ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের দায়িত্ব ইশরাক হোসেনকে বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন হাজারো মানুষ।

আজ বুধবার সকাল নয়টার দিকে ডিএসসিসির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীরা এই কর্মসূচি শুরু করেন।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, গুলিস্তান এলাকায় অবস্থিত নগর ভবনের সামনের সড়কে সকাল সাড়ে আটটা থেকেই লোকজন আসতে শুরু করে। পরে তারা ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়রের শপথ পড়িয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এই দাবিতে তাঁরা নানা স্লোগান দিচ্ছেন।

বিএনপির বৈদেশিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ মার্চ রায় দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল।

আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

নগর ভবনের সামনে অবস্থানকারী বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, এখন পর্যন্ত ইশরাকের শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই তাঁরা ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আজ বিক্ষোভ করছেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া রাজধানীর গোপীবাগ এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁরা ভোট দিয়ে ইশরাককে মেয়র পদে নির্বাচিত করেছিলেন। সেই ফল জালিয়াতি করে ইশরাককে পরাজিত করা হয়েছিল। আদালতের রায়ে তিনি মেয়র পদ ফিরে পেয়েছেন। কিন্তু নানা টালবাহানা করে তাঁকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। এর প্রতিবাদ জানাতে তিনি এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

ইশরাক প্রয়াত বিএনপি নেতা ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে। সাদেক হোসেন খোকা পুরান ঢাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তির ভাষ্য, ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে যাঁরা আজকের এই কর্মসূচিতে এসেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া হুমায়ুন কবির নামের এক ব্যক্তি বলেন, তিনি সূত্রাপুর এলাকার বাসিন্দা। যে ভোটাররা ভোট দিয়ে ইশরাককে মেয়র পদে নির্বাচিত করেছিলেন, তাঁরাই আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এসেছেন বলে দাবি করেন তিনি।

আজ দুপুর দুইটা পর্যন্ত এই বিক্ষোভ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন একাধিক বিক্ষোভকারী। তাঁরা বলছেন, আজকের কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ক ষ ভ কর ইশর ক

এছাড়াও পড়ুন:

একটি গোষ্ঠী নির্বাচন পিছিয়ে জাতির সর্বনাশ করতে চাচ্ছে: মির্জা আব্বাস

আনুপাতিক হারে ভোট এবং আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যারা দাবি তুলছে তারা এই দেশ-জাতির সর্বনাশ করতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠী নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে জাতির সর্বনাশ করতে চাচ্ছে।

রোববার রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশনে ‘রমনা থানা বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম ২০২৫’ অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একেকজন একেকটা দাবি তুলে নির্বাচনকে পিছিয়ে, নির্বাচনের অবস্থা সর্বনাশ করে দিয়ে এ জাতির সর্বনাশ করতে চাচ্ছে। বড় বড় সমাবেশ করে জাতির কাছে ভুল বার্তা পৌঁছাবেন না। সমাবেশ দিয়ে যদি প্রমাণ করা যায় কে কত জনপ্রিয়, আমরা সারা বাংলাদেশকে একদিনে সমাবেশের আওতায় আনতে পারি। সারা বাংলাদেশ একদিনে সমাবেশ করবে। কেউ কোনো জায়গা ছাড়বে না। এটা তো সিস্টেম হলো না। সবাইকে অনুরোধ জানাব, আউল-ফাউল কথাবার্তা বইলেন না কেউ। আপনারা এই সমস্ত কথাবার্তা বলে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করবেন না।’

ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করীমকে উদ্দেশ্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যখন বিএনপি-জামায়াতের ওপরে স্টিমরোলার চালানো হচ্ছিল, তখন ওই দলটি এবং তার নেতা দূরে থেকে বাহবা দিয়েছেন। কৌশলে হাসিনাকে সমর্থন দিয়েছেন। কালো নির্বাচন, রাতের নির্বাচন, দিনের নির্বাচন; তিনবার নির্বাচন হয়েছে, উনারা কোনো প্রতিবাদ করেন নাই। এখন লম্বা কথা বলতেছেন, আগে দিতে হবে স্থানীয় নির্বাচন, এরপর দিতে হবে পিআর সিস্টেম (আনুপাতিক পদ্ধতি)।’

পিআর পদ্ধতি কই থেকে আসে প্রশ্ন করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশটাকে সুন্দর করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কিছু করেন। শুধু আপনার কথামতোই হতে হবে, স্থানীয় সরকার আগে হতে হবে, আবার পিআর ভোট করতে হবে। কই থেকে আবিষ্কার করেন এগুলা? কে দেয় বুদ্ধি আপনাদের? এসব কুপরামর্শ নিয়ে, এই দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করার জন্য একদল লোক আজ মাঠে নেমেছে।’

সম্প্রতি ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের একা লড়াইয়ের উদাহরণ টেনে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের মুসলিম বিশ্বের কেউ যখন তাকে সমর্থন দিল না, ইরান একাই যুদ্ধ করে গেল। কারণ জাতি ঐক্যবদ্ধ ছিল। আর আমার দেশের মধ্যে কিছু রাজনীতিবিদ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, কিছু রাজনীতিবিদ ক্ষমতায় যেতে দেব না, এই করে করে দেশটাকে গত ৫০ বছরে এগোতে দিল না। দেশটাকে আমরা ধীরে ধীরে শেষ করে দিচ্ছি।’

দেশকে ভালোবেসে সবাইকে এক জায়গায় আসার আহ্বান জানান মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘যারা দেশকে ভালোবাসেন, একটা জায়গায় আসেন। যে জায়গায় গেলে পরে দেশ ও দেশের মানুষের উন্নতি হবে।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য মো. শরীফ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন উপস্থিত ছিলেন। নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল হোসেন সরদার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ