‘আগে অল্প কিছু ভাঙিছেল। কালকে রাত্রি তালা ভাঙে সবকিছু নিয়ে গেছে। ঘরে আর কোনো জিনিস নেই। পানি খাওয়ার কলডাও (নলকূপ) খুলে নিয়ে গেছে। ঘরে থাকা কয়ডা চাল, থালবাটিও নিয়ে গেছে। যা করিছে, তা মাইনষির সাথে মাইনষি করে না।’

গতকাল শুক্রবার দুপুরে কথাগুলো বলছিলেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবরা–হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের বৃদ্ধা রাশেদা বেগম। তাঁর অভিযোগ, প্রতিপক্ষ স্থানীয় মিলনপক্ষের লোকজন গত বৃহস্পতিবার তাঁর বাড়িতে হামলা করে এসব ঘটনা ঘটিয়েছেন। এখন তিনি কোথায় থাকবেন, কী খাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল কাঞ্চনপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মিলন মোল্যার পক্ষের সঙ্গে পিকুল শেখ ও আফতাব মোল্যার পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পিকুলপক্ষের ফরিদ মোল্যা (৫০) নিহত হন। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষ মিলনদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করা হয়। এরপর আসামিপক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আফতাবপক্ষের লোকজনকে আসামি করে মামলা করা হয়।

পাল্টাপাল্টি মামলার পর গত ২৯ এপ্রিল ফরিদ হত্যা মামলার ১৮ নম্বর আসামি রফিকুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার হয় প্রতিপক্ষ আফতাবপক্ষের একজনের বাড়ির পাশ থেকে। পরে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে আফতাবপক্ষের লোকজনকে অভিযুক্ত করে আরেকটি মামলা করা হয়। এরপর আসামিপক্ষের লোকজনের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে ওঠে প্রতিপক্ষ মিলনের লোকজনের বিরুদ্ধে।

যেসব বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে, তাঁর মধ্যে রাশেদা বেগমের বাড়ি আছে। তাঁর বাড়িতে দুই দফায় ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, রফিকুলের লাশ উদ্ধারের পর তাঁর বাড়িতে অল্প ভাঙলেও এবার তাঁর বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।

আফতাবপক্ষের লোকজনের অভিযোগ, রফিকুলের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আফতাবপক্ষের লোকজনের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া গত কয়েক দিনে আফতাবপক্ষের অন্তত ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন মিলনপক্ষের লোকজন। এর মধ্যে কয়েকজনের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা হয়েছে। এ সময় নলকূপ থেকে শুরু করে পুকুরের মাছ পর্যন্ত ধরে নিয়ে গেছে। পাশাপাশি এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

আফতাবপক্ষের রেবেকা বেগম বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) ওরা আমার বুকে ভেলা (দেশি অস্ত্র) ধরে বলিছে বাড়ি থেকে নাম। ভয়ে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছি। এরপর আমার ঘরবাড়ি ভাঙচুর করিছে। ঘরে মালমাল যা ছেল, সব নিয়ে গেছে। পুকুরের মাছও ধরে নিয়ে গেছে। টিউবওয়েলও খুলে নিয়ে গেছে, বাথরুমটাও ভেঙে চুরমার করে থুইয়ে গেছে। এখন এই বাড়িতে থাকার কোনো পরিবেশ নেই। পরের বাড়িতে খাচ্ছি।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করছেন মিলন মোল্যার লোকজন। তাঁদের দাবি, মারামারিতে ফরিদ মারা যাওয়ার পর আফতাবদের লোকজন তাঁদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আফতাবপক্ষের একজনের বাড়ির পাশ থেকে তাঁদের একজনের লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। এরপর আফতাবপক্ষের লোকজন নিজেরাই বাড়ি থেকে মালামাল সরিয়েছে। তাঁদের কেউ ভাঙচুর বা লুটপাট করেনি। তাঁদের কেউ হুমকিও দিচ্ছে না।

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন মুঠোফোনে আজ প্রথম আলোকে বলেন, কাঞ্চনপুরের ঘটনাগুলোয় একাধিক মামলা হয়েছে, সেগুলোর তদন্ত চলছে। কোনো অভিযোগ আসলে যাচাইবাছাই করে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এলাকার পরিবেশ বর্তমানে ভালো আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কজন র ব ড় র ঘরব ড় ঘটন য় র ঘটন আফত ব

এছাড়াও পড়ুন:

হালুয়াঘাটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাট উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক অটোরিকশাচালকের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালায়। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করতে পারেনি।

পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মেয়েটি উপজেলার একটি উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সোমবার দুপুরে সে তার বন্ধুর সঙ্গে একটি পার্কে বেড়াতে যায়। বিকেলের দিকে সেখান থেকে বাড়ি পৌঁছে দিতে কিশোরীকে একটি অটোরিকশায় তুলে দেয় বন্ধু। এ সময় অটোরিকশাচালক হালুয়াঘাট উপজেলা শহরে পূজামণ্ডপ দেখানোর কথা বলে মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। একপর্যায়ে মেয়েটিকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে গামারীতলা এলাকায় মেয়েটিকে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাচালক চলে যায়। এরপর মেয়েটিকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।

খবর পেয়ে পুলিশ সোমবার রাতেই অভিযুক্ত আবুল বাশারের (২৫) বাড়িতে যায়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় পুলিশ তাঁর অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ দিতে যায় মেয়েটির পরিবার। এ বিষয়ে রাতে হালুয়াঘাট থানার ওসি হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘নিজেদের কমিউনিটির লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে মেয়েটির মা বাদী হয়ে অভিযোগ দিচ্ছেন। অভিযোগ হাতে পেলেই আমরা রাতেই মামলা হিসেবে গ্রহণ করব। অভিযুক্তকেও আমরা ধরে ফেলব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাকরির টাকায় চলছিল না সংসার, মাটি ছাড়া চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী তাওহিদ
  • সিরাজের বোলিং তোপে দিশেহারা ক্যারিবীয়রা, ভারতের দারুণ শুরু
  • গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজে জলকামান ছুড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী
  • ম্যাচ পরিত্যক্তর আগে হাবিবুর-সাব্বির ঝড়
  • শেষ ওভারের রোমাঞ্চে ৩ রানের জয় খুলনার
  • মহেশখালীতে পর্যটক টানছে ‘আগুন পান’, কী আছে এতে
  • ভারতের বিষ্ণোই গ্যাংকে কেন কানাডায় ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণা করা হলো
  • ফের মা হতে যাচ্ছেন সোনম কাপুর
  • মেসি-সুয়ারেজদের হারিয়ে প্লে’অফে শিকাগো ফায়ার
  • হালুয়াঘাটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ