ঝিনাইদহে এসআই মিরাজুল হত্যা: চারজনের মৃত্যুদণ্ড, চারজনের যাবজ্জীবন
Published: 7th, July 2025 GMT
ঝিনাইদহের ডাকবাংলো পুলিশ ক্যাম্পের সাবেক ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাহাবুব আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
ঝিনাইদহ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আমজাদ হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য সাত আসামি পলাতক।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন রাজবাড়ীর নিমতলা এলাকার আমজাদ হোসেন, লিয়াকত হোসেন, দক্ষিণ দৌলতদিয়ার আক্কাস আলী ও ফরিদপুরের ভাটি লক্ষ্মীপুর গ্রামের আলম শেখ। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুরের শোভারামপুর গ্রামের শাহীন, গোয়ালচামট গ্রামের মোহাম্মদ সাগর, টাপাখোলা গ্রামের নুরু খাঁ ও যশোরের শেখহাটি খাঁপাড়ার মনির হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট রাতে ঝিনাইদহ শহরের বাস মালিক সমিতি অফিসের সামনে একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ দেখে আরোহীরা পালিয়ে যান। এ সময় দেখা যায় মোটরসাইকেলটি ডাকবাংলো পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক মিরাজুল ইসলামের। কিন্তু তখন মিরাজুলের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ জানতে পারে, ওই দিন সন্ধ্যায় মিরাজুল ইসলাম ইফতার করে প্রয়োজনীয় কাগজ, নিজের নামে ইস্যুকৃত পিস্তল, গুলি, ম্যাগাজিনসহ অন্যান্য কাগজ নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে ঝিনাইদহ শহর থেকে কর্মস্থলে রওনা হন। পরদিন সকালে ভেটেরিনারি কলেজের পূর্ব পাশের পানিভর্তি ডোবায় মিরাজুল ইসলামের হাত–পা বাঁধা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় সদর থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করে পুলিশ। এজাহারে বলা হয়, মিরাজুল ইসলামের কাছে থাকা অস্ত্র ও মালামাল ছিনিয়ে নিতে তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। ২০১২ সালের ২৮ জানুয়ারি ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র জ ল ইসল ম ঝ ন ইদহ
এছাড়াও পড়ুন:
মুরাদনগরের সেই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়ানোর ‘নেপথ্যের’ ব্যক্তি কারাগারে
কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের পর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর ‘নেপথ্যের’ ব্যক্তি শাহ পরানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। শাহ পরান ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ফজর আলীর আপন ছোট ভাই।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলার বুড়িচং এলাকা থেকে শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন শুক্রবার ঢাকায় র্যাব-১১-এর মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার বিস্তারিত জানানো হয়। পরে সন্ধ্যায় শাহ পরানকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তর করে র্যাব।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমীন আজ প্রথম আলোকে বলেন, শাহ পরানকে নারী নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তাঁকে রিমান্ডে নিতে আগামীকাল রোববার আদালতে আবেদন করা হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মমিনুল হক শুনানি শেষে ২৮ জুন গ্রেপ্তার হওয়া চার আসামি—মোহাম্মদ আলী ওরফে সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আজ শনিবার দুপুরে তাঁদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুরাদনগর থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।
আজ বেলা আড়াইটার দিকে এসআই রুহুল আমীন বলেন, ‘আদালত তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করায় চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারাগার থেকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, তাঁদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।’
এদিকে পাশবিক নির্যাতনের মামলার একমাত্র আসামি ফজর আলী এখনো কুমিল্লা পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার সময় স্থানীয় লোকজন পিটিয়ে তাঁর হাত-পা ভেঙে দেন। পুলিশ ২৯ জুন ভোরে তাঁকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তাঁকে আদালতে হাজির করার বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা রুহুল আমীন বলেন, চিকিৎসক ছাড়পত্র দিলেই তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
২৯ জুন নারী নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছিল। নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার করা না গেলেও পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাঁরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
এসআই রুহুল আমীন বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে যাঁদের শনাক্ত করেছি, তাঁরা এলাকা থেকে পালিয়ে গেছেন। তাঁদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমাদের অভিযান চলছে। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িত সবাই আইনের আওতায় আসবে।’