‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নেই, এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন মেনে নিতে পারি না: গোলাম পরওয়ার
Published: 7th, July 2025 GMT
জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘সরকারের ভূমিকায় এখনো জনগণ সংশয়ের মধ্যে আছে। এ জন্যই বলছি, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন আমরা মেনে নিতে পারি না।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। এখানেই ১৯ জুলাই জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানো নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা কখনো কোনো বক্তব্য দেননি। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন পেছানো, না করা, এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য কখনো রাখিনি। আমাদের আমির সাহেব বলেছেন, নির্বাচন আমরা চাই। কিন্তু সেই নির্বাচন যেন যেনতেন নির্বাচন না হয়। এই যেনতেনর অর্থ হলো—কোনো দিকে প্রশাসন ঝুঁকে পড়বে, নিরপেক্ষ হবে না, আবার ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং হবে, আবার প্রশাসন জবরদস্তি করবে, কেন্দ্র দখল হবে। এ–জাতীয় নির্বাচনকে উদ্দেশ করে আমির বলেছেন, নির্বাচন আমরা হতে দেব। কিন্তু যেনতেন নির্বাচন হতে দেব না। আর যাঁরা করবেন, আমরা তাঁদেরও মেনে নেব না।’
আসন্ন জাতীয় সমাবেশে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত, নিরপেক্ষ নির্বাচন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, (মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের) বিচার, সংস্কারসহ সাত দফা দাবিতে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। জুলাই সনদ ঘোষণা ও বাস্তবায়নের দাবি এই জনসভা থেকে তোলা হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবিসহ বেশ কিছু দাবিও উত্থাপন করা হবে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, মোয়াযযম হোসেন হেলাল, প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ, মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি রেজাউল করিম, ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিন হওয়ার সুযোগ নেই: গোলাম পরওয়ার
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিন হওয়ার সুযোগ নেই। যারা সত্যিকার অর্থে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায় না, তারাই জুলাই সনদ নিয়ে টালবাহানা করছে। যারা ভোট চুরি করে ক্ষমতায় বসে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চায়, তারাই গণভোট সংসদ নির্বাচনের দিন চায়। কারণ, তারা তাদের সন্ত্রাসী, লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে ব্যালট ছিনতাই করে গণভোটে “না” প্রস্তাবে সিল মারার চক্রান্ত করছে। তারা চায় না, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া হোক।’
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে খুলনার চুকনগর বাসস্ট্যান্ডে এক পথসভায় গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। এর আগে চুকনগর বাজারে জামায়াতের কার্যালয় চত্বর থেকে শুরু হয়ে মিছিলসহকারে চুকনগর ব্রিজ রোড, যতিন–কাশেম রোড, পোস্ট অফিস রোড, ইউনিয়ন পরিষদ রোড, খুলনা-যশোর-সাতক্ষীরা রোড প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি।
গোলাম পরওয়ার বলেন, পিআর পদ্ধতি নিয়ে যেসব রাজনৈতিক দল কঠোর অবস্থানে রয়েছে, তাদের একটু নমনীয় হয়ে বা ছাড় দিয়ে ঐকমত্যে আসতে হবে। জাতীয় সংসদে যে বিষয়ে আলোচনা করা যায়, সে বিষয় নিয়ে নির্বাচনের আগেই আলোচনা করা সম্ভব। এ জন্য নির্বাচনের আগে যেসব রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করছে, আলোচনা ও গোলটেবিল বৈঠকের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে ঐকমত্য হয়ে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, বাংলাদেশে আলোচনার মধ্য দিয়ে বহু অমীমাংসিত বিষয়ে জাতীয় নেতারা ঐকমত্য হওয়ার অনেক নজির আছে। বর্তমানে জাতীয় নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে জন–আকাঙ্ক্ষা ও জনদাবিতে পরিণত হওয়া পিআর পদ্ধতিতেই জাতীয় নির্বাচন হলে একদিকে যেমন মনোনয়ন–বাণিজ্য থাকবে না, অন্যদিকে ভোটকেন্দ্র দখল ও পেশিশক্তির ব্যবহার কমে যাবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নকারী কমিশন ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য রাজনৈতিক বিষয়গুলোসহ অন্যান্য বিষয়ে কিছু ছাড়ের মধ্য দিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে জামায়াত সংস্কারে ছাড় দিয়েছে দাবি করে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্বপ্নপূরণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে নিজেরা নিজেদের পায়ে কুড়াল মারার শামিল হবে।’ জনগণকে আবার ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার দিকে ঠেলে না দিয়ে ৫ দফা দাবি মেনে নিতে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
পথসভায় জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদের সদস্য আবু ইউসুফ মোল্লা, উপজেলা আমির মোক্তার হোসেন, নায়েবে আমির হাবিবুর রহমান ও গাজী সাইফুল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আবদুর রশিদ, সহকারী সেক্রেটারি ফরহাদ আল মাহমুদ, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দী, সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রসাদ মণ্ডল, ডুমুরিয়া উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবু তাহের প্রমুখ বক্তব্য দেন।