নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাকে বহিষ্কার, দুজনকে পুনর্বহাল
Published: 7th, July 2025 GMT
শৃঙ্খলাভঙ্গ ও দলীয় আদর্শ পরিপন্থী আচরণসংক্রান্ত কারণ দর্শানোর নোটিশের (শোকজ) জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে জবাব সন্তোষজনক হওয়ায় অন্য দুই নেতাকে তাঁদের পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। পৃথক দুটি নোটিশে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বহিষ্কৃত ওই নেতার নাম রাশেদুল ইসলাম। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক। অন্যদিকে পদে পুনর্বহাল হওয়া হওয়া দুই নেতা হলেন জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুর রহমান ও আমিরুল ইসলাম।
আজ সোমবার দুপুরের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার সদস্যসচিব শাফায়াত উল্লাহ প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ৩ জুলাই ওই চিঠি ইস্যু করা হয়। গতকাল রাতে চিঠিটি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়।
একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কমিটির পক্ষ থেকে গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রম, শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং দলীয় আদর্শ পরিপন্থী আচরণের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। এসব অভিযোগ প্রাথমিকভাবে পর্যালোচনা সাপেক্ষে কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে তাঁকে বহিষ্কার করা হলো।
আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগে কিছু সাংগঠনিক অসংগতি এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুর রহমান এবং আমিরুল ইসলামকে শোকজ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তাঁদের দুঃখ ও সংগঠনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ এবং ভবিষ্যতে গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলার অনুসরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার অঙ্গীকারের পরিপ্রেক্ষিতে কমিটির এক জরুরি সভায় তাঁদের সাধারণ ক্ষমা করে আগের পদে পুনর্বহাল করা হয়।
বহিষ্কারের বিষয়ে আপিল করার তথ্য জানিয়ে রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে বহিষ্কার নোটিশ ফেসবুকে দেখেছি। তবে আমার হাতে আসেনি। আমি আপিল করব। আশা করছি, তারা এ আদেশ প্রত্যাহার করে নেবে।’
সংগঠনটির নেতা-কর্মী সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জুন সংগঠনের ফেসবুক পেজে জেলা প্রশাসককে উদ্দেশ করে একটি পোস্ট দেন আবদুর রহমান। পোস্টে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি ছবি সংযুক্ত করে প্রশাসনকে শহীদ, আহত ও সাধারণ মানুষের প্রতি আরও যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। পোস্টটি পরে আরেক যুগ্ম সদস্যসচিব আমিরুল ইসলাম মুছে ফেলেন। এ নিয়ে মেসেঞ্জার গ্রুপে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এরপর ৮ জুন সিনিয়র নেতারা মীমাংসার চেষ্টা করলেও তাঁরা সাড়া দেননি। পরদিন ৯ জুন নড়াইল শহরের পুরাতন বাস টার্মিনালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই-তিনজন আহত হন। আমিরুলের পক্ষে মারামারিতে অংশ নেন রাশেদুল ইসলাম। পরে ১১ জুন এ ঘটনায় সংগঠনটির তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র শ দ ল ইসল ম সদস যসচ ব কম ট র আম র ল
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে প্রশাসন: ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের বিধিমালা প্রণয়নে প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে বলে অভিযোগ করেছে শাখা ছাত্রদল।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ অভিযোগ তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন:
ইডিএস মাস্টার্স ফেলোশিপ পেলেন ঢাবি শিক্ষার্থী
সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মাদকবিরোধী কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে হবে: জবি উপাচার্য
লিখিত বক্তব্যে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা ছিল প্রশাসন একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। কিন্তু আমরা দেখেছি, প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে, যা হতাশাজনক।”
তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা চাই এটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হোক—যাতে জকসু শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের মুক্ত মঞ্চে পরিণত হয়, কোনো দলীয় প্রভাবের শিকার না হয়।”
তিনি আরো বলেন, “জকসুর মেয়াদ ও দায়িত্বের ক্ষেত্র নির্দিষ্ট ও বাস্তবসম্মত করা, সদস্যপদের যোগ্যতা সহজ করা এবং সংবিধানে শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক কার্যক্রমে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষমতা শুধু সহ-সভাপতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সাধারণ সম্পাদক ও সহসাধারণ সম্পাদককেও যুক্ত করতে হবে।”
সংগঠনটি জকসুর কাঠামোতে নতুন ১০টি পদ সংযোজনের প্রস্তাব করেছে তারা। প্রস্তাবিত পদগুলো হলো— বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীবিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক (শুধু নারীদের জন্য), দক্ষতা উন্নয়ন (ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট) সম্পাদক, ধর্ম ও সম্প্রীতি সম্পাদক, মিডিয়া ও যোগাযোগ সম্পাদক, দফতর সম্পাদক, বিতর্ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদক, পরিবেশ সম্পাদক, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক এবং কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক।
এর আগে, ছাত্রদলের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং একটি সদস্য পদ জকসু বিধিমালায় সংযোজন করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীরা সবাই যোগ্য। তবে এখনো প্যানেল নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। নির্বাচনে অধিক গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের নিয়েই প্যানেল প্রকাশ করা হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছিলাম, কিন্তু তা রাখা হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ থাকলেও জকসুতে তা নেই। এছাড়া বিগত ফ্যাসিস্টদের বিচার না হওয়াটা প্রশাসনের ব্যর্থতা।”
সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক, আহ্বায়ক সদস্যসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী