ইউরো জয়ের পর জিয়ানলুইজি দোন্নারুমার বাজারদর তরতর করে বেড়ে গিয়েছিল। অথচ এসি মিলানের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করে ২০২১ সালে ফ্রি এজেন্টে পিএসজি যোগ দেন তিনি। বিনিময়ে প্যারিসের ক্লাবটি থেকে মৌসুমে ১২ মিলিয়ন ইউরো বেতন নেন।

ওই দোন্নারুমা চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন। গোলবারে পিএসজির ‘সুপারম্যান’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। লিভারপুলের বিপক্ষে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখান ইতালির ৬ ফিট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার ২৬ বছর বয়সী গোলরক্ষক। আর্সেনালের বিপক্ষেও তিনি ছিলেন অসাধারণ।

পেনাল্টি বিশেষজ্ঞ এই দোন্নারুমা মৌসুম শেষে ছাড়তে পারেন পিএসজি। এমনকি দলটির স্প্যানিশ কোচ লুইস এনরিকের তাকে আটকানোর তেমন কোন চেষ্টা নেই। দোন্নারুমা গোলবারে বল ফেরানোয় অসাধারণ হলেও তার বল পাসিং সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। যে কারণে এনরিকের প্রিয় ছাত্র হতে পারেননি তিনি।

তার সঙ্গে পিএসজির চুক্তি আছে আর এক মৌসুম। চুক্তি শেষে ফ্রি এজেন্টে তাকে দলে নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছিল ইতালির বর্তমান সময়ের সেরা ক্লাব ইন্টার মিলান। কিন্তু বাধ সেধেছে জুভেন্টাস, ম্যানচেস্টার সিটি এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাব।

সংবাদ মাধ্যম স্পোর্ত ইতালিয়া দাবি করেছে, মৌসুম শেষে জুভেন্টাস তাকে দলে নিতে চায়। সেজন্য পিএসজিকে ৯ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব দিয়েছে। ম্যানসিটির প্রস্তাব অবশ্যই জুভেন্টাসের চেয়ে বড়। এদেরসনের বিকল্প গোলরক্ষক খুঁজছে সিটিজেনরা। পোর্তর ডিয়াগো কস্তা ম্যানসিটি কোচ পেপ গার্দিওলার পছন্দের তালিকায় শুরুতে ছিলেন। এখন দোন্নারুমার বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখছে ক্লাবটি।

তবে অর্থের বিচারে সবচেয়ে বড় প্রস্তাবটা সম্ভবত দিতে যাচ্ছে ম্যানইউ। তারা নাকি দোন্নারুমার জন্য ৫০-৬০ মিলিয়ন ইউরো দিতে প্রস্তুত। ম্যানইউ আগামী মৌসুমে নতুন গোলরক্ষক নেওয়ার কথা ভাবছে। আন্দ্রে ওনানার ওপর থেকে আস্থা হারিয়েছেন কোচ রুবেন আমোরিম। সব মিলিয়ে দলবদলের বাজারে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন ইতালিয়ান গোলরক্ষক।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প এসজ ফ টবল দলবদল প রস ত প এসজ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কসোভোর রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

বাংলাদেশে নিযুক্ত কসোভো প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত প্লানাকে তাঁর নিয়োগের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং তাঁকে বাংলাদেশে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।

বাংলাদেশের ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর চেতনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি কসোভোর জনগণের স্বাধীনতা, শান্তি ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন।

জবাবে রাষ্ট্রদূত প্লানা কসোভোকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 

রাষ্ট্রদূত ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে সশস্ত্র সংঘাতের পর কসোভোর জনগণের জীবন পুনর্গঠনে গ্রামীণ কসোভোর অবদানকে স্মরণ করেন । 

তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে একটি মূল্যবান অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি এবং আমি আপনার ব্যক্তিগত অঙ্গীকারের জন্যও শ্রদ্ধা জানাতে চাই।’ 

‘আপনার গ্রামীণ ট্রাস্টের উদ্যোগ আমাদের জাতির জন্য এক বিশাল সহায়তা ছিল। স্বাধীনতা ও উন্নয়নে বাংলাদেশ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। যুদ্ধোত্তর সময়ে কসোভোতে বাংলাদেশের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের অবদান ও সহায়তার জন্যও আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ কসোভো বর্তমানে কসোভোর শীর্ষস্থানীয় ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা, যা দেশের ২০টি পৌরসভা ও ২১৯টি গ্রামে কাজ করছে, যেখানে ৯৭ শতাংশ ঋণগ্রহীতা নারী।

বাংলাদেশের গ্রামীণ ট্রাস্ট এই ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান।

কঠিন সেই সময়ের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল। যখন আমরা সেখানে পৌঁছায়, তখন সবকিছু ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিল। পুরুষেরা তখনো ফিরে আসেনি। কোনো মুদ্রা ছিল না, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছিল না। তখন আমরা শূন্য থেকে সেখানে গ্রামীণ ব্যাংকের কাজ শুরু করি।’

আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়, বিশেষ করে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর।

প্রধান উপদেষ্টা সহযোগিতার সম্ভাবনাময় কয়েকটি খাত তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, ওষুধ শিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং হালকা প্রকৌশল খাত।

তিনি কসোভোর বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত প্লানা উভয় দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের গুরুত্ব বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বাণিজ্য ও বিনিয়োগে গতিশীলতা আনার জন্য ব্যবসা ও শিল্প চেম্বারগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।

দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা কসোভোর বিভিন্ন খাতে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে রাষ্ট্রদূতের সহায়তা কামনা করেন।

তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কসোভোর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হার বাড়ানোর প্রস্তাব দেন, যার মধ্যে রয়েছে বৃত্তি, ফেলোশিপ ও একাডেমিক অনুদান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ