জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেছেন, ‘এনবিআরের কর্মকর্তাদের ভয়ের কিছু নেই। যারা অনেক বড় আকারে সীমা লঙ্ঘন করেছে, সেটি ভিন্নভাবে দেখা হবে। সাধারণভাবে কারও কোনো ভয়ের কারণ নেই।’

আজ সোমবার ঢাকা কাস্টমস হাউস পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি এনবিআরের আন্দোলন–পরবর্তী সময়ে অবসর, বরখাস্ত, বদলি ইত্যাদি প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘অভয় দেওয়ার জন্য এখানে (ঢাকা কাস্টমস হাউস) এসেছি। প্রত্যেকে যদি দায়িত্বশীল আচরণ করে, নিজের কাজ ঠিকভাবে সম্পন্ন করে, তাহলে তাদের ভয়ের কোনো কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। যারা অনেক বড় আকারে সীমা লঙ্ঘন করেছে, সেটি ভিন্নভাবে দেখা হবে।’

আন্দোলন প্রত্যাহারের পর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অবসর, বদলি, বরখাস্ত প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এটা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। আন্দোলন ওই কয়েকজনে করেনি, অনেকে করেছে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

গত সপ্তাহে সব মিলিয়ে এনবিআরের দুজন সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। তাদের অধিকাংশই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। আন্দোলন প্রত্যাহারের পরের এই পর্যন্ত তিনজন সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। কাজ বন্ধ রাখার দায়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

বিদায়ী অর্থবছরে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। চূড়ান্ত হিসেবে এর পরিমাণ কিছুটা বাড়বে বলে জানান তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

বিমা কোম্পানিরও আছে পেনশন, কী কী আছে

দেশে সর্বজনীন পেনশন চালুর আগে থেকেই জীবনবিমা কোম্পানিগুলো অবসর-পরবর্তী আর্থিক নিরাপত্তার পরিকল্পনা দিয়ে আসছে। সরকারি চাকরিজীবীদের বাইরে থাকা বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য এই বিমাভিত্তিক পেনশন ছিল একমাত্র ভরসা। তবে বিমা সম্পর্কে মানুষের অনীহা ও অজ্ঞতার কারণে এই সুবিধা তেমন পরিচিতি পায়নি।

আজীবন কঠোর পরিশ্রমের পর অবসরজীবনে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন আর্থিক নিরাপত্তা। এই বিমা পরিকল্পনা সেই নিশ্চয়তা দেয়—বিশেষ করে তাঁদের জন্য, যাঁরা দীর্ঘ সময় প্রিমিয়াম দিতে চান না, কিন্তু অবসরের পর নিয়মিত পেনশন সুবিধা পেতে চান।

এই পরিকল্পনার আওতায় নির্দিষ্ট সময় প্রিমিয়াম দিলেই গ্রাহক অবসর-পরবর্তী সময়ে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের পেনশন পাবেন। যদি পলিসি চলাকালে দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার কারণে গ্রাহক স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন, তাহলে বাকি মেয়াদের প্রিমিয়াম দিতে হবে না। অর্থাৎ পলিসিটি চালু থাকবে।

এ ছাড়া পেনশন শুরুর আগে মৃত্যু হলে মনোনীত (নমিনি) ব্যক্তি সম্পূর্ণ বিমার অঙ্ক পাবেন। এ ছাড়া পেনশন গ্রহণকালীন মৃত্যুর ক্ষেত্রে মনোনীত ব্যক্তি বাকি মেয়াদের পেনশন পাবেন। কেউ যদি পেনশনের মেয়াদ অতিক্রম করেও জীবিত থাকেন, মৃত্যুর আগপর্যন্ত একই হারে পেনশন পাবেন তিনি।

মেটলাইফ, ডেলটা লাইফসহ দেশের বিভিন্ন বিমা কোম্পানির এই পেনশন পরিকল্পনা আছে। রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি জীবন বীমা করপোরেশনের (জেবিসি) পেনশন বিমা পলিসির নাম ছিল ‘ব্যক্তিগত পেনশন বিমা পলিসি’। কিন্তু সর্বজনীন পেনশন চালু হওয়ার পর এই পলিসি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগপর্যন্ত এটিই ছিল জীবন বীমা করপোরেশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় পলিসি।

মূল বৈশিষ্ট্য

১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে এই পেনশন বিমা পলিসি নেওয়া যায়। কিন্তু যত বেশি বয়সে এই বিমা নেওয়া হবে, প্রিমিয়াম ততই বেড়ে যাবে। সে জন্য গ্রাহকদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে, বয়স কম থাকতেই পেনশন বিমা নেওয়া।

গ্রাহককে মেয়াদ পর্যন্ত নিয়মিত প্রিমিয়াম দিতে হবে। এর বিনিময়ে অবসরজীবনের প্রায় পুরোটা সময় এই বিমার ছায়ায় থাকা যায়। প্রিমিয়াম দিতে হয় নির্ধারিত সময়ে—১০ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত, নিজের সামর্থ্য ও পরিকল্পনা অনুযায়ী। পেনশন দেওয়া হয় ন্যূনতম ১০ বছর। এরপর সর্বোচ্চ ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত গ্রাহক পেনশন পাবেন।

কত টাকা পেনশন পাওয়া যায়

এই বিমা নেওয়ার আগে গ্রাহকদের প্রথমেই ঠিক করতে হয়, তিনি ঠিক কত টাকার পেনশন নিতে চান। এটা নির্ভর করবে যিনি বিমা পলিসিটি নিতে চাইছেন, তার প্রয়োজনের ওপর। যেমন কেউ যদি মাসে ৫ হাজার টাকা প্রিমিয়াম চান, তাহলে তার ওপর ভিত্তি করে প্রিমিয়াম গণনা করা হবে।

প্রিমিয়াম পদ্ধতি

প্রিমিয়াম দেওয়ার পদ্ধতিও বেশ নমনীয়—চাইলে মাসিক, ত্রৈমাসিক, ষাণ্মাসিক বা বার্ষিক—যেভাবে সহজ মনে হয়, সেভাবেই প্রিমিয়াম পরিশোধ করা যায়। সর্বনিম্ন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার পলিসি নেওয়া যায়।

মৃত্যুর ক্ষেত্রে কী হয়

পেনশন বিমা পলিসির টাকা দেওয়া শুরুর ১০ বছরের মধ্যে যেকোনো সময় বিমাগ্রহীতা মারা গেলে ১০ বছরের বাকি সময়ের জন্য পেনশনভোগীর নমিনি (মনোনীত) পেনশন পাবেন। পেনশন দেওয়া শুরুর নির্ধারিত তারিখের আগে বিমাগ্রহীতার স্বাভাবিক মৃত্যু হলে নমিনি চাইলে এককালীন অর্থও নিতে পারবেন।

সহযোগী বিমা

এই বিমায় অন্যান্য বিমার মতো দুর্ঘটনা বিমার সুবিধা থাকে। এই বিমা সুবিধা ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত কার্যকর থাকে, অথবা যত দিন প্রিমিয়াম দেওয়া হয়, তার মধ্যে যেটি আগে শেষ হবে, তত দিন এটি কার্যকর থাকে। সেই সঙ্গে এই বিমা পলিসি থেকে ঋণ নেওয়া যায়।

বিমা করার আগে মনে রাখা দরকার, বিমা সাধারণ সঞ্চয় নয়, বরং বিমা হলো একধরনের নিরাপত্তা। মানুষকে নির্দিষ্ট কিছু অনিশ্চয়তার বিপরীতে নিশ্চয়তা দেয় বিমা। সেই সঙ্গে আছে সঞ্চয়। অর্থাৎ এটি কার্যত নিরাপত্তা ও সঞ্চয়ের মিশ্রণ। সেই সঙ্গে বাড়তি সুবিধা হলো, বিমা আয়করমুক্ত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিমা কোম্পানিরও আছে পেনশন, কী কী আছে
  • মাউশির মহাপরিচালককে ওএসডি