ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন প্রাক্তন পর্নো তারকা রে লিল ব্ল্যাক। জাপানিজ এই নাগরিকের আসল নাম কাই আসাকুরা। গত বছর মালয়েশিয়াতে গিয়ে ধর্মান্তরিত হন আলোচিত এই তারকা। এখন পুরোপুরি ইসলামী রীতি অনুযায়ী জীবনযাপন করছেন। একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে।

ইয়াহু ডটকম এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে মালয়েশিয়া ভ্রমণে যান রে লিল ব্ল্যাক। মূলত, অবসরযাপন, দেশটির সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং বিখ্যাত সব খাবার উপভোগ করার জন্য তার এই ভ্রমণ ছিল। আধ্যাত্মিক কোনো রূপান্তরের পরিকল্পনা তার ছিল না। কিন্তু ভাগ্যের অন্য পরিকল্পনা ছিল। 

কুয়ালালামপুরে অবস্থান করার সময়ে লিলের পুরোনো এক বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যে এর আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। বিশ্বাস, উদ্দেশ্য এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি সম্পর্কে আলাপচারিতার পর ইসলামের প্রতি লিলের আগ্রহ বাড়ে। ভারসাম্য, ধৈর্য এবং সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে সরাসরি সংযোগের বিষয়ে ইসলামের শক্তি দেখে মুগ্ধ হন এই তারকা। 

আরো পড়ুন:

সময় দিতে না পারলে পদ আটকে রেখে লাভ কী, প্রশ্ন অমিত হাসানের

শাকিবের নায়িকা নির্বাচন নিয়ে দীপার প্রশ্ন, চলছে বিতর্ক

এরপর লিলের বন্ধু মালয়েশিয়ার পুত্রাজায়ার একটি মসজিদে আমন্ত্রণ জানান তাকে। মসজিদে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থনার গভীরতা ও প্রার্থনাকারীদের প্রশান্তি দেখে মুগ্ধ হন লিল। পরে লিল এই অভিজ্ঞতাকে ‘অপ্রতিরোধ্য’ কিন্তু ‘শান্তিপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করেন, যা এর আগে কখনো তার হয়নি। মূলত, এই মুহূর্তটি লিলের হৃদয়ে ইসলাম নিয়ে কৌতূহলের বীজ বপন করে, যা তাকে ধর্ম সম্পর্কে আরো জানতে আগ্রহী করে তুলে। 

সিঙ্গাপুরভিত্তিক পডকাস্টে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন রে লিল ব্ল্যাক। জাপানের নাগরিক হলেও ব্যাংককে বসবাস করছেন। মালয়েশিয়া ভ্রমণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে এ আলাপচারিতায় রে লিল ব্ল্যাক বলেন, “কুয়ালালামপুর ভ্রমণে গিয়ে প্রথমবার হিজাব পরি। সারা দিন হিজাব পরেছিলাম। কারণ আমি চাইছিলাম, মসজিদ পরিদর্শন করতে এবং মুসলমানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে।”  

মালয়েশিয়া ভ্রমণকে জীবনের টার্নিং পয়েন্ট বলে মন্তব্য করেছেন রে লিল ব্ল্যাক।  

ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর মানুষের সমর্থন যেমন পেয়েছেন, তেমনি তিক্ত সমালোচনার মুখেও পড়েছেন রে লিল ব্ল্যাক। তবে নিজের অবস্থানে অবিচল থেকে ইসলামী শিক্ষা অনুশীলন, ধর্মীয় ক্লাসে যোগদান এবং বিশ্বাস সম্পর্কে বোধগম্যতা গভীর করছেন। সমালোচকদের উদ্দেশে রে লিল ব্ল্যাক বলেন, “সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে তার সম্পর্ক একটি ব্যক্তিগত বিষয়।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কর ছ ন ভ রমণ

এছাড়াও পড়ুন:

বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন না করার দাবিতে বিক্ষোভ

বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন না করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন একদল আইনজীবী।

আজ সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন আইনজীবীরা। পরে মিছিল নিয়ে সমিতি প্রাঙ্গণ ও সমিতি ভবন প্রদক্ষিণ করেন।

সরকারের উদ্দেশে সমাবেশে আইনজীবীরা বলেন, ন্যায়বিচার সবার দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে চাইলে জেলা আদালতকে উপজেলায় পৌঁছে দেন। সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা দিতে আসতে হয় না। নিম্ন আদালতে বিচারপ্রার্থীদের মাসে হাজিরা দিতে হয়। ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের কোনো বিভাগ নেওয়া যাবে না। যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা থেকে অচিরেই সরে আসুন। অন্যথায় আইনজীবীরা দুর্বার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে।

‘বিভাগীয় শহরে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ’—এমন শিরোনামে সাধারণ আইনজীবীদের ব্যানারে এ সমাবেশ হয়।

সমাবেশে আইনজীবী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের কোনো বেঞ্চ নিয়ে যাওয়া যাবে না। বিচার বিভাগকে আরও মজবুত করতে গিয়ে দুর্বল করে দিলে এর চেয়ে খারাপ আর কিছুই হবে না। অনুরোধ জানাই, আপনারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা থেকে অচিরেই সরে আসুন।’

মাহফুজুর রহমান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। শুরুতে তিনি বলেন, ‘এখানে রাজনৈতিক কোনো বিষয় নয়, এখানে সাধারণ আইনজীবীদের বিষয়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ১৫ হাজার সদস্য রয়েছে। ১৫ হাজার সদস্যের তরফ থেকে বলতে চাই, ঢাকার বাইরে হাইকোর্টের কোনো বেঞ্চ নিয়ে যাওয়া যাবে না। যাবে না, যাবে না।’

সমিতির সাবেক সহসম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান বলেন, ‘বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের রায় (অষ্টম সংশোধনী মামলার রায়) থাকা সত্ত্বেও এর বাইরে গিয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই। সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তকে পরিবর্তন করার ক্ষমতা সংস্কার কমিশনকে দেওয়া হয়নি। এটা আদালত অবমাননার শামিল।...বিচার বিভাগে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার জন্য, ন্যায়বিচারকে সুদূরপরাহত করার জন্য নানা রকম ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা মনে করি, সংস্কার কমিশনের তথাকথিত ঐকমত্য তার একটা বহিঃপ্রকাশ।’

সমাবেশে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম, আইনজীবী শেখ আতিয়ার রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন। অন্যদের মধ্যে আইনজীবী আবদুল কুদ্দুস বাদল, আশরাফুল ইসলাম, আনিসুর রহমান রায়হান ও মো. মাকসুদ উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ৩ জুলাই হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ ঢাকার পাশাপাশি প্রতিটি বিভাগীয় শহরে এক বা একাধিক বেঞ্চ করার বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে বলে জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের জন্য ঐকমত্য হয়েছে। হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ ঢাকার পাশাপাশি প্রতিটি বিভাগীয় শহরে থাকবে—এ বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।

এক আইনজীবীর আবেদন

হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের উদ্যোগ না নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম। প্রধান বিচারপতির কাছে লেখা আবেদনটি আজ হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারের (বিচার) কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী আইনজীবী।

আইনজীবী সাইফুল ইসলাম তাঁর আবেদনে লিখেছেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন। তাই তিনি এ বিষয়ে তাঁর মতামত ও আপত্তি সদয় বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ