আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা
Published: 22nd, May 2025 GMT
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আশ্বাস এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আস্থা রেখে অনশন ভাঙলেন গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউজিসি প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ ও সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান।
গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা ইউজিসির সামনে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শেষে গত বুধবার অনশন শুরু করেছিলেন। এর আগে এই দাবিতে ‘লংমার্চ টু ইউজিসি’ কর্মসূচির আওতায় গত সোমবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে রওনা হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সেদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা ইউজিসির সামনে অবস্থান নেন। এরই মধ্যে গতকাল ইউজিসির পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জানানো হয়, গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ অবস্থায় এখন দুই দিন অবস্থান এবং দুইদিন অনশন কর্মসূচি শেষে আজ তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন ফখরুল হাসান ফয়সাল আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হবে বলে তাঁরা আশা করছিলেন। আজ সেটি সম্ভব হয়নি বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ইউজিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় উত্থাপন করবে। এ অবস্থায় ইউজিসির আশ্বাসে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপর আস্থা রেখে তাঁরা অনশন ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুননাম বদলের দাবিতে এবার অনশনে গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা২১ মে ২০২৫আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এখনকার দাবি হলো, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে তাঁদের প্রস্তাবিত চারটি নামের মধ্য থেকে একটি চূড়ান্ত করতে হবে। তাঁদের দেওয়া চারটি নাম হলো-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডভান্সড টেকনোলজি এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবিতে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আন্দোলন করছেন গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুনশিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা, নেই পরিকল্পিত সমাধান ২১ মে ২০২৫২০১৬ সালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রতিষ্ঠিত বিশেষায়িত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নাম ছিল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ’। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গত ফেব্রুয়ারি মাসে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি করেছে। গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামকরণের পর থেকেই ক্ষুব্ধ হন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা প্রথমে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। দাবি আদায়ে স্মারকলিপি, মানববন্ধন, শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা, ‘রেল ব্লকেড’ ‘শাটডাউন’সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এর মধ্যে আশ্বাসের ভিত্তিতে কখনো কখনো কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও এখনো দাবি পূরণ হয়নি।
আরও পড়ুনআন্দোলনের মুখে গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ২১ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন গ জ প র ড জ ট ল ইউন ভ র স ট র ল দ শ ইউন ভ র স ট অনশন ভ ঙ ইউজ স র অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
টেক্সাসে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৮, নিখোঁজ আরও ৪১
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে হঠাৎ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৮ জনে পৌঁছেছে। আরও ৪১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। গত শুক্রবার অঙ্গরাজ্যের স্যান অ্যান্টোনিও শহরে তুমুল বৃষ্টির কারণে গুয়াদালুপ নদীর পানি বেড়ে এ বন্যা হয়।
বন্যায় কের কাউন্টির নদীতীরবর্তী গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প মিস্টিক প্লাবিত হয়। ওই কাউন্টিতে ২৮ শিশুসহ ৬৮ জন মারা গেছেন। ওই ক্যাম্পের ১০টি মেয়ে ও ১ জন তত্ত্বাবধায়ক এখনো নিখোঁজ।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় আরও ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে পারে। কাদা ও ধ্বংসাবশেষের মধ্যে উদ্ধারকাজ চালাতে গিয়ে বিষধর সাপের কবলে পড়ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
কের কাউন্টিতে যাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও ১০টি শিশুর এখনো আনুষ্ঠানিক পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
গতকাল রোববার টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বলেন, ‘প্রত্যেক নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে কর্তৃপক্ষ কোনো প্রচেষ্টাই বাদ রাখবে না।’
শুক্রবার ভোর হওয়ার আগেই এ বিপর্যয় দেখা দেয়। তখন মাত্র ৪৫ মিনিটে নদীর পানি ২৬ ফুট (৮ মিটার) বেড়ে যায়। এ সময় ক্যাম্প মিস্টিকের বেশির ভাগ শিশু ঘুমিয়ে ছিল। বন্যা আঘাত হানার সময় ক্যাম্পটিতে আনুমানিক ৭৫০ জন মেয়ে ছিল, যাদের অধিকাংশকেই নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
বন্যার পানির তোড়ে গাছপালা ভেঙে গেছে, গাড়ি উল্টে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা হেঁটে, ট্রাক চালিয়ে, হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করে ধ্বংসস্তূপের ভেতরে কেউ বেঁচে আছেন কি না, তাঁর খোঁজ করেছেন।
এদিকে গতকাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কের কাউন্টির জন্য ‘বড় দুর্যোগ পরিস্থিতি’ ঘোষণা করেন। ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিকে (এফইএমএ) সেখানে সক্রিয় করেন। তিনি জানান, সম্ভবত আগামী শুক্রবার তিনি নিজেই টেক্সাস সফরে যাবেন।
এ দুর্যোগে দুর্গত মানুষের পাশে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। কেউ খাবার রান্না করছেন, কেউ আশ্রয় দিচ্ছেন, কেউবা ত্রাণসামগ্রী জোগাড় করছেন।