‘লাইফ ইন আ মেট্রো’ ছবির ১৮ বছর পার হয়ে গেছে। অনুরাগ বসুর এ ছবি আজও দর্শকের হৃদয়জুড়ে আছে। গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে এই ছবির সিকুয়েল ‘মেট্রো...ইন দিনোঁ’। প্রেম, বিরহ, সম্পর্কের টানাপোড়েন, পরকীয়া, উচ্চাকাঙ্ক্ষা—এ সবকিছু নিয়ে অনুরাগ বসুর এই মিউজিক্যাল প্রেমের ছবি। এবারের ‘মেট্রো’–ও ধীরে ধীরে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিচ্ছে। বক্স অফিসের ট্র্যাকে ‘মেট্রো’–র গতি ক্রমে বাড়ছে।
‘মেট্রো.
‘মেট্রো...ইন দিনোঁ’ বক্স অফিসের খাতা খুলেছিল মাত্র ৩ দশমিক ৫ কোটি রুপি আয় করে। তবে মুক্তির দ্বিতীয় দিন গত শনিবার ‘মেট্রো’–র গতি কিছুটা বেড়েছে। ছবিটি এদিন ৬ কোটি রুপি মতো ব্যবসা করেছে। গতকাল রোববার এই গতি আরও বেড়ে গেছে। ‘মেট্রো...ইন দিনোঁ’ এদিন নিজেদের ঝুলিতে পুরেছে ৭ দশমিক ৫ কোটি রুপি। গত তিন দিনে রোমান্টিক মিউজিক্যাল এই ছবি ভারতীয় বক্স অফিস থেকে ১৬ দশমিক ৭৫ কোটি রুপি আয় করেছে।
‘মেট্রো...ইন দিনো’ সিনেমায় আদিত্য রায় কাপুর ও সারা আলী খান। ছবি: এক্স থেকেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গণমাধ্যমকে হুমকির প্রতিবাদ ও কারাবন্দী সাংবাদিকদের জামিন দাবিতে অর্ধশতাধিক সাংবাদিকের বিবৃতি
কারাবন্দী সাংবাদিকদের জামিন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) কার্যালয় খুলে দেওয়ার দাবিতে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত অর্ধশতাধিক সাংবাদিক। সোমবার ৫১ জন সাংবাদিকের সাক্ষর করা এ বিবৃতিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে হুমকি, সাংবাদিকদের নামে হত্যা মামলা, চাকরিচ্যুতি, সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা, সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন ও হয়রানির প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন বেঙ্গল নিউজ টোয়েন্টিফোরের সম্পাদক তৈমুর ফারুক তুষার।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশ এখন মব সন্ত্রাসের কাছে জিম্মি। গণমাধ্যমও এই জিম্মি দশার বাইরে নয়। সাংবাদিকদের নামে হত্যা মামলা, চাকরিচ্যুতি, সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলা, সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের মতো ঘটনাগুলোর কারণে সাংবাদিক সমাজ এক ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। দেশের একাধিক শীর্ষ সংবাদপত্রের কার্যালয়ের সামনে মব সন্ত্রাসীরা গরু জবাই করে জিয়াফতের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে চিহ্নিত মব সন্ত্রাসীরা এসব ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। ফলে এটি ধারণা করা অমূলক নয় যে, ক্ষমতাধর কোনো মহল এসবে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে।’
এতে বলা হয়, ‘দেশি বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং অধিকার কর্মীদের দাবি অনুসারে, গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গত ১১ মাসে সারা দেশে ঢালাও হত্যা মামলাসহ নানা হয়রানিমূলক মামলায় আসামি হয়েছে অন্তত ৪১২ জন সাংবাদিক। গ্রেপ্তার করা হয় ৩৯ জন সাংবাদিককে। ১৬৮ সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। জাতীয় প্রেসক্লাবসহ সারা দেশের প্রেসক্লাবগুলো থেকে ১০১ জন সাংবাদিকের সদস্যপদ স্থগিত, বাতিল কিংবা বহিষ্কার করা হয়েছে। বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েছেন তিন শতাধিক সাংবাদিক। শতাধিক সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। গত ১১ মাসে সহস্রাধিক সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হয়েছেন। মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো দখল করা হয়েছে। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) কার্যালয় ১১ মাস ধরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘দেশের প্রত্যেক নাগরিকের আইনি প্রতিকার বা জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কারাগারে বন্দি সাংবাদিকরা সে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিনাবিচারে মাসের পর মাস কারাবন্দি আছেন সাংবাদিকরা। এগুলো মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা আশা করেছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকার দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে এই মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে আনবে, গণমাধ্যম কর্মীদের নানা ট্যাগ দিয়ে জুলুম, হয়রানির শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করবে, চাকরির সুরক্ষা দেবে। যাতে করে সাংবাদিকরা নির্ভয়ে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করতে পারেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি ঘটছে না। ফলে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
এতে বলা হয়, ‘আমরা সব সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের বিচার, সাংবাদিক হয়রানির নিন্দা এবং কারাবন্দি সাংবাদিকদের জামিনের দাবি জানাই। সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত ও সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ করুন। গণমাধ্যমকে যারা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে, ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠ থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা পরিহার করুন।’
বিবৃতিতে সই করেছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ( ডিইউজে) সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, সিনিয়র সাংবাদিক নজরুল কবীর, বাংলা ইনসাইডারের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ বোরহান কবির,
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের (ডিএসইসি) সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন ইমন, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ওবায়দুর রহমান, টিভি ক্যামেরাজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (টিসিএ) সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক হোসেন (তানভীর),
ডিআরইউয়ের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক মুখপাত্রের সম্পাদক শেখ জামাল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহসভাপতি মাহমুদুল আলম নয়ন, সিনিয়র সাংবাদিক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক জামাল উদ্দিন,
খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাঈদুজ্জামান সম্রাট।