বুধবার রাতে রোমের অলিম্পিকো স্টেডিয়ামে ইতিহাস গড়ল বোলোনিয়া। ইতালিয়ান কাপ ফাইনালে তারা ১-০ গোলে হারিয়ে দিল এসি মিলানকে। এই জয়ে বোলোনিয়া ৫১ বছর পর জিতল কোনো বড় শিরোপা। শেষবার তারা এই ট্রফি জিতেছিল ১৯৭৪ সালে। এরপর থেকে বড় কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালেই ওঠা হয়নি ক্লাবটির। সেই ক্লাবই এখন উদযাপন করছে তাদের ইতিহাসের তৃতীয় ঘরোয়া ট্রফি।

রোমের ঐতিহাসিক স্টাদিও অলিম্পিকোয় বিজয়ী গোলটি আসে ম্যাচের ৫৩তম মিনিটে। দলটির সুইস ফরোয়ার্ড ড্যান নডোয়ে ইতিহাসগড়া গোলটি করে এনে দেন বোলোনিয়াকে তাদের ৫১ বছরের শিরোপা খরা থেকে মুক্তি।

ক্লাবটির বর্তমান কোচ ভিনচেনজো ইতালিয়ানো দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দারুণ পরিবর্তন এসেছে দলটিতে। থিয়াগো মোটতার স্থলাভিষিক্ত হয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ধারাবাহিক পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে যাচ্ছেন এই ইতালিয়ান কোচ। আর এই ট্রফিটিই তার কোচিং ক্যারিয়ারের প্রথম বড় সাফল্য।

এর আগে ফিওরেন্টিনার কোচ হিসেবে টানা তিনটি ফাইনালে হেরে গিয়েছিলেন ইতালিয়ানো, যার মধ্যে ছিল ২০২৩ সালের ইতালিয়ান কাপ ফাইনালও। তাই শিরোপা জয়ের পর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত খেলোয়াড়দের বুকে জড়িয়ে ধরেন, স্ট্যান্ডে তখন নেচে কাঁদছে বোলোনিয়ার সমর্থকেরা। যাদের অনেকেই ভেবেছিলেন, তারা হয়তো জীবনে আর এমন দৃশ্য দেখবেন না।

অন্যদিকে, হারের ফলে হতাশ মিলান। ২০০৩ সালে সর্বশেষ ইতালিয়ান কাপ জিতেছিল তারা, সে বছরই ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি। তখন ক্লাবের মালিক ছিলেন ইতালির প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনি। সেই গৌরবগাথা এখন কেবল স্মৃতিই হয়ে আছে রোসোনেরিদের জন্য।

মিলান এখন ইউরোপা প্রতিযোগিতার টিকিট পাওয়ার লড়াইয়ে আছে। সিরি আ টেবিলে দলটি রয়েছে অষ্টম স্থানে, কনফারেন্স লিগের অবস্থানে থাকা রোমার থেকে তিন পয়েন্ট পিছিয়ে। আগামী রোববার মুখোমুখি হবে এই দুই দল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এস ম ল ন ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

সুরা নাস: বাংলা অর্থসহ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা

সুরা নাস কুরআনের ১১৪তম এবং শেষ সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ বলে মাক্কী সুরা নামে পরিচিত। এতে মোট ৬টি আয়াত রয়েছে। এই সুরাটি মানুষকে শয়তানের প্রতারণা ও মন্দ প্রভাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শেখায়। এটি ‘মু’আওয়িযাতাইন’ (দুটি আশ্রয়প্রার্থী সুরা: সুরা ফালাক ও সুরা নাস)–এর একটি।

সুরা নাসের বাংলা উচ্চারণ, অর্থ এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা আলোচনা করা হলো।

বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

উচ্চারণ: কুল আউজু বিরাব্বিন নাস। মালিকিন নাস। ইলাহিন নাস। মিন শাররিল ওয়াসওয়াসিল খান্নাস। আল্লাজি ইউওয়াসউইসু ফি সুদুরিন নাস। মিনাল জিন্নাতি ওয়ান নাস।

অর্থ: বলো, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি মানুষের রবের কাছে। মানুষের অধিপতির কাছে। মানুষের উপাস্যের কাছে। মন্দ প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণা থেকে, যে পিছনে লুকায়। যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে। জিন ও মানুষের মধ্য থেকে।

আরও পড়ুনসুরা ফাতিহার বাংলা উচ্চারণ অর্থ ও ফজিলত২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪সুরা নাসের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা

সুরা নাস মানুষকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শিক্ষা দেয়। এই সুরায় আল্লাহকে তিনটি গুণে সম্বোধন করা হয়েছে:

রব্বিন নাস (মানুষের রব): আল্লাহ মানুষের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা।

মালিকিন নাস (মানুষের অধিপতি): তিনি মানুষের উপর সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী।

ইলাহিন নাস (মানুষের উপাস্য): তিনিই একমাত্র উপাসনার যোগ্য।

সুরাটি শয়তানের মন্দ প্রভাব থেকে সুরক্ষা প্রার্থনায় জোর দেয়। কেননা, শয়তান ‘ওয়াসওয়াস’ (কুমন্ত্রণা) দেয় এবং ‘খান্নাস’ (পিছনে লুকিয়ে থাকে)। এই কুমন্ত্রণা জিন ও মানুষ উভয়ের থেকে আসতে পারে, যা মানুষের অন্তরে মন্দ চিন্তা ও পাপের প্রতি প্ররোচিত করে।

হাদিসে আছে, মহানবী (সা.) প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক এবং সুরা নাস পড়তেন, হাতে ফুঁ দিয়ে শরীরে মুছে নিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)

বোঝা যায়, সুরা নাস পড়া শয়তানের প্রভাব ও অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়।

আরও পড়ুনসুরা কাহাফের ৪ কাহিনিতে সফলতার ৪ শিক্ষা২০ জুলাই ২০২৫সুরা নাসের ফজিলত

সুরা নাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে, নবীজি (সা.)–কে যখন জাদু করা হয়, তখন সুরা ফালাক ও সুরা নাস নাজিল হয় এবং তিনি এই দুই সুরা পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন এবং আরোগ্য লাভ করেন। (সুনান নাসাঈ, হাদিস: ৫৪৩৭)

এই সুরা পড়া শয়তানের কুমন্ত্রণা, জাদু, হিংসা এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে, “সুরা নাস মানুষকে শয়তানের মানসিক ও আধ্যাত্মিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।” (তাফসির ইবনে কাসির, পৃষ্ঠা: ৮/৫৩৬, দারুস সালাম প্রকাশনী, ২০০০)।

সুরা নাস একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ সুরা, যা মানুষকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনার মাধ্যমে শয়তানের মন্দ প্রভাব থেকে রক্ষা করে। আধুনিক জীবনে, যখন আমরা প্রতিনিয়ত নানা প্রলোভন ও মানসিক চাপের মুখোমুখি হই, তখন এই সুরা আমাদের ঈমানকে দৃঢ় করতে পারে। এই সুরা নিয়মিত পাঠ, বিশেষ করে সকাল-সন্ধ্যায় এবং ঘুমানোর আগে, মুমিনের জীবনে শান্তি ও সুরক্ষা নিয়ে আসে।

আরও পড়ুনসুরা আর-রহমান: সারকথা ও ফজিলত০৮ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ