প্রায় ৭ কোটি বছর আগে পৃথিবীর বৃহত্তম শিকারী প্রাণী হিসেবে বিভিন্ন ডাইনোসরেরা এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াত। তখনকার সব মহাদেশে আধিপত্য বিস্তার করে বিভিন্ন ডাইনোসর। সেই সময় টাইরানোসরাস রেক্স বা টি–রেক্স ও রহস্যময় মেগারাপ্টরের মতো ডাইনোসররা বিশাল দৈত্যে পরিণত হয়েছিল। তাদের বিশাল আকারের রহস্য নিয়ে বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, চরম উষ্ণতার পরে শীতল জলবায়ুর কারণে এসব প্রাণী বিশাল আকার ধারণ করে।
প্রায় ৯ কোটি ২০ লাখ বছর আগে পৃথিবীতে ক্রিটেসিয়াস থার্মাল ম্যাক্সিমাম পর্ব চলছিল। মেবি সময় যখন বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছেছিল। এরপর জলবায়ু ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে কিছু ডাইনোসর বিশাল আকারে পৌঁছে যায়। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, জলবায়ু ঠান্ডা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাইরানোসর ও মেগারাপ্টরের মতো ডাইনোসর বড় হয়ে ওঠে, যা পূর্ববর্তী বিলুপ্ত দৈত্যাকার ডাইনোসরদের রেখে যাওয়া পরিবেশগত শূন্যতা পূরণ করে। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের বিজ্ঞানী ক্যাসিয়াস মরিসন বলেন, অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ক্রিটেসিয়াস যুগে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় বৃহত্তম টাইরানোসরদের আবির্ভাব হয়েছিল। ডাইনোসর যুগের শেষের দিকে তারা বড় হয়ে উঠেছিল। যখন কার্ক্যারোডোন্টোসরিড নামে পরিচিত পূর্বের দৈত্যাকার শিকারী প্রাণীরা অদৃশ্য হয়ে যায়, তখন নতুন ডাইনোসররা দ্রুত তাদের পরিবেশগত স্থান দখল করে নেয়। এই নতুনদের মধ্যে উত্তরের টাইরানোসর ও দক্ষিণে আরও দূরে মেগারাপ্টর অন্তর্ভুক্ত ছিল। উভয় দলই দ্রুত শীর্ষ শিকারী প্রাণীতে পরিণত হয়। শীতল জলবায়ুর সুযোগ নিয়ে তাদের আবাসস্থলে আধিপত্য বিস্তার করে তখন।
মেগারাপ্টররা টি–রেক্সের মতো ছিল না। শক্তিশালী চোয়ালের পরিবর্তে তারা চটপটে শিকারীরা ছিল। সরু মাথা, হালকা হাড় ও অস্বাভাবিকভাবে লম্বা বাহু ছিল তাদের। ৩৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বিশাল নখর ছিল তাদের। জীবাশ্মবিদরা এসব প্রাণীকে সবচেয়ে বিভ্রান্তিকর শিকারী হিসাবে দেখেন। খুব কম জীবাশ্ম পাওয়া গেছে তাদের।
প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতেন, মেগারাপ্টররা বেশির ভাগই দক্ষিণ আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দক্ষিণ ভূমিতে সীমাবদ্ধ ছিল। নতুন প্রমাণ বলছে তারা বিস্তৃত পরিসরে অবস্থান করত। প্রাথমিক মেগারাপ্টর সম্ভবত প্রায় ১২০ মিলিয়ন বছর আগে এশিয়ায় বিবর্তিত হয়েছিল। পরে ইউরোপ ও গন্ডোয়ানা, যা আজকের দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা ও অ্যান্টার্কটিকা, সেখানে ছড়িয়ে পড়েছিল।
বার্নার্ডিনো রিভাদাভিয়া ন্যাচারাল সায়েন্সেস আর্জেন্টিনা মিউজিয়ামের বিজ্ঞানী মাউরো আরানসিয়াগা রোলান্ডো বলেন, প্রায় ১২ কোটি বছর আগে বিবর্তনীয় ইতিহাসের শুরুতে মেগারাপ্টররা একটি বিস্তৃত ও বৈচিত্র্যপূর্ণ ডাইনোসর প্রাণীর অংশ ছিল। মেগারাপ্টররা ইউরোপ ও আফ্রিকার মতো অঞ্চলে বাস করত। যদিও জীবাশ্মবিদরা এখনো তাদের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করতে পারেননি। অন্যদিকে টি–রেক্সকে উত্তর আমেরিকার বাসিন্দা বলা হলেও অতীতের জীবাশ্ম, ভূগোল ও জলবায়ু বিশ্লেষণ করে বলা হচ্ছে, টি–রেক্সের পূর্বপুরুষরা আসলে এশিয়া থেকে এসেছিলেন। বিজ্ঞানী মরিসন বলেন, আমাদের মডেলিং থেকে জানা যাচ্ছে, টি–রেক্সের দাদা-দাদি সম্ভবত এশিয়া থেকে উত্তর আমেরিকায় এসেছিলেন। বর্তমান সাইবেরিয়া ও আলাস্কার মধ্যবর্তী বেরিং স্ট্রেইট পেরিয়ে তারা উত্তর আমেরিয়া আসেন।
পূর্ববর্তী গবেষণায় দাবি করা হয়, উত্তর আমেরিকান ডাইনোসর টাইরানোসরাস ম্যাকক্রিনসিস টি–রেক্সের আত্মীয় ছিল। নতুন গবেষণায় পুরোনো দাবি ভুল বলা হয়েছে। টি–রেক্সের সঙ্গে স্পষ্ট এশীয় সংযোগ দেখা যাচ্ছে। টি–রেক্স সম্পূর্ণ উত্তর আমেরিকান টাইরানোসরের পরিবর্তে টারবোসরাসের মতো এশীয় প্রজাতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
সূত্র: আর্থ ডট কম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম গ র প টরর জলব য
এছাড়াও পড়ুন:
১৯ জুলাই জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শনে নেতারা
সাত দফা দাবিতে আগামী ১৯ জুলাই রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। প্রস্তুত করা হচ্ছে প্যান্ডেল ও মঞ্চ।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে মাঠের প্রস্তুতি দেখতে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে একটি টিম সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন করেছেন।
এ সময় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল উদ্যানের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন এবং জাতীয় সমাবেশ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। সেই সঙ্গে জাতীয় সমাবেশ সফল করতে সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জামায়াত ক্ষমতায় এলে জুলাই শহীদদের জাতীয় মর্যাদা দেবে: রেজাউল করিম
সংস্কারের পথে বাধা দেওয়া রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা হতে পারে না
তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম।
জামায়াতের সাত দফা দাবিগুলো হলো- সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাজীব