গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষ কষ্টে আছে
Published: 22nd, June 2025 GMT
রোজা থেকে ঈদুল আজহা পর্যন্ত বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল থাকায় গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে ছিলেন। ঈদুল আজহার সপ্তাহখানেক পার না হতেই চালের দাম ফের বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে অস্বস্তি ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ধরনভেদে প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও মিরপুর-৬ কাঁচাবাজারের খুচরা বিক্রেতারা জানান, এই সময়ে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ছয় থেকে আট টাকা বেড়েছে। আর মোটা ও মাঝারি চালের কেজিতে বেড়েছে দুই-তিন টাকা।
দেশে ধান-চালের অন্যতম উৎপাদনস্থল নওগাঁ জেলা। সেখানকার চালকলমালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার প্রথম আলোকে বলেন, জিরাশাইল ও কাটারিভোগ ধানের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে জিরাশাইল ধানের দাম মণপ্রতি ১২৫-১৫০ টাকা ও কাটারিভোগ ধানের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে। এর প্রভাবে নওগাঁয় পাইকারিতে প্রতি কেজি চালে এক থেকে তিন টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাধারণত সরবরাহ কম ও চাহিদা বেশি থাকলে চালের দাম বাড়ে। কিন্তু বাজারে প্রচুর চাল থাকার পরও হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে রেকর্ড ২ কোটি ১৪ লাখ টন বোরো ধান উৎপন্ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৯৫ শতাংশের বেশি বোরো ধান কাটা শেষ হলেও কিছু এলাকায় কৃষকেরা ধান কাটছেন।
বাজার বিশ্লেষক ও কৃষি–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও মিলমালিকেরা ধান মজুত করে রেখেছেন এবং এখন কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছেন। তাঁরা ঈদের আগেই কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে গুদামে মজুত করেছেন। এখন নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
সব সময় কৃষকের হাতে যখন ফসল থাকে, মিলমালিক ও মজুতদারেরা কম দামে তাঁদের কাছ থেকে ধান কেনেন। এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। আবার যখন কৃষকের হাত থেকে পণ্য চলে যায়, তখন তাঁরা দাম বাড়িয়ে দেন। সরকার মৌসুমের শুরুতে কৃষকের কাছ থেকে বেশি বেশি ধান চাল কিনলে মিলমালিক ও মজুতদারেরা সুবিধা করতে পারেন না। কৃষকও ভালো দাম পেতে পারেন। সরকার প্রতিবছর ধান ও চাল কেনার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে, তা পূরণ হয় না নানা কারণে। এ ক্ষেত্রে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে।
ইতিমধ্যে মিলমালিক ও আড়তদারদের কাছে যে চাল চলে গেছে, সেটা হয়তো সরকার ফেরত আনতে পারবে না। কিন্তু নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালের সরবরাহ বাড়িয়ে কিংবা বিদেশ থেকে আমদানি করে বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরকারের উচিত হবে খোলাবাজারে চাল বিক্রির পরিমাণ বাড়ানো।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় টিসিবি ও খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত কম দামে যে চাল বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এসব দোকান ও টিসিবির সামনে ক্রেতাদের লম্বা সারি দেখে ধারণা করা যায়, গরিব মানুষ অনেক কষ্টে আছে। তাদের কষ্টটা কোনোভাবে বাড়তে দেওয়া যাবে না। যেকোনো উপায়ে হোক চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতেই হবে। প্রয়োজনে সরকার বিদেশ থেকেও চাল আমদানি বাড়াতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শাহজীবাজার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে আবার অগ্নিকাণ্ড
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজীবাজার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে আবার আগুন লেগেছে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১টার দিকে জাতীয় গ্রিডের ‘টি আর-টু’ ব্রেকারে আগুন লাগে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) উপসহকারী প্রকৌশলী চয়ন কান্তি সেন।
চয়ন কান্তি সেন জানান, দুদিন আগের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রাংশ সোমবার (৪ আগস্ট) সকালে পুরোপুরি মেরামত করা হয়েছিল। দুপুরে আবার আগুন লাগে। এতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ রয়েছে।
৩১ জুলাই সন্ধ্যায় সুইচিং উপকেন্দ্রে বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়িয়ে পড়ে দুটি সার্কিট ব্রেকার ও তিনটি ট্রান্সফরমারে। রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও মেরামতে সময় লাগে প্রায় দুই দিন। এতে জেলার পাঁচ লাখ গ্রাহকের মধ্যে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়, যেখানে প্রতিদিন প্রয়োজন ১২০ মেগাওয়াট। শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয় ২ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে। ঘটনার তদন্তে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মফিজুল ইসলামকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে।
নতুন অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপসহকারী প্রকৌশলী খাইরুল ইসলাম জানান, দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
ঢাকা/মামুন/বকুল