বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালতের সম্প্রসারণ নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছে তাঁর দল। তিনি বলেন, বিচারব্যবস্থার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে জামায়াতে ইসলামী এ প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছে।

আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার বিরতিতে এ কথা বলেন হামিদুর রহমান আযাদ।

আজকের বৈঠকের অন্য দুই আলোচ্যসূচিতে রয়েছে জরুরি অবস্থা ঘোষণা ও নারী প্রতিনিধিত্ব। মধ্যাহ্নবিরতি শেষে বাকি দুটি বিষয়ে আলোচনা পুনরায় চলবে।

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, তাঁর দল জামায়াতে ইসলামী মনে করে, বর্তমান ঐকমত্য কমিশন কিংবা অন্তর্বর্তী সরকারের সৃষ্টি জনগণের স্বার্থে। তাই জনস্বার্থে আদালতকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চান তাঁরা। তিনি বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে অনেক মানুষ আর্থিকভাবে অসচ্ছল। জেলা শহরে গিয়ে আইনজীবী ঠিক করে বিচার পাওয়া তাঁদের জন্য কঠিন হয়। সেই সঙ্গে থাকা–খাওয়ার খরচ। তাই মানুষের ভোগান্তি কমাতে আদালত সম্প্রসারণের পক্ষে জামায়াতে ইসলামী।

দেশের ২৩টি জেলায় বর্তমানে ৪০টি চৌকি আদালত রয়েছে। এসব চৌকিকে স্থায়ী আদালতে রূপ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে জামায়াতে ইসলামী। হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, এসব চৌকির অবকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে।

উপজেলা স্তরে আদালত সম্প্রসারণ করা হলে দুর্নীতি বাড়বে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, দুর্নীতি অনেক জায়গাতেই হয়। জামায়াতে ইসলামী মনে করে, জনসচেতনতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধির মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। জনগণকে সুশাসন ও সুবিচার দিতে হলে বিচারব্যবস্থাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, সিপিবি, এবি পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজকের আলোচনায় আরও উপস্থিত আছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান ও মো.

আইয়ুব মিয়া।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব জনগণ র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

অনেক কিছু বাদ দিয়েই এগোচ্ছি: আলী রীয়াজ

রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য ও অনুভূতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে সংশোধন প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তবে বিতর্ক এড়াতে সতর্ক থেকে অনেক কিছুই বাদ দিয়ে কমিশন এগোচ্ছে বলেও তিনি জানান।  

সোমবার (৭ জুলাই) ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১০ম দিনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, “কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া নয়, বরং দলগুলোর মতামত বিবেচনায় রেখে সুপারিশ করা হচ্ছে।” 

এ সময় কমিশনের সদস্য ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

আলী রীয়াজ বলেন, “জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল নিয়ে ভিন্ন দলগুলোর ভিন্ন অবস্থান রয়েছে। তাই একাধিক প্রস্তাব রাখা হয়েছে যাতে সর্বোত্তম সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়।” 

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে আমরা সতর্ক এবং অনেক কিছু বাদ দিয়েই এগোচ্ছি। আলোচনার গতি বজায় রাখতে সবাইকে আন্তরিক সহযোগিতা করতে হবে।” 

আজকের আলোচনায় নির্বাচনি এলাকা নির্ধারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে বলেও তিনি জানান। এছাড়া, উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালতের সম্প্রসারণ, জরুরি অবস্থা ঘোষণা এবং নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়েও মতবিনিময় হবে।

এদিন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি আলোচনায় অংশ নেন।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জরুরি অবস্থার রাজনৈতিক ব্যবহার নিয়ে সবাই একমত: আলী রীয়াজ
  • জনগণের স্বার্থে ৩৫ বছর আগের অবস্থান পরিবর্তন করেছে বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • উপজেলায় অধস্তন আদালত সম্প্রসারণে নীতিগতভাবে একমত রাজনৈতিক দলগুলো
  • কমিশন কিছুই চাপিয়ে দিচ্ছে না: আলী রীয়াজ
  • অনেক কিছু বাদ দিয়েই এগোচ্ছি: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি সংস্কারবিরোধী, এটা একটি মহলের পরিকল্পিত অপপ্রচার: ফখরুল
  • রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে কোন কোন ক্ষেত্রে ঐকমত্য-মতানৈক্য, জানাল বিএনপি
  • ‘রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলে স্বৈরাচারের পুনঃপ্রবর্তন ঠেকানো যাবে’
  • ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে কি শতভাগ একমত হতে হবে