আগামী জুনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে টেসলার তৈরি চালকহীন রোবোট্যাক্সি চালুর পরিকল্পনা করেছিলেন ইলন মাস্ক। কিন্তু চালুর মাত্র এক মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্রাফিক সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন টেসলাকে একটি চিঠি পাঠিয়ে তাদের সেলফ–ড্রাইভিং গাড়ি ব্যবস্থাপনা কতটা নিরাপদ, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে। আগামী ১৯ জুনের মধ্যে টেসলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সব প্রশ্নের লিখিত উত্তর দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না দিলে প্রকল্পটি স্থগিত করা হতে পারে। এর ফলে রোবোট্যাক্সি চালুর পরিকল্পনায় বড় ধাক্কা খেয়েছেন ইলন মাস্ক।

ইলন মাস্ক গত এপ্রিলে জানিয়েছিলেন, ২০২৫ সালের জুনে যুক্তরাষ্ট্রের অস্টিন শহরে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে টেসলার তৈরি রোবোট্যাক্সি। স্বয়ংক্রিয় এই ট্যাক্সি চলবে প্রতিষ্ঠানটির ‘ফুল সেলফ–ড্রাইভিং’ বা এফএসডি নামের সফটওয়্যারের মাধ্যমে। এর ফলে ট্যাক্সিটি চালক ছাড়াই যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, এফএসডি সফটওয়্যারের নিরাপত্তা নিয়ে এখনো গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। আর তাই রোবোট্যাক্সি চালুর আগে টেসলা কীভাবে সফটওয়্যারটির কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা যাচাই করেছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনইলন মাস্কের রোবোট্যাক্সি বাজারে আসবে কবে১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

টেসলা জানিয়েছে, রোবোট্যাক্সিতে উন্নত সংস্করণের এফএসডি সফটওয়্যার ব্যবহার করা হবে, যা চালকের সহায়তা ছাড়াই সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে চলতে পারে। এ ছাড়া ‘সাইবারক্যাব’ নামে আরও একটি মডেলের নতুন রোবোট্যাক্সি তৈরি করা হবে। গাড়িগুলোর উৎপাদন শুরু হবে আগামী বছর।

এনএইচটিএসএর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, টেসলাকে ব্যাখ্যা করতে হবে নতুন সংস্করণের সফটওয়্যারটি আগের এফএসডি সংস্করণের সঙ্গে কতটা সাদৃশ্যপূর্ণ এবং কতটি গাড়ি দিয়ে রোবোট্যাক্সি চালু করা হবে। রোবোট্যাক্সি গাড়িগুলোর মডেলের তথ্য প্রকাশের পাশাপাশি সেগুলো কুয়াশা, তুষার, ধুলাবালু বা তীব্র সূর্যরশ্মির মতো প্রতিকূল পরিবেশে কীভাবে নিরাপদে চলাচল করতে পারে, তা–ও জানাতে হবে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সফটওয় য র ইলন ম স ক

এছাড়াও পড়ুন:

কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি

পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।

মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।

মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।

পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।

ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ