাঙ্ক্ষা ছিল উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, বিগত সময়ে দেশে পুলিশ বাহিনী একটি পেটোয়া বাহিনীতে পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশ একটি পুলিশ স্টেটে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু একটি বছর পার হলেও পুলিশ বাহিনীর কোনো সংস্কার করা হয়নি। এই বাহিনী সঠিকভাবে একটি নির্বাচন করতে পারবে কি না, তা নিয়ে জনগণের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, র‍্যাবকে নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে না, তাহলে এই বাহিনীকে রাখা হলো কেন?

সভায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান ব্যবস্থা নিজেই একটি স্বৈরাচারী ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার মধ্যে যে–ই ক্ষমতায় যায়, তাকেই স্বৈরাচারী বানিয়ে দেয়।

চব্বিশের অভ্যুত্থান বড় ঘটনা উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী বাংলাদেশে যারা নিজেদের বদলাতে পারবে না, আগামী দিনে তারা আর প্রাসঙ্গিক থাকবে না। নতুন ব্যবস্থার জন্ম এখন একটা অনিবার্য ঘটনা। এটা ঘটতেই হবে। কাজেই নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে যারা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারবে, তারাই আগামী দিনে প্রাসঙ্গিক থাকবে।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়েও এই পুলিশ ও প্রশাসনের তেমন পরিবর্তন হয়নি। বরং বিভিন্ন দলকে ব্যবহার করে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রশাসনে পুনর্বাসিত হচ্ছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারকাজ শেষ হতে সর্বোচ্চ ছয় মাস সময় লাগার কথা। কিন্তু আমরা দেখেছি, বিভিন্ন ধরনের ইস্যু সামনে টেনে নিয়ে আসা হলো। সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে নাকি জাতীয় নির্বাচন আগে। বিচার আগে নাকি নির্বাচন আগে। পর্যায়ক্রমে একেক সময় একেক ইস্যু সামনে আনছে।’

অগ্নিসেনা সোশাল ফাউন্ডেশনের সভাপতি জহিরুল হক সভায় সভাপতিত্ব করেন। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহসভাপতি গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক ফোরামে চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাইয়ের ভয়াবহতা: সরকার প্রধানের কণ্ঠে হত্যার নির্দেশ
  • মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াত নতুন নতুন মত নিয়ে হাজির হয়: মেজর (অব.) হাফিজ
  • সরকার একটি মিশ্র রেকর্ড নিয়ে আছে
  • অনিয়মের অভিযোগ আমলে নেওয়া হোক
  • জুলাই ঘোষণাপত্র ইসলামপন্থীদের অবমাননা ও জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি চরম অবহেলা
  • নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় কিছু উপদেষ্টার মন খারাপ: হাফিজ
  • তারেক রহমানের দিকে তাকিয়ে আছে দেশ: সেলিমা রহমান
  • জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জাতীয় পার্টির
  • প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার