আলো নিভে গেলে অনেকেই হারিয়ে যায়। কেউ কেউ আবার অন্ধকারের মধ্যে খুঁজে নেয় নতুন আলো। বলিউড অভিনেত্রী বাণী কাপুর তাদেরই একজন– যিনি ব্যর্থতার ধুলো থেকে নিজের ভেতর শক্তি খুঁজে বের করেছেন, নিরবধি যুদ্ধ করে গেছেন নিজের অবস্থান, পরিচয় ও স্বপ্নের জন্য। যে স্বপ্নের শুরুটা হয়েছিল অনেক দিন আগে থেকে। দিল্লির এক সাধারণ পরিবারে জন্ম নেওয়া বাণী কখনও ভাবেননি তাঁর মুখশ্রী একদিন হিন্দি সিনেমার বড়পর্দায় জায়গা করে নেবে।

মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, তবে তিনি জানতেন, তাঁর যাত্রাটা শুধু ক্যামেরার ফ্ল্যাশে থেমে থাকবে না। ২০১৩ সালে ‘শুদ্ধ দেশি রোমান্স’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয় তাঁর। সুশান্ত সিং রাজপুত ও পরিণীতি চোপড়ার পাশে এক নবাগত হিসেবে তাঁর পারফরম্যান্স দর্শকের নজর কাড়ে। প্রথম ছবিতেই ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড জিতে নেন ‘সেরা নবাগত অভিনেত্রী’ হিসেবে।

ক্যারিয়ারের আকাশ তখনই যেন উন্মুক্ত হয়েছিল তাঁর সামনে। কিন্তু আকাশে উড়তে থাকা পাখির ডানায় কখনও কখনও ঝড় এসে ধাক্কা দেয়। ২০১৬ সালে মুক্তি পায় রণবীর সিংয়ের বিপরীতে তাঁর দ্বিতীয় বড় বাজেটের সিনেমা ‘বেফিকরে’। প্যারিসের অলিগলিতে নায়কের সঙ্গে বাণীর রোমান্স, নিখুঁত শরীরী ভাষা, সাহসী দৃশ্য– সব ছিল ছবিতে। এরপরও দর্শকের মন জয় করতে পারেনি সেটি। বাণীর জীবনেও শুরু হয় আত্মবিশ্লেষণের এক কঠিন অধ্যায়।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণত সব দোষ নিজের ওপর নিই। যখন ছবি চলে না, মনে হয় আমারই ভুল ছিল। কেমন যেন গিল্ট ফিলিং কাজ করত।’ বাণীর এই কথা শোনার পর মনে হয়, এই মেয়েটা শুধু অভিনেত্রী নন, তিনি একজন যোদ্ধাও। হতাশা তাঁকে ভেঙে ফেলেনি; বরং নতুন করে গড়েছে। এরপর ২০১৯ সালে ওয়ার সিনেমায় ছোট চরিত্রে দেখা গেলেও বাণী নিজের উপস্থিতি টিকিয়ে রাখেন। সত্যিকার অভিনয়ের পরিপক্বতা তিনি দেখান ‘চণ্ডীগড় কারে আশিকী’ সিনেমায়।

এ সিনেমায় তিনি এক ট্রান্সজেন্ডার নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেন। এ চরিত্রের জন্য সাহস লাগে। দর্শকের প্রতিক্রিয়াও ছিল মিশ্র। তবুও বাণী পিছপা হননি।

তিনি বলেন, ‘সবাই যখন নিরাপদ চরিত্রে কাজ করতে চায়, আমি সেখানে ঝুঁকি নিয়েছি। কারণ আমি জানি, শিল্প-সাহিত্য কখনও নিরাপদ জায়গায় জন্মায় না।’ তাঁর এ বক্তব্যে যেন তাঁর শিল্পীসত্তার ছায়া পড়ে। এ বছর বাণীর দুটি ভিন্নধর্মী সিনেমা মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও মুক্তি পেয়েছে একটি। নাম ‘রেইড টু’। অন্যদিকে ‘আবির গুলাল’ রোমান্টিক কমেডি, যা রাজনৈতিক কারণে মুক্তি স্থগিত হয়েছে। 

বাণীর জীবনে নেই শুধু সাফল্যের পর সাফল্য; রয়েছে ব্যর্থতার ছায়ায় দাঁড়িয়ে নিজেকে নতুন করে খোঁজার গল্প। যিনি জানেন কীভাবে নিজেকে ভালোবাসতে হয়, কীভাবে নিজের আত্মার গভীরতম ভয়কেও আলিঙ্গন করতে হয়। বলিউড তাঁকে যতটুকু দিয়েছে, তার চেয়েও বেশি নিজের ভেতর থেকে তিনি তুলে এনেছেন শক্তি। তিনি প্রমাণ করেছেন, নায়িকা শুধু পর্দায় নয়, জীবনের মঞ্চেও লড়াকু হয়ে উঠতে পারে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বন্ধু ভুলিনি তোমায়, ভুলতেও পারবো না: হানিফ সংকেত

প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর। চলচ্চিত্র বা অ্যালবাম নয়, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তেও নিয়মিত পাওয়া যেত এন্ড্রু কিশোরের দরাজ গলার গান। কাজের সূত্রে অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক-পরিকল্পক-পরিচালক হানিফ সংকেত ছিলেন তার বন্ধু। আজ এন্ড্রু কিশোর পঞ্চম প্রয়াণ দিবস।

আজ এই প্রয়াণ দিবসে বন্ধুকে ভোলেননি হানিফ সংকেত। এন্ড্রু কিশোরকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করেছেন স্মৃতিচারণ।

ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘আজ বন্ধু এন্ড্রু কিশোরের পঞ্চম প্রয়াণ দিবস। যার কাছে গানই ছিলো জীবন-মরণ, গানই ছিলো প্রাণ। এই গানের জন্যই মানুষ তাঁকে ভালোবাসতো, দিয়েছিল ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ উপাধি।

তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিশোর যেমন প্রাণ খুলে দরাজ গলায় গাইতে পারতো, তেমনি সবার সঙ্গে প্রাণ খুলে মিশতে পারতো। কিশোরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে। একসঙ্গে অনেক আড্ডা দিয়েছি, বহুবার বিদেশে গেছি, এক সঙ্গে থেকেছি। কিশোর ছিল ইত্যাদির প্রায় নিয়মিত শিল্পী।’

সব শেষে তিনি লিখেছেন, ‘একজন আদর্শ শিল্পী, একজন মানবিক মানুষ ছিলো কিশোর। গানের মাধ্যমেই এন্ড্রু কিশোর বেঁচে থাকবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। বন্ধু ভুলিনি তোমায়-ভুলব না-ভুলতে পারবো না। ভালো থেকো, শান্তিতে থেকো।

ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করে ২০২০ সালের ৬ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা ৫৯ মিনিটে রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এন্ড্রু কিশোর। প্রায় ১৫ হাজার গানে কণ্ঠ দেওয়া এই শিল্পী ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রেস্ট হাউজে ‘নারীসহ’ ওসিকে আটকে ‘চাঁদাবাজির’ অভিযোগ
  • রেস্ট হাউজে ‘নারীসহ ওসিকে আটকে চাঁদাবাজির’ অভিযোগ
  • রেস্ট হাউজে ‘ওসিসহ নারীকে আটকে চাঁদাবাজির’ অভিযোগ
  • কেন এমবাপ্পেকে রেখে চলে গেল রিয়াল মাদ্রিদের বাস
  • বন্ধু ভুলিনি তোমায়, ভুলতেও পারবো না: হানিফ সংকেত
  • নারীশিক্ষা বনাম বাল্যবিয়ে
  • তারা কখনও সরকারি কর্মকর্তা, কখনও শীর্ষ সন্ত্রাসী
  • বাংলাদেশে ‘ইংলিশ মাস্টারক্লাস’
  • বাংলাদেশে ইংলিশ মাস্টারক্লাস
  • হিন্দু ব্রাহ্মণ হয়েও কেন ইমাম হোসাইনকে ভালোবাসেন তারা