কুবির ২ বিভাগে র্যাগিংয়ের ঘটনায় পৃথক তদন্ত কমিটি, ক্লাস-পরীক্ষা
Published: 7th, July 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) নৃবিজ্ঞান ও বাংলা বিভাগের র্যাগিংয়ের ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট পৃথক দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যাচ দুইটির সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.
নৃবিজ্ঞান বিভাগের র্যাগিংয়ের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন এবং সদস্য সচিব হিসেবে আছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার বিপ্লব মজুমদার। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন–নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাসেনা বেগম ও সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান।
আরো পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার দাবিতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণস্বাক্ষর
ইবিতে স্নাতক পাসের ১ বছর পরও মিলছে না নম্বরপত্র
বাংলা বিভাগের র্যাগিংয়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে আছেন কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বনানী বিশ্বাস এবং সদস্য সচিব হিসেবে আছেন সহকারী রেজিস্ট্রার মোঃ মনিরুজ্জামান। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন– বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর ড. মুতাসিম বিল্লাহ।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, “আমরা তদন্ত কমিটির অনুমোদনের জন্য রেজিস্ট্রার দপ্তরে সুপারিশ পাঠিয়েছি। উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য স্বাক্ষর করলে এই কমিটি কার্যক্রমের জন্য অনুমোদন হবে। অনুমোদনের সাত কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করবে। এ সাতদিন অভিযুক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”
গত ৫ জুলাই রাতে কুবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এক নবীন শিক্ষার্থী বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্বারা র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে যান। এ সংক্রান্ত একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে ভুক্তভোগী এবং তার সহপাঠীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নৃবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের বেঞ্চে দাঁড় করিয়ে রাখা, ধূমপান করার জন্য চাপ দেয়া এবং সিনিয়র আপুকে প্রপোজ করার জন্য চাপর দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া হলে ডেকে নিয়ে মানসিক নির্যাতন এবং রাতের আঁধারে ক্যাম্পাসের দূরবর্তী তালতলা নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে ভুক্তভোগীকে মানসিক নির্যাতন করাও অভিযোগও পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী ও তার সহপাঠীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী র্যাগিংয়ে অভিযুক্তরা হলেন- মুনতাসীর, ওলিউল্ল্যাহ, তিশা মনি, অরবিন্দু সরকার, রাফি ও হাসান।
অপরদিকে, বাংলা বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার ছাদে নিয়ে র্যাগিংয়ের সময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হন। পরে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি অস্বীকার করেন।
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য় র ঘটন য় র জন য সদস য সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ