বালিশ চাপা দিয়ে শিশুকে হত্যাচেষ্টা, আটক গৃহবধূ
Published: 22nd, June 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শিশু মেঘলা খাতুনকে (৯) বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে এক গৃহবধূকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার দুপুরে দেশিগ্রাম ইউনিয়নের কুমাল্লু গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মেঘলার বাবা মো. মুনসুর আলী জানান, জমি নিয়ে প্রতিবেশী নাজমুল হকের পরিবারের সঙ্গে আমাদের বিরোধ রয়েছে। এর জের ধরে তার স্ত্রী উমায়া খাতুন ফাতেমা আমার মেয়েকে একা পেয়ে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। গোঙানির শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ এসে ফাতেমাকে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে নাজমুল হক বলেন, মনসুরের পরিবারের সঙ্গে আমাদের বিরোধ রয়েছে। আমাদের ফাঁসাতে তারা নাটক সাজিয়েছে। এটা সাজানো ষড়যন্ত্র।
তাড়াশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুপু কর বলেন, জরুরি জাতীয় সেবা ৯৯৯ ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শিশুটির পরিবার ও প্রতিবেশীদের কথা শুনে এক গৃহবধূ ফাতেমাকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ হত য চ ষ ট পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
২৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া রাফিয়ার ক্লাস করা হলো না
এই তো সেদিন, বিভাগের ব্যাচের মেসেঞ্জার গ্রুপে সবার সামনে সগৌরবে নিজের পরিচয় দিলেন। সবাই মিলে ১৭ আগস্ট ক্লাস করবেন ভেবে কত আনন্দ ছিল তার মনে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস, নতুন বন্ধু, নতুন পরিবেশ সবকিছুর জন্যই মুখিয়ে ছিল মেয়েটি। কিন্তু সব প্রস্তুতি, অপেক্ষা আর স্বপ্ন থমকে দাঁড়াল একটি দুঃসংবাদের ভারে।
তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী রাফিয়া সুলতানা কুইন। বুধবার (৬ আগস্ট) রাতের অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত হয়ে চিরতরে তার পথচলা থেমে যায়।
রাফিয়া সুলতানা কুইন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা আব্দুল খালেক আহমেদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন কুইন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিছু সময়ের জন্য অজ্ঞান হয়ে পড়লে চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। পরে বুধবার রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রাফিয়া কুইন ভোলাহাট সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। অসাধারণ ফলাফল এবং মেধার ভিত্তিতে তিনি দেশের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯টি ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পান।
রাফিয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’ ইউনিটে ৪৫২তম, ‘বি’ ইউনিটে ৪৭তম এবং ‘সি’ ইউনিটে ৪৩তম হয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬তম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮৩৯তম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটে ২২০তম এবং ‘ডি’ ইউনিটে ২৫৬তম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬২৯তম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০তম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৮তম হয়ে উত্তীর্ণ হন।
এছাড়া গুচ্ছভুক্ত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫৮তম স্থান অধিকার করে এই মেধাবী শিক্ষার্থী। সবশেষে নিজের পছন্দের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন রাফিয়া। তবে ক্লাস শুরুর আগেই চিরবিদায় নিতে হলো তাকে।
ভোলাহাটে বাসা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. রেজাউল করিম ফেসবুকে লিখেছেন, “একটা মৃত্যুর সংবাদ শুনে আমি ট্রমার মধ্যে চলে গেছি। এটা থেকে কিছুতেই বের হতে পারছি না। আহ্ জীবনের পথ কত ছোট, মৃত্যু কত নিকটে! রাফিয়া সুলতানা কুইন এ বছর ২০২৪-২৫ সেশনে রাবির আইবিএ’তে ভর্তি হয়েছিল। অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল (৫ আগস্ট) থেকে আইসিইউতে ভর্তি ছিল। আর আজ (৬ আগস্ট) আনুমানিক ৯টার সময় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়েছে।”
তিনি আরো লিখেছেন, “জীবন কত নিষ্ঠুর, ফুল ফোটার আগেই ঝড়িয়ে দেয়। কত স্বপ্ন, কত উদ্দীপনা নিয়ে ক্যাম্পাস আসার কথা ছিল তার। অথচ আজ সে আর নেই। কোথাও নেই। তার স্বপ্নে নেই, বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণে নেই, বাস্তবেও আর নেই।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী