যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান
Published: 13th, May 2025 GMT
পাকিস্তান ও ভারতের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা সোমবার (১২ মে) হটলাইনের মাধ্যমে তাদের প্রথম দফা আলোচনা করেছেন এবং পাঁচ দিনের যুদ্ধের পর শনিবার সম্মত যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে সম্মত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৩ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে, গতকাল সোমবার পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ এবং তার ভারতীয় প্রতিপক্ষ লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই একে অপরের সঙ্গে কথা বলেছেন।
আরো পড়ুন:
পুনরায় শুরু হচ্ছে আইপিএল, নতুন সূচি ঘোষণা
ভারত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে, পাকিস্তান নয়: নিরাপত্তা সূত্র
ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “উভয় পক্ষই যেন একটিও গুলি না চালায় বা একে অপরের বিরুদ্ধে কোনো আক্রমণাত্মক ও শত্রুতামূলক পদক্ষেপ না নেয়, সেই প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, “সীমান্ত এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে সেনা হ্রাস নিশ্চিত করার জন্য উভয় পক্ষই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে একমত হয়েছে।”
অন্যদিকে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কিন্তু কোনো বিবরণ দেয়নি। পাকিস্তানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উভয় পক্ষের দ্বিতীয় দফা আলোচনা হবে।
দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি অটুট রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও যুদ্ধবিরতির বিস্তারিত ঘোষণা করার সময় বলেছিলেন, উভয় পক্ষই একটি নিরপেক্ষ স্থানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করবে।
গতকাল সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে বলেছেন আলোচনায় ভারত ‘সন্ত্রাসবাদ’ এবং ‘পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণাধীন কাশ্মীরের অংশ- আজাদ জম্মু কাশ্মীর’- এর উপর জোর দেবে।
এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, মোদি তার বক্তব্যের মাধ্যম বুঝিয়েছেন যে, ভারত আলোচনায় রাজি আছে। অন্যদিকে, সন্ত্রাসবাদ ও আজাদ জম্মু-কাশ্মীরের ওপর মোদির মনোযোগ ভারতে তার ভোটব্যাংক রক্ষা করার প্রচেষ্টা।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ভারতের সঙ্গে যখনই আলোচনা হবে, তখন কাশ্মীর এবং সিন্ধু পানিচুক্তি ইস্যুটি পাকিস্তানের অগ্রাধিকার তালিকায় থাকবে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সর্বশেষ উত্তেজনা শুরু হয় ২২ এপ্রিল, যখন ভারতের অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। কোনো প্রমাণ না দিয়েই ভারত তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে।
ভারত ২৩ এপ্রিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পদক্ষপ নেয়। ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে, ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয় এবং নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের সামরিক কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে।
পাকিস্তান ভারতের অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটিও ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যার মধ্যে রয়েছে ভারতের সঙ্গে যেকোনো বাণিজ্য বন্ধ করা, ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করা এবং অন্যান্য।
৭ মে রাতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়, যখন পাঞ্জাব এবং আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের ছয়টি শহরে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। হামলায় বেশ কয়েকটি মসজিদ ধ্বংস হয়ে যায়। এছাড়া নারী, শিশু এবং বয়স্কসহ কয়েক ডজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ভারতের অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে, যার তিনটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান রয়েছে- যা ভারতীয় বিমান বাহিনীর গর্ব। পরের দুই দিন ধরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ড্রোন হামলা ও গোলাবর্ষণ চলে।
শনিবার ভোরে আরো তীব্র উত্তেজনার মধ্যে, ভারত পাকিস্তানের কয়েকটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। কয়েক ঘণ্টা পরে পাকিস্তান অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস শুরু করে, এতে ভারতের ২৬টি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
শনিবার সন্ধ্যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, মার্কিন কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর পাকিস্তান এবং ভারত উভয়ই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কয়েক মিনিট পরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার যুদ্ধবিরতির তথ্য নিশ্চিত করেন এবং তারপরে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রিও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গতকাল সোমবার ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ দুই পারমাণবিক-সশস্ত্র প্রতিবেশীর মধ্যে ‘সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ’ রোধ করেছে। তিনি আরো যোগ করেন, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় উভয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা একটি পারমাণবিক সংঘাত বন্ধ করে দিয়েছি। আমার মনে হয়, এটি একটি খারাপ পারমাণবিক যুদ্ধ হতে পারত, লাখ লাখ মানুষ মারা যেতে পারত। ভারত ও পাকিস্তানের শক্তিশালী ও অটল নেতৃত্বের জন্য আমি খুবই গর্বিত।”
ট্রাম্প আরো বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বন্ধের হুমকি তাদের যুদ্ধ বন্ধ করার একটি বড় কারণ।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন শ চ ত কর র জন য স মব র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিরোধযোগ্য একটি মৃত্যুও যেন না হয়
আমরা ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর নতুন এক ঢেউ দেখেছিলাম। ঢাকার পাশাপাশি তখন এর প্রাদুর্ভাব সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে; যেখানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ১ লাখের অধিক মানুষ এবং মারা যান ১৭৯ জন। পরের বছর ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমলে বিশ্ব কভিড-১৯ অতিমারির মুখোমুখি হয়। তখন একটা স্বস্তি ছিল, করোনায় মানুষ ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হলেও ডেঙ্গু নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না। ২০২১-এর পর অবশ্য করোনা কমলেও ডেঙ্গু সেই অর্থে কমেনি। ২০২৩ সাল বাংলাদেশে ডেঙ্গুর ইতিহাসে সবচাইতে ভয়াবহ বছর ছিল। তখন করোনা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এ বছর এসে আমরা একই সঙ্গে ডেঙ্গু ও করোনার প্রকোপ দেখছি। এবার জ্বরের বৈচিত্র্যময় কারণ দেখা যাচ্ছে। এগুলো একদিকে যেমন করোনা, অন্যদিকে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, সাধারণ ভাইরাসজনিত জ্বর, শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণজনিত জ্বর, পানিবাহিত রোগের কারণেও জ্বর হচ্ছে, যেমন টাইফয়েড। টাইফয়েড ও শ্বাসতন্ত্রের জ্বর বাদে অন্যগুলো ভাইরাসজনিত। যেমন করোনা, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা।
আগে কখনও বলা হতো, একাধিক ভাইরাসের সংক্রমণ সাধারণত এক জায়গায় হয় না। এটা বলা চলে, অনুমানপ্রসূত। আমরা ব্রাজিলেও দেখেছি, ডেঙ্গু ও করোনা একত্রে হচ্ছে এবং বাংলাদেশেও তেমনটা দেখছি। তার মানে, এখন জ্বর হলে ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। বরং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং এক-দুইটা পরীক্ষা করা জরুরি। এতে বোঝা যাবে জ্বরের কারণটা কী– ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, নাকি করোনা? এ ক্ষেত্রে অবহেলা হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, এমনকি মৃত্যুও। এ কারণেই এবারের জ্বরকে ভিন্নমাত্রায় গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। অর্থাৎ জ্বর হলে এর ধরনটা নিরূপণ করা। একে অবহেলা করা যাবে না। জ্বর পরীক্ষার ক্ষেত্রে হয়তো একটা দিয়ে পুরো চিত্র আসবে না। সে ক্ষেত্রে ডেঙ্গু ও করোনার একসঙ্গে পরীক্ষা করা যেতে পারে। আবার লক্ষণ অনুযায়ী পরীক্ষা হতে পারে। যেমন চিকুনগুনিয়া হলে প্রচণ্ড জ্বর ও সন্ধিস্থলে ব্যথা করবে। এটিও মশাবাহিত রোগ।
জ্বরের এসব পরীক্ষা সর্বত্র সহজলভ্য করা দরকার। অথচ সংবাদমাধ্যমে আমরা দেখেছি, সর্বত্র সব রোগের পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। যেমন করোনার পরীক্ষার কিটের সংকট যেখানে রাজধানীর অনেক হাসপাতালেই দেখা গেছে, সেখানে বাইরের চিত্র বলার অপেক্ষা রাখে না। আবার জেলায় জেলায় বাড়ছে চিকুনগুনিয়া। অথচ পরীক্ষা শুধু ঢাকাতেই হচ্ছে। সে জন্য আমি মনে করি, ডেঙ্গু, করোনা এবং চিকুনগুনিয়া পরীক্ষার ব্যবস্থা বাইরে সমানভাবে থাকতে হবে; সরকারি-বেসরকারি উভয় হাসপাতালেই। এতে আক্রান্ত ব্যক্তি দ্রুত পরীক্ষা করতে পারবে এবং ঝুঁকি মোকাবিলায় সময় থাকতেই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি, ডেঙ্গুর কিছু হটস্পট চিহ্নিত হয়েছে। যেমন বরগুনা, কুমিল্লার দাউদকান্দি। বিশেষ করে বরিশালে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। সেখানে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি। বলা চলে, একসময় ডেঙ্গু শহরের রোগ বলে পরিচিত ছিল এবং শুরুতেই যেটা বলেছি, ২০১৯-এর মহামারির মাধ্যমে এটি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এডিস মশার ভাইরাস সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও এর ঘনত্ব বেড়েছে। সে জন্য এখন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ নির্দিষ্ট কোনো জায়গার অগ্রাধিকারে আবদ্ধ থাকা উচিত নয়। এ মশা নিয়ন্ত্রণে সারাদেশেই একটি সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে হবে এবং এ পরিকল্পনায় জনগণকে সঙ্গে রাখতে হবে। অর্থাৎ কমিউনিটির অংশগ্রহণ এখানে জরুরি। আর যেসব জায়গায় হটস্পট, সেসব অঞ্চলে গুরুত্বটা বেশি দিতে হবে। এটা না করতে পারলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়বে।
গত বছর সমকালের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছিলাম, বাস্তবতা আগে স্বীকার করতে হবে। ২০১৯ সালে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণের পর আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নীতিনির্ধারক পর্যায়ের অনেকে বলতে থাকেন, এটি মহামারি নয়। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহামারি-বিষয়ক সংজ্ঞাও যেন তারা মানতে চান না। যেন অস্বীকার করলেই বাস্তবতা বদলে যাবে। মহামারি অস্বীকারের মধ্য দিয়ে ডেঙ্গু ঢাকা শহর থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ল। গ্রামেও এখন ডেঙ্গুর উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এর ফলে আরেকটা ক্ষতি হলো। ডেঙ্গুর রূপ পাল্টে গেল। যেটা এর আগে ছিল মৌসুমি বা বর্ষার রোগ, তা হয়ে গেল সারাবছরের।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন আছে। তারা অভিযান চালাচ্ছে বটে। বিশেষ করে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কিছু কাজ করছে। সে সাফল্য আসছে কতটা? সাধারণত দুই ধরনের এডিস মশাকে এখানে ডেঙ্গুর জন্য দায়ী করা হয়। একটি এডিস ইজিপ্টাই বা গৃহবাসী এডিস; আরেকটি বুনো এডিস, যাকে এশিয়ান টাইগারও বলে। বুনো এডিস বাস করে বাড়িঘরের আশপাশে ঝোপঝাড়, গাছের পাতা বা খোঁড়লে জমে থাকা পানিতে। সিটি করপোরেশন হয়তো ঘরবাড়িতে থাকা এডিস ইজিপ্টাই মারার ব্যবস্থা করছে। কিন্তু বুনো এডিস মারতে কী করছে? আমরা অনেক দিন ধরে এডিস নিধনে জাতীয় পরিকল্পনার কথা বলছি। যার আওতায় বাসাবাড়ির পাশাপাশি ঝোপঝাড়ের এডিসও মারা পড়বে। কিন্তু সেদিকে কারও খেয়াল নেই!
আমাদের দুঃখজনক দিকটা হলো, যখন মহামারি আসে বা রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়, তখন কর্তাব্যক্তিরা নানা পরিকল্পনা ও আশ্বাসের কথা বলেন। রোগী কমে গেলে তা ভুলে যান। এমনকি বলা চলে, ফ্রিজে পাঠিয়ে দেন। পরের বছর আবার যখন আসে, তখন আবার কথা বলেন। সারাদেশের জন্য সমন্বিত মশক নিধন অভিযানের যে দাবি আমরা করে আসছি, তার বাস্তবায়ন কিন্তু হয়নি। তবে এবার আমরা প্রত্যাশা রাখতে চাই, জুলাই অভ্যুত্থানের সরকার বিষয়টি সত্যিকার অর্থেই গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।
সর্বশেষ এবারের করোনার বিষয়টিতে জোর দেওয়ার কথা বলছি। আমার ধারণা, আমরা করোনার একটি নতুন ঢেউয়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। কারণ ইতোমধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের করোনা বাড়তে শুরু করেছে। নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বলা হচ্ছে, এটি খুব দ্রুত মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে সক্ষম। যদিও সাধারণ মানুষ, যাদের অন্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি অসুখ নেই, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সমস্যা নেই, তাদের জন্য এটি অতি বিপজ্জনক বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না। অন্যদিকে, এসব সমস্যা যাদের রয়েছে, তারা আক্রান্তের ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। আমি মনে করি, এসব মৃত্যু হয়তো প্রতিরোধ করা যেত। প্রতিরোধযোগ্য একটি মৃত্যুও গ্রহণযোগ্য নয়। সে জন্য এটি প্রতিরোধে জনসাধারণকে সতর্ক করার জন্য কাজ করতে হবে।
ডা. লেলিন চৌধুরী: জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ