রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় নজরুল বেপারী (৩২) নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। 

সোমবার (২৩ জুন) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লী সংলগ্ন মুক্তি মহিলা সমিতির অফিসের সামনে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত নজরুল বেপারী গোয়ালন্দ উপজেলার ঈমানখান পাড়ার মৃত শাহাজউদ্দিন বেপারীর ছেলে। তিনি দীর্ঘদিনযাবত দৌলতদিয়া যৌনপল্লী এলাকায় পান সিগারেটের দোকান বসিয়ে ব্যবসা করতেন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, নিহত নজরুলের মাথা, ঘাড়, পিঠ, হাত ও পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, ‘‘মরদেহ উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।  হত্যার কারণ উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’’ 

এদিকে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডে স্থানীয়দের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।

ঢাকা/রবিউল/টিপু 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ লতদ য়

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেট-৪ আসনে হাকিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি, বিএনপির একাংশের মিছিল

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরীকে সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও জৈন্তাপুর) আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ করেছেন স্থানীয় বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নির্বাচনী এলাকার অন্তর্ভুক্ত তিনটি উপজেলার অন্তত ১৫টি স্থানে পৃথকভাবে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ‘মানি না, মানব না; লোকাল ছাড়া মানব না’, ‘মানি না, মানব না; হাকিম ছাড়া মানব না’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। এ ছাড়া বক্তারা ‘বহিরাগত প্রার্থী’র বদলে বিএনপির ‘স্থানীয় প্রার্থী’কে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।

বিএনপি গত সোমবার জাতীয় সংসদের ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। সিলেট জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে সিলেট-৪ ও সিলেট-৫ ছাড়া অন্য চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।

এর মধ্যে সিলেট-১ আসনে প্রার্থী করা হয় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরকে। ওই আসনে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও দলের চেয়ারপারসের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরীও মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন।

সাবেক মেয়র আরিফুলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার দলের উচ্চপর্যায় থেকে আরিফুল হক চৌধুরীকে ঢাকায় জরুরি তলব করা হয়। পরে গত বুধবার রাতে তিনি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর বাসভবনে দেখা করার ডাক পান।
চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করার সময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও আরিফুলের মুঠোফোনে আলাপ হয়। এ সময় চেয়ারপারসন আরিফুলকে সিলেট-৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নির্দেশ দেন।

এসব খবর পেয়ে গতকাল রাত ১১টা থেকে ১২টার দিকে আবদুল হাকিম চৌধুরীর অনুসারীরা তিনটি উপজেলার অন্তত ১৫টি স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।
হাকিমের একাধিক অনুসারী জানান, গতকাল মধ্যরাতে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর, তোয়াকুলবাজার, ফতেপুর, ডৌবাড়ি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাড়য়াবাজারসহ অন্তত ১৫টি স্থানে বিক্ষোভ মিছিল হয়। এ ছাড়া একইভাবে জৈন্তাপুর উপজেলায়ও একই কর্মসূচি পালিত হয়। এসব কর্মসূচি থেকে আবদুল হাকিম চৌধুরীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এই আসনে হাকিমের বিকল্প কেউ প্রার্থী হলে অনেক নেতা-কর্মী সেটা মানবেন না বলে বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা দাবি করেছেন।

আবদুল হাকিম চৌধুরী ১৯৯২ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বাবা উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ছিলেন। তিনি উপজেলা যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন। জেলা বিএনপির সাবেক এই সহসভাপতি এখন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা হিসেবে আছেন।

গতকাল দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে যোগাযোগ করলে আবদুল হাকিম চৌধুরী বিভিন্ন স্থানে তাঁর সমর্থনে মিছিল, সমাবেশের বিষয়টি জানতে পেরেছেন বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘দল যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা মাথা পেতে নেব। তবে গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হিসেবে এখন পর্যন্ত দলের সঙ্গে যুক্ত আছি, দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে দুবার উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিইনি। সিলেট-৪ আসনের ভোটাররা মনে করেন এখানে জামায়াতের প্রার্থীকে পরাজিত করতে হলে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আমাকে প্রয়োজন। আশা করি, দল প্রার্থী ঘোষণা করার আগে এটা বিবেচনায় রাখবে।’

আরও পড়ুনসাবেক মেয়র আরিফুলকে সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী করছে বিএনপি২২ ঘণ্টা আগেদল যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা মাথা পেতে নেব। সিলেট-৪ আসনের ভোটাররা মনে করেন, এখানে জামায়াতের প্রার্থীকে পরাজিত করতে হলে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আমাকে প্রয়োজন।আবদুল হাকিম চৌধুরী

এদিকে ঢাকায় দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে আরিফুল হক চৌধুরী গতকাল সন্ধ্যায় সিলেটে ফেরেন। এ সময় ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাজারো কর্মী-সমর্থকেরা তাঁকে স্বাগত জানান। পরে নগরের কুমারপাড়া এলাকায় নিজ বাসায় ফিরে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।

সিলেট নগরের রাজনীতির সঙ্গে এত দিন যুক্ত ছিলেন, অথচ এখন আগামী তিন মাসে নতুন তিনটি উপজেলার মানুষের কাছে যেতে হবে, এটি আপনি কি কাভার করতে পারবেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে গণমাধ্যকর্মীদের আরিফুল হক বলেন, ‘তিন মাস লাগবে না। আগামী তিন দিনেই সিলেট-৪ আসনে আওয়াজ উঠে যাবে। আমি কাজে বিশ্বাসী। কাজ দিয়েই নিজেকে জনগণের কাছে প্রমাণ করব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ