মুখ্য সমন্বয়কের পদ ছাড়ার খবরের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘পদত্যাগের বিষয়টি গুজব। আমি এনসিপির সঙ্গেই আছি। সরকার গঠন করা পর্যন্ত এনসিপির সঙ্গেই থাকব।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির সমন্বয় সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ‘মুখ্য সমন্বয়কের পদ ছাড়লেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী’ এমন খবর প্রকাশ করে কয়েকটি গণমাধ্যম। ওই খবরে বলা হয়, ‘এনসিপির মুখ্য সমন্বয়কের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। দুই সপ্তাহ আগে দলের আহ্বায়ক এবং সদস্যসচিব বরাবর এ পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তবে দল এখনো তাঁর পদত্যাগপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেনি।’

এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। পরে বৃহস্পতিবার রাতেই এনসিপির দপ্তর সম্পাদক সালেহ উদ্দিন সিফাত পদত্যাগের খবরটি সঠিক নয় বলে এক বার্তায় জানান। তবে এ বিষয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল রাতে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, সকালে উঠে দেখলাম রাতভর আমার পদত্যাগের গুজব চলেছে। অনেকেই রাতে আমাকে ফোন করেছেন, সকালে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।

রাতেই আমাদের দলের দপ্তর সেল থেকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য হলো, আমি এনসিপির সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। সরকার গঠন করা পর্যন্ত এনসিপির সঙ্গেই থাকব।’

এ ধরনের সংবাদ গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা কমিয়ে দেবে উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘দেশপ্রেমিক সাংবাদিকদের কাছে আহ্বান রাখব, আপনারা কোনো গুজবে প্রভাবিত হয়ে সংবাদ পরিবেশন করবেন না। একটি সংবাদ কোথাও হলে সেটি যাচাই–বাছাই করে তারপর আরেকটি সংবাদ করবেন। যাঁরা এ ধরনের অপসাংবাদিকতা করেন তাঁদের আহ্বান জানাই, আপনাদের বোধোদয় হোক।

সুস্থ সাংবাদিকতার পথে আমাদের যাত্রা করতে হবে। এমনিতেই গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা চলে যাচ্ছে। এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ করা হলে মানুষের আস্থা আরও কমে যাবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন স র দ দ ন প টওয় র ম খ য সমন বয়ক পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ভবিষ্যৎ কী

স্বাধীনতার পরপর নবীন দেশের শিল্পায়ন ও ব্যবসা–বাণিজ্যের সম্প্রসারণে যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এক মহিরুহ ভূমিকা পালন করে। ধীরে ধীরে এগুলো নির্দেশিত ঋণ, সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত দুষ্ট চক্রের চাপ, আধুনিক সেবাপণ্য আর সঠিক প্রযুক্তি ব্যবহারের অভাবে অনেকটা মান্ধাতার আমলের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। অনেকটা যেন ‘সরকারকা মাল দরিয়ামে ঢাল’।

প্রতিটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকই বছরের পর বছর বিরাট ক্ষতি, দুর্নীতি, স্বল্প পুঁজি আর অদক্ষতার প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। শুধু সরকারি মালিকানার দোহাই তুলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তাদের পুনর্মূলধনায়নের প্রক্রিয়াও অব্যাহত থাকে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্বে পরিচালিত বৃহৎ মন্দ ঋণ পুনর্গঠন কমিটিতেও প্রায় নিয়মিত যোগদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষে ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। ঋণ দুর্বৃত্তায়নের চরম কিছু নিদর্শন দেখেছি এসব ব্যাংকে। বিনিময়ে যে টেবিলের নিচ দিয়ে মোটা টাকা লেনদেন হয়েছে সন্দেহ নেই। বিনিময়ে সরকারকে বছরের পর বছর গুনতে হয়েছে বিরাট অঙ্কের ক্ষতি। সাধারণ জনগণের উন্নয়নের টাকা ধ্বংস হয়েছে।

আরও পড়ুনদুর্বল+দুর্বল=আরও দুর্বল, নাকি সবল ব্যাংক১৭ নভেম্বর ২০২৫

প্রায় সবাই জানি, গত দেড় দশকজুড়ে অনিয়ম-দুর্নীতি, রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনার প্রভাবে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর অবস্থা এখন খুবই নাজুক। বিপুল খেলাপি ঋণের চাপ, মূলধন ও সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতি, তারল্যসংকট, ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতাসহ বহুমুখী সংকটে রয়েছে এ ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং সরকারি চালান আদায় ও সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোও যুক্ত হওয়ায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব ও কাজ এখন একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। কাজ কমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অলস সময় পার করছেন।

অন্তর্বর্তী সরকার বেসরকারি দুর্বল ব্যাংকগুলো সংস্কারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও সরকারি ব্যাংকগুলোর সংস্কারে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারি ব্যাংকগুলো পুরোনো ধাঁচেই চলছে, যা আর্থিক খাতের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। সংস্কারের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম গতিশীল করা প্রয়োজন। যদি এখনই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন, একীভূতকরণ ও কার্যকর সংস্কার শুরু না হয়, তবে এসব ব্যাংক অর্থনীতিকে সহায়তা করার পরিবর্তে একসময় অর্থনীতির জন্য আরও বড় বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।

আমরা প্রায় সবাই জানি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বর্তমান সংকটের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্নীতি। গত দেড় দশকে, সত্যি বললে তার চেয়ে বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শীর্ষ পদগুলোয় যেসব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তার একটি বড় অংশই রাজনৈতিক প্রভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোয় নজিরবিহীন লুটপাট ঘটেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে কেবল রাষ্ট্রায়ত্ত প্রধান চার ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৬১ কোটি টাকায় ঠেকেছে। বিতরণ করা ঋণের ৪৮ দশমিক ১০ শতাংশই এখন খেলাপি। আবার খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণেও ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাংকগুলো। সোনালী ব্যাংক ছাড়া বাকি তিন ব্যাংকের সঞ্চিতি ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৮ হাজার ৩৬ কোটি টাকা।

এই ছয় মাসে জনতা ব্যাংক আবার ২ হাজার ৭২ কোটি টাকার নিট লোকসানও গুনেছে। এর বাইরে বেসিক ব্যাংকের লোকসান ও ক্ষত আরও বেশি গভীর হয়েছে। ব্যাংকটির ঋণের ৮ হাজার ৯৩০ কোটি টাকাই খেলাপি, যা বিতরণ করা ঋণের ৬৯ দশমিক ২০ শতাংশ। আর বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকেরও (বিডিবিএল) বিতরণ করা ঋণের ৪২ দশমিক ১০ শতাংশ খেলাপির খাতায় চলে গেছে।

বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের কাছাকাছি খেলাপি হওয়ায় সেটি ব্যাংকের মূলধন ও আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতিও যথাযথভাবে রাখা হচ্ছে না। এটি ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার প্রমাণ। এতে ব্যাংকগুলোর আর্থিক নিরাপত্তা দুর্বল হয়ে পড়েছে। সঞ্চিতি ঘাটতি ও ঋণ বিতরণের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে যে এ ব্যাংকগুলো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে গতিশীল করার পরিবর্তে এখন নিজেরাই টিকে থাকার লড়াই করছে।

আমরা প্রায় সবাই জানি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বর্তমান সংকটের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ রাজনৈতিক প্রভাব ও দুর্নীতি। গত দেড় দশকে, সত্যি বললে তার চেয়ে বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শীর্ষ পদগুলোয় যেসব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তার একটি বড় অংশই রাজনৈতিক প্রভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোয় নজিরবিহীন লুটপাট ঘটেছে। পত্রিকান্তরে জানা গেছে, জনতা ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে দেশের অলিগার্ক শ্রেণিকে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে। সে ঋণ এখন আর আদায় করা যাচ্ছে না।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের নিয়মিত কাজ কমে যাওয়ার বাস্তবতা তাদের ঋণ বিতরণের তথ্যেই স্পষ্ট। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী—এ চার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রধান ব্যাংকের মোট ঋণ স্থিতি ছিল ৩ লাখ ১২ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। কিন্তু পরবর্তী ছয় মাসে ঋণ বিতরণ বাড়ার পরিবর্তে উল্টো ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা কমে গেছে। ফলে চলতি বছরের জুন শেষে তাদের ঋণ স্থিতি নেমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ২২৬ কোটি টাকায়।

শুধু এই চার ব্যাংকই নয়, বেসিক, বিকেবি, রাকাব ও প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা দেখা গেছে। ঋণ স্থিতি না বেড়ে; বরং সংকুচিত হয়েছে। এ পরিস্থিতি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম সংকুচিত হওয়ার একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে। যদিও এর পেছনে বৃহৎ মন্দ ঋণ বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনাও কাজ করেছে।

আরও পড়ুনরাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের খেলাপি ঋণের সমাধান কী০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

গত বছরের অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সংস্কারে বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়। দেশের ১৪টির বেশি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয় এবং এগুলোর ব্যবস্থাপনায়ও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। এর মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করে একটি নতুন ব্যাংকে রূপান্তরের কাজ শুরু হয়েছে। দেশের ১১টি ব্যাংকে ফরেনসিক অডিট চলমান। অথচ অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ঘিরে কোনো সংস্কার উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। এ ব্যাংকগুলোয় সংঘটিত অনিয়ম-দুর্নীতি উদ্‌ঘাটন ও ঋণের প্রকৃত মান নির্ণয়ে ফরেনসিক অডিটের উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল। এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো উদ্যোগও দেখা যায়নি।

উল্লিখিত চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ছাড়াও বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অবস্থা আরও নাজুক। ২০০৯ সাল পরবর্তী সময়ে প্রথম লুণ্ঠনের শিকার হয় বেসিক ব্যাংক। দেশের ব্যাংক খাতকে শক্তিশালী করতে হলে একীভূতকরণের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। ব্যাংকগুলোর প্রশাসনিক যে বিশৃঙ্খলা রয়েছে, তা দূর করতে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ ও পদোন্নতি নিশ্চিত করা জরুরি।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় সুপারনিউমারারি পদোন্নতি সংস্কৃতি চালু রয়েছে। এ সংস্কৃতি বন্ধ করা দরকার। অতীতের দুর্নীতি ও লুণ্ঠনে দায়ীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। দায়মুক্তির সংস্কৃতি ভাঙতে হবে। ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক বাস্তবতা বিবেচনা করতে হবে। শুধু সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ নয়; বরং উৎপাদনশীল খাত ও এসএমই খাতে ঋণপ্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।

বছরের পর বছর লোকসান দিচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি ও খেলাপির চিত্রও উদ্বেগজনক। একই অবস্থা রাকাবেরও। সরকারের পক্ষ থেকে কয়েক বছর ধরেই বিকেবি ও রাকাবকে একীভূত করার কথা বলা হচ্ছে। একীভূতকরণ হলে প্রশাসনিক ব্যয় কমবে, ঋণ ব্যবস্থাপনা একক হবে এবং সেবার জটিলতা দূর হবে। তবে এ প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি মূলত আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে। অথচ দুটিই সরকারি ব্যাংক ও দুটি ব্যাংকের উদ্দেশ্য একই।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে একীভূতকরণ করার আগে সরকার দুর্বল বিকেবি ও রাকাবকে একীভূতকরণের মাধ্যমে ব্যাংক কমানোর উদ্যোগ শুরু করতে পারত। কিন্তু আমরা দেখছি, অন্তর্বর্তী সরকার সে পথে হাঁটেনি। প্রয়োজন ছিল এ দুই ব্যাংককে একীভূত করে ঋণ বিতরণ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনা। প্রকৃত অর্থেই কৃষক ও কৃষির জন্য ব্যাংকটিকে কাজে লাগানো।

সরকারি ব্যাংক খাত রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। কিন্তু এ সম্পদ যদি ধারাবাহিক লুটপাট, অদক্ষতা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে দেশের সার্বিক অর্থনীতিই বড় ঝুঁকিতে পড়বে। ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ছাড়া বিনিয়োগ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি কিংবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি—কোনোটাই সম্ভব নয়। এ অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজন অবিলম্বে সংস্কার। 

বেশি দূর যেতে হবে না, আমাদের পাশের ভারত, শ্রীলঙ্কা, এমনকি পাকিস্তানেও সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে নেতৃত্ব, এমনকি পর্ষদ পরিবর্তন, সেবাপণ্যের মান বাড়ানো আর প্রতিযোগিতাশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে লাভজনক করার প্রক্রিয়া যথেষ্ট কাজ করেছে।

মামুন রশীদ ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক

সম্পর্কিত নিবন্ধ