এআই এজেন্ট ব্যবহারে গোপন তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি
Published: 7th, July 2025 GMT
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন প্রতিষ্ঠানের কাজের গতি বাড়িয়েছে, তেমনি অজান্তেই তৈরি করছে নতুন এক নিরাপত্তার ঝুঁকি। আর তাই এআই এজেন্ট ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত এআই এজেন্ট অনেক সময় অসাবধানতাবশত ব্যবহারকারীর গোপন তথ্য প্রকাশ করে ফেলছে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই এজেন্টগুলো শেয়ারপয়েন্ট, গুগল ড্রাইভ, অ্যামাজন এসথ্রি বা নিজস্ব তথ্যভান্ডারের সঙ্গে যুক্ত করা হলে অনেক সময় ব্যবহারকারীর গোপন তথ্য ইন্টারনেটে প্রকাশ করে ফেলছে। এমনকি গুগল ড্রাইভসহ বিভিন্ন উৎস কাজে লাগিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় ব্যবহারকারীর সংবেদনশীল তথ্য ভুল ব্যক্তিদের কাছেও পাঠিয়ে দেয়।
আরও পড়ুনপ্রতিষ্ঠানে কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করছে ‘এআই এজেন্ট’০৮ জানুয়ারি ২০২৫অধিকাংশ সময় এসব তথ্য ফাঁস ঘটে ভুল কনফিগারেশন, অপ্রয়োজনীয় অনুমতি বা লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের (এলএলএম) আউটপুটের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতার কারণে। এআই এজেন্ট যদি অভ্যন্তরীণ বেতনকাঠামো, অনানুষ্ঠানিক পণ্যের নকশা কিংবা বাজারে না আসা নীতিমালা অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রকাশ করে ফেলে, তবে এর প্রভাব হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি ও ক্ষতিকর।
প্রসঙ্গত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির চ্যাটবটের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দ্রুত জানা যায়। তবে একই চ্যাটবট কাজে লাগিয়ে চাইলেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য জানা সম্ভব হয় না। এ সমস্যা সমাধানে ব্যবহারকারীদের দৈনন্দিন কাজের ধরন ও প্রয়োজন অনুযায়ী নিজস্ব এআই এজেন্ট তৈরির সুযোগ দিয়ে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এসব এআই এজেন্টের মাধ্যমে ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ করার পাশাপাশি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্রেতা বা গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় তথ্য জানানো যায়।
সূত্র: দ্য হ্যাকার নিউজ
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
একাই মাসে শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তৈয়বুর
সুনামগঞ্জে জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে যাঁদের নাম প্রথমেই মনে আসে, তাঁদের একজন তৈয়বুর রহমান (২৬)। তিনি নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, রক্ত সংগ্রহ করে দেন এবং মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করেন। রক্তের টানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর আনন্দ।
একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রক্তদানের এই মানবিক কাজকে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে একাই মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করতেন। এখন তিনি ব্লাড লিংক সুনামগঞ্জ নামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কাজের পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। মাসে একাই শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আড়াই হাজারের বেশি রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে প্রায় এক হাজার রক্তদাতার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের তালিকা। সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও সংগঠকেরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।
তৈয়বুর রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি ইসলামী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবহন বা দৌড়ঝাঁপ—সবকিছুর ব্যয়ই মেটান নিজের স্বল্প বেতন থেকে।
রক্তদানের শুরুর স্মৃতি বলতে গিয়ে তৈয়বুর রহমান জানান, ২০২০ সালে তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এক সহকর্মীর অনুরোধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য রক্ত দিতে ছুটে যান চাষাড়া এলাকায়। কিন্তু ওজন কম থাকায় রক্ত দিতে পারেননি। পরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য আবার হাসপাতালে যান এবং এবার রক্ত দিতে সক্ষম হন। প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় ছিল তাঁর। পরে এটা কেটে যায়।
সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে থাকেন বলে জানান তৈয়বুর রহমান। নিজের এলাকায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার আয়োজন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন। অধিকাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য। ঈদের দিনও রক্ত দিয়েছেন তিনি। জেলা সদর হাসপাতাল ও শহরের সব বেসরকারি ক্লিনিকেই তাঁর নম্বর আছে। কোনো রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো রোগীর জন্য উপযুক্ত রক্তদাতা খুঁজে বের করা।
তৈয়বুর রহমান বলেন, রক্তদানের পর কিছু পরিবার এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, খবর নেয়। আবার কেউ কেউ রক্ত সংগ্রহে একটু দেরি হলে মনঃক্ষুণ্ন হন। কেউ রক্ত পেয়ে ধন্যবাদ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। তবু মন খারাপ করেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার এক প্রসূতি বোনকে রক্ত দিয়েছিলাম। এখনো ওই পরিবার যোগাযোগ রাখে। সময়-অসময় খোঁজ নেয়। এটা ভালো লাগে, এটা অন্য রকম রক্তের সম্পর্ক। এই কাজ করে আনন্দ পাই, তৃপ্তি পাই। যত দিন পারি, এই কাজ করে যাব।’
এখন পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন তৈয়বুর রহমান