১৯৬০-এর দশকের ঘটনা। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের এক পাট ব্যবসায়ী ও আইনপ্রণেতা লন্ডন গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন। ভদ্রলোক যে হোটেলে উঠেছিলেন, তা আর খুঁজে পাচ্ছিলেন না। সেই হোটেলে ছিলেন তাঁর সঙ্গে লন্ডনে আসা জনৈক শফিক সাহেব।

তো, হোটেল খুঁজে পেতে তিনি এক ব্রিটিশ পুলিশের কাছে গেলেন। ইংরেজি জানা নেই; তারপরও সাহস করে পুলিশ সদস্যকে বললেন, ‘আই খালেক সাহেব টু শফিক সাহেব।’ মানে তিনি বলতে চান, ‘আমি হলাম খালেক সাহেব, আমি শফিক সাহেবের কাছে যাব।’

আরেক ঘটনায় এই খালেক সাহেব ১৯৭১-এ স্বাধীনতার পরপর তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চাকরির মৌখিক পরীক্ষায় প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। নিজে লেখাপড়া না জানলেও প্রার্থীদের দরখাস্ত হাতে নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন।

এক প্রার্থীর হাতে লেখা ইংরেজি দরখাস্ত নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে দেখলেন তিনি। কাগজে কী লেখা আছে তা তিনি বুঝতে পারলেন না। তবে ‘In’ শব্দটি তিনি চিনতে পারলেন। ওই শব্দটিকে তিনি কলমের খোঁচায় বৃত্তবন্দী করে খুব বিজ্ঞ ভঙ্গি করে চাকরিপ্রার্থীকে বললেন, ‘দরখাস্ত ল্যাখছে কেডা?’ চাকরিপ্রার্থী বললেন, ‘স্যার, আমি।’ খালেক সাহেব বললেন, ‘ল্যাখাডা খারাপ না, কিন্তুক এই জায়গায় এই “ইন”ডা ল্যাখছ কী জন্যি?’

তরুণ গ্র্যাজুয়েট চাকরিপ্রার্থী উত্তর দিলেন, ইংরেজি গ্রামার অনুযায়ী ওই আপ্রোপ্রিয়েট প্রিপজিশনটি লিখতে হবে। কিন্তু খালেক সাহেব ‘ভুল ধরার’ কৃতিত্ব ছাড়তে চাইলেন না। তিনি ইংরেজি ব্যাকরণের দোহাইকে পাত্তা দিলেন না। কোথায় ‘In’ বসতে পারে, আর কোথায় পারে না, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মত দিয়ে তিনি চাকরিপ্রার্থীকে পৃষ্ঠপোষকতার সুরে পাণ্ডিত্যপূর্ণ গলায় বললেন, ‘এই জায়গায় “ইন” দিলেও অয়, না দিলেও অয়।’

দেশের সংবাদপত্র পাঠকদের কাছে ছাপা খবরের দাম খালেক সাহেবের ‘ইন’-এর মতো। অনেকের কাছে অফিসে ও বাসায় এখন এই জিনিস রাখলেও চলে, না রাখলেও চলে। আপনি ব্যাকরণ মানলে তো তবু ‘ইন’ ব্যবহার করতেই হয়।

দেশের ৬৪ জেলার ৪৫,০০০ খানায় (হাউসহোল্ড) গত জানুয়ারিতে পরিচালিত গণমাধ্যমবিষয়ক এক জাতীয় জনমত জরিপ বলছে, ৭৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মুদ্রিত সংবাদপত্র পড়েন না এবং ৪৬ শতাংশ খবরের কাগজ পড়ার প্রয়োজন মনে করেন না। টেলিভিশনের ক্ষেত্রেও এ হার ৫৩ শতাংশের বেশি।

জুলাই ২০২৪-এর আন্দোলনে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে জনমনে ক্ষোভের প্রেক্ষাপটে পাঠক, দর্শক ও শ্রোতাদের মনোভাব জানতে অন্তর্বর্তী সরকার-গঠিত ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন’-এর পক্ষে জরিপটি করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শাসনে গণমাধ্যমশিল্প, এর প্রতিষ্ঠানগুলো এবং সাংবাদিকতা পেশা গ্রহণযোগ্যতার বিচারে যেমন তলানিতে এসে পড়ে, তেমনি অধিকাংশ মিডিয়া হাউসের কর্ণধারদের আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা তোষণ নীতির কারণে সাধারণভাবে সাংবাদিকদের বিষয়ে গণরোষ তৈরি হয়, যদিও পেশাদারি প্রমাণ করা সাংবাদিকদের মানুষ শ্রদ্ধাই করে।

জুলাই ২০২৪-এর হত্যাকাণ্ডের মধ্যেও জবরদখলকারী প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ‘সকাশে’ তাঁর পোষা ফ্যাসিবাদী মতাদর্শ প্রচারকেরা নিরপরাধ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হওয়ার জোর দাবি জানান। সাংবাদিক নামধারী এই হোমরাচোমরারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপরও সম্পূর্ণ আওয়ামী নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে উপদেশ দেন।

মূলধারার গণমাধ্যমে হাসিনা অনুসারীদের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব থাকার পরও সামাজিক মাধ্যম ও অ্যাপভিত্তিক নেটওয়ার্ক নিয়ে তাঁদের উদ্বেগের কারণ প্রতিফলিত হয় সরকার পতনের পর পরিচালিত জরিপেও—৮৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী খবরের জন্য মুঠোফোন ব্যবহার করেন।

তাঁদেরই তরুণ প্রজন্ম স্মার্টফোনের কল্যাণে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় এবং সচেতন জ্যেষ্ঠরা ও স্বতঃস্ফূর্ত গণমানুষ তাতে শরিক হয়!

সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে প্রাথমিক খবর পেয়ে সঠিকতা যাচাই করতে পাঠক দর্শক পত্রিকা ও টেলিভিশনের দিকে ফিরে আসে বলে যে ধারণা সৃষ্টি হয়েছে তা অন্তত আমাদের পরিপ্রেক্ষিতে পুরোপুরি ঠিক ছিল না, এখনো নেই।

অন্যথায় জুলাই বিপ্লব আওয়ামী ফ্যাসিবাদী গণমাধ্যম সফলভাবে ব্যর্থ করে দিতে পারারই কথা।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে হাসিনা পতনের পরই ম্যাজিকের মতো গণমাধ্যম ঘুরে দাঁড়াতে পারল না কেন? তাও আবার এমন এক পরিবেশে, যেখানে সরকারপ্রধান বলেন, ‘মন খুলে আমাদের সমালোচনা করুন।’

দু–একটি ব্যতিক্রম বাদে পত্রিকার কাটতি (সার্কুলেশন) ও টেলিভিশনের দর্শকপ্রিয়তা নিম্নগামী, রাজস্ব সংকট প্রায় সবারই, সাংবাদিকদের বেতন অনিয়মিত অনেক হাউসে এবং গণমাধ্যমশিল্প আজ প্রবল অনিশ্চয়তার মুখে।

এ অবস্থার জন্য দায়ী নিকট অতীতের পেশাগত স্খলন, শিল্পের দুর্বলতা ও স্বাধীন গণমাধ্যম–বিরোধী রাষ্ট্রনীতির বাইরে অন্য কোনো মারেফাত বা বিশেষ জ্ঞান আমাদের কাছে নেই; কিছু হকিকত বা সঠিক কারণ অবশ্যই আছে।

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের এই পরিণতি মোটাদাগে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠতা থেকে বিচ্যুত, গণতন্ত্র ও দেশবিরোধী অবস্থান এবং বাংলাদেশের মানুষকে প্রতিদিন আহত করার ফ্যাসিবাদী কর্মযজ্ঞে শরিক হওয়ার চূড়ান্ত ফল।

হাসিনার অলিগার্কি-পরিচালিত যেসব পত্রিকা, টিভি চ্যানেল ও অনলাইন জনগণকে দিনের পর দিন কষ্ট দিয়েছে এবং জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছে, তারা রাজনৈতিক পরিবর্তন সত্ত্বেও ক্ষমা চায়নি, নীতি পরিবর্তনের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়নি, এবং নতুন করে স্বাভাবিক পেশাগত সাংবাদিকতা চর্চার ধারণা নিয়ে পাঠক–দর্শককে আশ্বস্ত করেনি।

গণমাধ্যমের একটি বড় অংশ বুঝতেই পারছে না বর্তমান সমাজে কতটা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে তারা। তাদের চ্যালেঞ্জ করেছে যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সেই প্ল্যাটফর্মগুলোর কথিত টকার, ইনফ্লুয়েন্সার বা অ্যাকটিভিস্টরা কে কোন দিকে হেলছেন, কোন উদ্দেশ্যে কী বলছেন এবং কে সহিহ কারবার করছেন, তা বুঝতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে না।

নিউইয়র্ক টাইমস বা আল–জাজিরার মতো শক্তিশালী মিডিয়া চাইলেই কি মানুষকে বোকা বানিয়ে রাখতে পারে?

মূলধারার গণমাধ্যমের অনেক কর্ণধারের অণু পরিমাণ অনুশোচনা নেই এবং জিজ্ঞাসা করছেন না যে কীভাবে তাঁরা জন-আস্থা ফিরে পেতে পারেন।

বরং কেউ স্রোতে গা ভাসিয়েছেন, কেউ সেলফ সেন্সরশিপ অনুসরণ করছেন, কেউ অন্তর্বর্তী সরকারের নীতি বিষয়ে সাময়িক নীরবতা দেখাচ্ছেন, কেউ পরবর্তী সরকারি দল তোষণের পথ খুঁজছেন, এবং হাসিনার বেনিফিশিয়ারিরা ফ্যাসিবাদী বয়ান ও আধিপত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষায় আছেন।

জুলাই বিপ্লবে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণ, চলমান সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুগুলো তুলে ধরা, প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহির নমুনা দেওয়া এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের এজেন্ডা নিয়ে অধিকাংশ গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা নেই।

বিগত সরকারের দুর্নীতি, অপকর্ম, ফ্যাসিবাদী বয়ান এবং মানবাধিকার ও গণতন্ত্রবিরোধী মিশনে জড়িত মিডিয়া কর্ণধার ও অলিগার্কদের তাঁদের অধিকারে থাকা মিডিয়া থেকে কি আলাদা করে ফেলা উচিত ছিল না?

যদি ধরে নিই, এসব মিডিয়া পুরোনো অভ্যাসে আড়ষ্ট এবং নতুন বাস্তবতার জন্য অপ্রস্তুত, সেগুলো ঠিকঠাক করতে অধ্যাপক ইউনূসের দেওয়া গণমাধ্যম বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কোনো ভূমিকা (গুড অফিসেস) আছে কি না, সে বিষয়ে ‘পাবলিক ডিবেট’ হতে পারে। এখতিয়ারবহির্ভূত বিষয়ে বিতর্কে জড়ানোর চেয়ে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট এবং গণমাধ্যমের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলি না কেন!

প্রধান উপদেষ্টা গণমাধ্যমসহ অন্যান্য সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট থেকে আশু করণীয় চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিলেও মিডিয়া নিয়ে আমরা উল্লেখ করার মতো অর্জন দেখছি না তাঁর জুনিয়র সহকর্মীদের।

কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা আইন (খসড়া প্রস্তুত) ও আচরণবিধি প্রণয়ন, সাংবাদিকতার নীতি-আদর্শ প্রয়োগে প্রেস কাউন্সিল ও প্রস্তাবিত ব্রডকাস্টিং কমিশনকে একীভূত করে স্থায়ী মিডিয়া কমিশন গঠন, সাংবাদিকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ ও নবম ওয়েজ বোর্ডের স্কেলের আদলে ন্যূনতম বেতন ঘোষণা, ক্রস-ওনারশিপ নিষিদ্ধ করে অর্ডিন্যান্স জারি, টেলিভিশনের জন্য ডিস্ট্রিবিউটর কর্তৃক রাজস্ব প্রদান এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন, রেডিও এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে বিবিসির আদলে একটি কাঠামোর মধ্যে আনার মতো সুপারিশগুলো ইতিমধ্যেই বাস্তবায়ন করা যেত।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে অধিকাংশ আলোচনায় একটি দুটি কালো আইনকেই সব নষ্টের মূল ধরা হয়, অথচ সাংবাদিকতা–বিষয়ক বেশির ভাগ মামলা ফৌজদারি আইনের অধীনে বিচার করা হয়, যার ফলে যেকোনো সরকার বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চাইলেই সাংবাদিকদের হয়রানি করতে এবং মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব করতে পারে। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার।

রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ঐকমত্য গণমাধ্যম সংস্কারে অপ্রাসঙ্গিক; তাই প্রশাসনিক নির্দেশ দিয়ে বাস্তবায়নযোগ্য সিদ্ধান্তগুলো সময়মতো বাস্তবায়িত না হলে আগামী দিনগুলোয় সংস্কার ও অন্যান্য কাজের বোঝা এতটা বড় হবে যে তার দায় বহন করা দায়িত্বপ্রাপ্তদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা এবং নাগরিক ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় গণমাধ্যম সংস্কার একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ণ।

হোক মিডিয়াতে বা কোনো কায়েমি স্বার্থে, সংস্কারে অনিচ্ছুক গোষ্ঠীরা যদি ভেবে থাকে, পত্রিকা, টেলিভিশন, অনলাইন মিডিয়া চলুক না যেভাবে চলছিল, তবে বুঝতে হবে তারা গণমাধ্যমের সুস্থ ভবিষ্যৎ দেখতে চান না।

অধিকাংশ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক চরিত্র ও সংস্কৃতি অব্যাহত থাকলে, একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পরও তারা মুখ থুবড়ে পড়বে এবং রাজনীতিতেও নৈরাজ্য পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া দুষ্কর হবে।

খাজা মাঈন উদ্দিন সাংবাদিক।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ কর প র র থ র জন ত ক র জন য ন র পর ব দ কত বলল ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজারে দুই দিনব্যাপী ট্যুরিজম আর্কিটেকচার সামিট

কক্সবাজারে অপরিকল্পিতভাবে পাঁচ শতাধিক হোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউস, কটেজ ও কয়েকশো রেস্তোরাঁ তৈরি হয়েছে। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে না ওঠায় এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরের প্রধান সড়ক, সৈকত সড়কসহ অলিগলি ডুবে যায়। হোটেল-রেস্তোরাঁর বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ে সমুদ্র ও নদীর পানিতে। তাতে পরিবেশ-প্রতিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা কক্সবাজারের প্রাকৃতিক পরিবেশও নানা কৌশলে ধ্বংস হচ্ছে। ভ্রমণে আসা পর্যটকদের বিনোদনে নতুন ক্ষেত্রও তৈরি হচ্ছে না। এসব বিষয় মাথায় রেখে কক্সবাজারে হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী ট্যুরিজম আর্কিটেকচার সামিট।

স্থপতি মেরিনা তাবাসসুমের তত্ত্বাবধানে প্রথমবারের মতো এ আয়োজিত সামিটের শিরোনাম ‘ডিসকোর্স বাই দ্য শোর: ট্যুরিজম আর্কিটেকচার সামিট-২০২৫’। 

কক্সবাজারের প্যাঁচার দ্বীপ সৈকতের পরিবেশবান্ধব ‘মারমেইড বিচ রিসোর্টে’ ১১ ও ১২ জুলাই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মূলত পরিবেশবান্ধব পর্যটন ও জলবায়ু নিয়ে আলোচনা হবে।

দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে স্থাপত্যের মাধ্যমে কীভাবে টেকসই পর্যটনকে সমর্থন করা যায় এবং পরিবেশগত ভারসাম্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরা যায়— তার উপায় খোঁজা হবে। বাংলাদেশের স্বনামধন্য স্থপতিরা টেকসই পর্যটন, স্থাপনা নির্মাণ, উপকূলীয় প্রতিরোধক্ষমতা এবং স্থানীয় বাস্তবতাভিত্তিক স্থাপত্য চর্চার সংযোগ নিয়ে আলোচনা করবেন।

সম্মেলন শুরু হবে ‘ইকো ট্যুরিজম এবং স্থাপত্য চর্চায় টেকসইতা’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে। যেখানে উপস্থিত থাকবেন স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম, খোন্দকার হাসিবুল কবির ও এহসান খান। বিকেলে সাতজন স্থপতি তাদের প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করবেন। পরে একটি গাইডেড সান-সেট মেডিটেশনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশে নকশা তৈরি করা হবে।

দ্বিতীয় দিনে আরও ১০ জন স্থপতি দুটি সেশনে তাদের ধারণাগুলো তুলে ধরবেন। সম্মেলন শেষ হবে একটি ওপেন ফ্লোর প্যানেল আলোচনার মাধ্যমে, যার মডারেটর হিসেবে থাকবেন মাহমুদুল আনওয়ার রিয়াদ ও নাহাস খলিল। সমাপনী বক্তব্যে সম্মেলনের সারমর্ম তুলে ধরবেন মেরিনা তাবাসসুম।

সম্মেলনের আয়োজক প্রতিষ্ঠান মারমেইড বিচ রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল হক চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার এখনো বিকাশমান একটি অঞ্চল, পরিবেশবান্ধব কক্সবাজার গড়তে এই সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সম্মেলনে উপকূলীয়, সাংস্কৃতিক এবং টেকসই প্রসঙ্গে কাজ করা স্থপতিরা অংশ নেবেন। তাঁরা পর্যটননির্ভর উন্নয়নে স্থাপত্যের ভূমিকা পুনর্নির্মাণ করবেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

সম্পর্কিত নিবন্ধ