ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইরানে হামলার জন্য যদি ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনা না হয়; তবে পুরো অঞ্চল এবং তার বাইরেও এর পরিণাম ভোগ করতে হবে। আজ সোমবার ব্রাজিলে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জোট ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

ব্রিকস সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে আরাঘচি বলেন, ‘আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ২২৩১-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন। ২০১৫ সালে ওই প্রস্তাবে সর্বসম্মতভাবে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।’ খবর আল জাজিরার

গত মাসে ইরানের কয়েকটি সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হঠাৎ হামলা করে ইসরায়েল। জবাবে পাল্টা হামলা চালায় ইরান। দুই প্রতিবেশীর সংঘাতের মধ্যে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

আরাঘচি আরও বলেন, ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র যে হামলা চালায় তাতে ইসরায়েলের ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসী যুদ্ধে মার্কিন সরকারের সম্পূর্ণ জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকে না।

রোববার ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইরান ব্রিকস প্লাস জোটের অন্যান্য সদস্য দেশের সমর্থন পেয়েছে। বৈঠকে ব্রিকস প্লাস জোট ইরানে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে। ১১টি দেশের এই জোট বলেছে, এসব হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘আমরা গত ১৩ জুন ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে হামলার নিন্দা জানাই।’ তারা আরও বলেছে, ‘আমরা ইরানের বেসামরিক অবকাঠামো এবং শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’

ব্রিকস থেকে দেওয়া এই বিবৃতিকে তেহরানের কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসরায়েল টানা ১২ দিন ধরে ইরানে হামলা চালায়। এ হামলার মধ্যেই ইরানের নাতাঞ্জ, ফর্দো ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র।

ইসরায়েল ইরানের সামরিক স্থাপনা, পারমাণবিক, বেসামরিক স্থাপনায় হামলা করে। এই হামলায় ইরানের অন্তত ৯৩৫ জন মানুষ মারা যান। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৩২ জন মানুষ।

তেহরান জবাবে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এতে ইসরায়েলের অন্তত ২৯ জন মানুষ নিহত হন। ৩ হাজার ৪০০ জন আহত হন বলে জানিয়েছে জেরুজালেমের ‍হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রমন ত র য ক তর ষ ট র ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্যাসিস্টের দোসররা চান না মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হোক : ডা. রফিকুল

বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও অধিদপ্তরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা বহাল তবিয়তে রয়েগেছে। তারা চান না দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হোক। 

এইসব দোসরদের অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। একই সাথে স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের সবচেয়ে বড় বাঁধা দুর্নীতি এই দুর্নীতিরোধ করে স্বাস্থ্য খাতকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সবার সমন্বিত প্রয়াস দরকার।

সোমবার (৭ জুলাই) ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) নারায়ণগঞ্জ শাখার আয়োজনে “ডেঙ্গু রোগের সাম্প্রতিক চিকিৎসা ও সচেতনতা” শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. পঙ্কজ নাহা। প্যানেল অফ এক্সপার্ট হিসেবে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ড্যাবের সদস্য সচিব ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ।

ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, “আপনাদের মনে আছে, ২০২৩ সালে যখন দেশে ডেঙ্গুর পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়, তখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী মেয়র তাপস বিদেশ সফরে ছিলেন ১৭ দিন। দৃশ্যত সিটি করপোরেশন বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো সমন্বিত কার্যক্রম ছিল না।”

চলতি বছরে ডেঙ্গু সংক্রমনের হার বিগত দুই বছরের তুলনায় কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, "চলতি বছর ২০২৫ সালের ৬ জুলাই পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১২,২৭১ জন। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩১৭ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ইতোমধ্যে পৌঁছেছে ৪৫ জনে। এই হার যেনো বিগত বছরের মত না হয় সেই ব্যাপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।"

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “বারবার বলেছি—পুরোনো, নিষ্ক্রিয় ফগিং মেশিন দিয়ে লোক দেখানো কর্মসূচি বন্ধ করুন। এখন সময় এসেছে মশক নিধনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার। জেনেটিক কৌশল, ‘উলবাকিয়া’ পদ্ধতির মতো বৈজ্ঞানিক পন্থাগুলোর বাস্তবায়ন জরুরি।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রফেসর মামুন মাহমুদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাসার, নারায়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. এএফএম মুশিউর রহমান।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সোসাইটি অফ মেডিসিনের সদস্য সচিব ডা. জাকারিয়া আজিজ, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মাহমুদুর রহমান নোমান, ডা. জাহিদুল কবির, প্লাস্টিক সার্জন ডা. শরীফ, ডা. মিতালী, ডা. সাইফুল আলম বাদশাসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসকবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা ডেঙ্গু মোকাবিলায় রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং বলেন, এ ধরনের স্বাস্থ্য সংকট প্রতিরোধে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ