বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশের ছয়টি ব্যাংকের সম্পদের মান পর্যালোচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একীভূত করার আগে সব ব্যাংকের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা করা হবে। কোনো ব্যাংক যদি একীভূত না হওয়ার ব্যাপারে যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারে, তাহলে তাদের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে। তবে মনে হচ্ছে, এসব ব্যাংক সেটি করতে পারবে না।

আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর এ মন্তব্য করেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি কাঠামো পুনর্গঠন নিয়ে প্রথমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও পরে বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে সভা করেন। এতে জানানো হয়, আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি (আরবিএস) ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে পুরোনো তদারকি কাঠামো ভেঙে ১২টি বিভাগে ভাগ করা হবে। যার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে সার্বক্ষণিক তদারকির মধ্যে রাখা হবে। এর মাধ্যমে সব ধরনের আর্থিক তদারকি করা হবে।

এই ব্যবস্থার মাধ্যমে রাজনৈতিক ঝুঁকি রোধ করা সম্ভব হবে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এই তদারকি ব্যবস্থার মাধ্যমে রাজনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলা করা যাবে না। রাজনৈতিক ঝুঁকি কমাতে হলে রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। এ জন্য কাজ চলছে। আমরা সেই প্রস্তাব নিয়ে সরকারের কাছে যাব।’

আহসান এইচ মনসুর বলেন, রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন না হলে তদারকি ব্যবস্থাও ব্যাংকের ঝুঁকি কমাতে পারবে না। যে রাজনৈতিক দল ব্যাংক খাতকে দুর্বল করে গেছে, তাদের পরিণতি সবাই দেখেছেন। বিশৃঙ্খলা তৈরি করে সাময়িক উপকার মিললেও রাজনৈতিক দলের জন্য শেষ বিচারে তা ভালো হয় না। এ জন্য রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত ব্যাংক খাত গড়ে তোলা হচ্ছে।

ব্যাংকের ৫০ শতাংশ পরিচালক স্বতন্ত্র হতে হবে জানিয়ে গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংকের স্বতন্ত্র ও শেয়ারধারী উভয় পরিচালককে যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিতে হবে আমাদের তৈরি করা প্যানেল থেকে। কারা স্বতন্ত্র পরিচালক হতে পারেন, আমরা তার একটা তালিকা করে দেব।’ পর্ষদ পরিবর্তন করা ব্যাংকগুলো সম্পর্কে গভর্নর বলেন, সব ব্যাংক তদারকির মধ্যে আছে। ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও পরিবর্তন করে দেওয়া হবে।

ব্যাংক আমানতকারীদের উদ্দেশে গভর্নর বলেন, সব আমানতকারীর অর্থ সুরক্ষিত আছে। ছোট আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে তারল্য–সহায়তা দেওয়া হয়েছে। যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে পারছে না, তাদের কেন বন্ধ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান টিকে থাকতে পারবে না বলেও গভর্নর জানান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স বতন ত র র জন ত ক ব যবস থ র বল ন এক ভ ত

এছাড়াও পড়ুন:

গাবতলীতে ট্রাফিক সার্জেন্টকে ‘দায়িত্ব পালনে বাধা ও লাঞ্ছিত করার’ দায়ে এক দম্পতিকে জেল-জরিমানা

রাজধানীর গাবতলী মাজার রোডে পুলিশ সার্জেন্টকে দায়িত্ব পালনে বাধা ও লাঞ্ছিত করার দায়ে একটি প্রাইভেট কারের মালিক মো. শামীম মোল্লাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে মিরপুর ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সার্জেন্ট আবু সুফিয়ান গাবতলী মাজার রোডে সিগন্যাল অমান্য করায় একটি প্রাইভেট কারকে থামার সংকেত দেন। এ সময় তিনি গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চাইলে প্রাইভেট কারটির মালিক ও তাঁর স্ত্রী আয়েশা খাতুন গাড়ি থেকে বের হয়ে সার্জেন্টকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেন এবং তাঁকে লাঞ্ছিত করেন। এ সময় সার্জেন্ট আবু সুফিয়ান পথচারীদের সহযোগিতায় তাঁদের আটক করে দারুসসালাম থানায় হস্তান্তর করেন।

আটক শামীম মোল্লা ও তাঁর স্ত্রী আয়েশা খাতুনকে স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপস্থাপন করা হলে আদালত শামীম মোল্লাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী আয়েশা খাতুনকেও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ