নতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু
Published: 7th, July 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রোববার রাত ১২টা ১ মিনিটে অর্থাৎ সোমবার প্রথম প্রহরে এই দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এই প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগাং ড্রাইডক।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরে দায়িত্ব পালন করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, নৌবাহিনীর এমন কর্মকর্তারা নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হয়েছেন। তবে জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ যন্ত্রপাতি পরিচালনায় রয়েছেন সাইফ পাওয়ারটেকের কর্মীরা, যাঁরা এখন ড্রাইডকের কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। একইভাবে বন্দরের তালিকাভুক্ত যেসব শ্রমিক সাইফ পাওয়ারটেকের আওতায় কাজ করতেন, তাঁরাও এখন ড্রাইডকের আওতায় কাজ করছেন। তবে টার্মিনালটির তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা দায়িত্ব নিয়েছেন।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরসচিব মো.
জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে চারটি টার্মিনাল রয়েছে। নিউমুরিং টার্মিনাল ছাড়াও বাকি তিনটি হলো জেনারেল কার্গো বাথ বা জিসিবি, চিটাগং কনটেইনার টার্মিনাল বা সিসিটি ও আরএসজিটি চিটাগং। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় নিউমুরিং টার্মিনাল। টার্মিনালটিতে জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর অত্যাধুনিক ১৪টি গ্যান্ট্রি ক্রেন রয়েছে। একসঙ্গে পাঁচটি জাহাজ ভেড়ানো যায় এই টার্মিনালে। এর মধ্যে চারটি সমুদ্রগামী ও একটি অভ্যন্তরীণ নদীপথে চলাচল করা ছোট জাহাজ।
চিটাগং ড্রাইডক টার্মিনালটি পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর গতকাল প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত নৌবাহিনীর সদস্যদের নিউমুরিং টার্মিনালে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর কাজ তদারক করতে দেখা যায়। টার্মিনালটি দিন–রাত ২৪ ঘণ্টা সচল থাকে। এ জন্য প্রতি পালায় (আট ঘণ্টা) চিটাগং ড্রাইডকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচালনা কাজ সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে ড্রাইডকের ঠিক কতজন টার্মিনালটি পরিচালনায় যুক্ত হয়েছেন, তা জানা যায়নি।
নিউমুরিং টার্মিনালটি ২০০৭ সালের ১৬ মে থেকে আংশিক এবং ২০১৫ সাল থেকে পুরোপুরি পরিচালনা করে আসছিল সাইফ পাওয়ারটেক। টার্মিনালটি নতুন ব্যবস্থাপনায় যাওয়ার পর এখন প্রতিষ্ঠানটির হাতে রয়েছে শুধু সিসিটি টার্মিনালের পরিচালনার ভার। জানতে চাইলে সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোববার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে আমরা চিটাগং ড্রাইডককে টার্মিনালটির পরিচালনার ভার বুঝিয়ে দিয়েছি। সরকারের নির্দেশে টার্মিনালটি পরিচালনায় আমরা প্রতিষ্ঠানটিকে পূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছি, যাতে এক মিনিটও পরিচালন কার্যক্রম বন্ধ না থাকে।’
চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছে। এ নিয়ে শ্রমিক সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে সমালোচনা আছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) এই টার্মিনালে ট্রানজেকশন অ্যাডভাইজার বা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। প্রকল্পের সময়সীমা অনুযায়ী, আগামী নভেম্বর মাসে এই চুক্তি হবে। সেই চুক্তির আগপর্যন্ত টার্মিনালের পরিচালনার ভার থাকতে পারে চিটাগং ড্রাইডকের হাতে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই ট র ম ন ল ড র ইডক র ক জ করছ র কর ম করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গৃহহীন মানুষের জন্য ৩৪০টি ঘর হস্তান্তর করল নৌবাহিনী
চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার উড়িরচরে গৃহহীন ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য নির্মিত ৬৮টি পাকা ব্যারাক আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। সোমবার এসব ব্যারাক স্থানীয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছে নৌবাহিনী। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসানের প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনা এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই ব্যারাক হাউসগুলো নির্মাণ করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। প্রতিটি ব্যারাকে পাঁচটি করে মোট ৩৪০টি ইউনিট রয়েছে। যার প্রতিটিতে একটি করে গৃহহীন পরিবার বসবাস করতে পারবে। প্রতিটি ব্যারাকে রয়েছে পৃথক রান্নাঘর এবং বাথরুমের সুবিধা। নৌবাহিনীর নবনির্মিত এসব ব্যারাক হাউস নৌবাহিনীপ্রধানের পক্ষ থেকে নৌবাহিনীর প্রতিনিধি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে সন্দ্বীপ জেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে হস্তান্তর করেন।
এর আগেও আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাট, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল, ঝালকাঠি, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কক্সবাজার জেলায় সর্বমোট ২৩৩টি প্রকল্পে মোট ৪ হাজার ৫৬০টি ব্যারাক হাউস নির্মাণ শেষে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে নৌবাহিনী। এসব ব্যারাকে আশ্রয় পেয়েছে ৩৪ হাজার ১৬৫টি গৃহহীন পরিবার।