জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘যদি হাসিনার পতন না হতো, তখন এই ডিসি-এসপিরাই গণভবনে প্রমোশনের জন্য লাইন ধরত। বাংলাদেশে যদি কেউ স্বৈরাচারের পক্ষে অবস্থান নেয়, এই বাংলাদেশে তার আর জায়গা হবে না।’ গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে বড় মসজিদের সামনে এক পথসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এর আগে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নগরের রেলগেট এলাকায় ‘জুলাই পদযাত্রা’ শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টি। পরে পদযাত্রাটি নিউমার্কেট, অলকার মোড়, গণকপাড়া, সাহেববাজার, আলুপট্টি হয়ে সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে বড় মসজিদের সামনে পথসভায় মিলিত হয়।

দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঞ্চালনায় পথসভায় আরও বক্তব্য দেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক ইমরান ইমন, রাজশাহী মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী মোবাশ্বের আলী। পথসভা শেষে নগরের গণকপাড়া এলাকায় দলটির মহানগরের কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়।

হাসনাত আবদুল্লাহ প্রথমে জুলাই অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সাংবাদিকদের ওপরও নজর রাখছি। এই সাংবাদিকেরাই জুলাই অভ্যুত্থানে আমাদেরকে সন্ত্রাসী আখ্যা দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল। প্রিয় রাজশাহীবাসী, বাংলার আকাশে দুর্যোগের ঘনঘটা দেখা যাচ্ছে। আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে।’

বক্তব্যের একপর্যায়ে হাসনাত বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়া নিয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদেরকে বলব, বসুন্ধরার সাংবাদিকেরা, খুনি হাসিনার পক্ষে এই বসুন্ধরার মিডিয়া কী বৈধতা উৎপাদন করেছে, আমরা ভুলে যাই নাই। এই বসুন্ধরা গ্রুপের সাংবাদিকেরা আবারও নগ্ন হয়ে অপরাধের বৈধতা উৎপাদনের লক্ষ্যে আবার নেমে পড়েছে। আবার আরেকটি এক-এগারো ঘটাতে তারা ষড়যন্ত্র করছে।’

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশেও হাসনাত আবদুল্লাহ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, ‘ডিসি, এসপিদের বলছি, আপনারা যে ভালো ব্যবহার করছেন। আমরা জানি, আপনারা চিপায় পড়ে আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন। যদি হাসিনার পতন না হতো, তখন এই ডিসি–এসপিরাই গণভবনে প্রমোশনের জন্য লাইন ধরত। যাঁরা প্রশাসনে আছেন, আপনারা ক্ষমতাপন্থী হবেন। আপনারা ভুল করছেন। আপনারা ভুলে যাবেন না, গত ১৬ বছরের ডিসি-এসপিদের কী পরিণতি হয়েছে। আপনারা ভুলে যাবেন না, এই দিন দিন না আরও দিন আছে। আমরা আপনাদের বলব না, আপনারা এনসিপিপন্থী হোন। আওয়ামী লীগপন্থী, রাজনীতিপন্থী হওয়ার কী পরিণতি.

..আপনারা দেখেছেন, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। ক্যান্টনমেন্টে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। এই বাংলাদেশে যদি কেউ স্বৈরাচারের পক্ষে অবস্থান নেয়, এই বাংলাদেশে তার আর জায়গা হবে না।’

রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সমালোচনা করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘রাজশাহীর এজেন্সিতে যাঁরা রয়েছেন, বাংলাদেশে যাঁরা গোয়েন্দা সংস্থায় রয়েছেন, তাঁরা জানেন না, বিদেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কী ষড়যন্ত্র হয়। তাঁরা জানেন না, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ঝুঁকিতে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়। তাঁরা যেটা করেন, তাঁরা ক্যান্টনমেন্টে বসে বসে রাজনৈতিক দল খোলেন। তাঁরা এই দলের বিরুদ্ধে আরেকটা দলকে লাগিয়ে দেন। তাঁরা এক রাজার বিরুদ্ধে আরেক রাজাকে লাগিয়ে দেন। আপনারা বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা। আমরা আপনাদেরও দেখছি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য নগর র আপন র স গঠক

এছাড়াও পড়ুন:

বিয়ানীবাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ফয়সল আহমদ চৌধুরী

পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে আঁতাত করে একটি গোষ্ঠী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপির সদস্য ফয়সল আহমদ চৌধুরী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। নির্বাচনী উৎসবে মেতে উঠতে সবাই প্রস্তুত।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের খাড়াবড়া বাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। দুবাগ ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় ফয়সল আহমদ চৌধুরী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায়। তাদের লক্ষ্য স্বৈরাচারকে ফিরিয়ে এনে এ দেশকে আবারও ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনতা সে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দেবে না। বাংলার মাটিতে আগামী ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে জাতীয় নির্বাচন হবেই, ইনশা আল্লাহ।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপি। কিন্তু বিস্ময়করভাবে বিএনপির সুপারিশ, মতামত, নোট অব ডিসেন্ট এসবকে পাশ কাটিয়ে গেছে ঐকমত্য কমিশন। বিএনপির মতামত, প্রস্তাবকে উপেক্ষা করেছে তারা। এই কমিশন ঐকমত্যের বদলে অনৈক্য কমিশন হয়ে গেছে। ২৫টি রাজনৈতিক দল যে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল, সেই সনদের সঙ্গে কমিশনের সুপারিশের মিল নেই। এগুলো দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক নিয়াজ উদ্দিন। জেলা যুবদলের সদস্য এবি কালাম ও উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য শহিদুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এম এ মান্নান, বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
  • অদৃশ্য শক্তি ও ফ্যাসিষ্টরা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত খোরশেদ
  • নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির
  • বিদেশ যেতে কেন বাধা দেওয়া হল, প্রশ্ন মিলনের
  • একটি মহল নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে: ডা. জাহিদ
  • কাবিনে যেহেতু স্বাক্ষর করেছেন, সংসারও করতে হবে
  • একটি ষড়যন্ত্রমূলক দল ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে পুনর্বাসনের অপপ্রচেষ্টায় লিপ্ত : সজল
  • বিয়ানীবাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ফয়সল আহমদ চৌধুরী