ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা সঞ্চয়পত্রে হঠাৎ সরকারের ঋণ বেড়েছে। গত এপ্রিলে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে। যদিও আগের মাসগুলোতে অনেক কমায় চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১০ মাসে ৭ হাজার ৪৩১ কোটি টাকার ঋণ কমেছে বলে সঞ্চয় পরিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় তিন বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমেছে। এর মধ্যে ২০২২ সাল থেকে ব্যাংক খাতে ব্যাপক তারল্য সংকট সৃষ্টি হওয়ায় আমানতের সুদহার বেড়ে যায়। ট্রেজারি বিল, বন্ডের সুদহারও অনেক বেড়েছে। ট্রেজারি বিল, বন্ডে বেশ কিছুদিন ধরে সুদহার রয়েছে ১২ শতাংশের আশপাশে। আবার ট্রেজারি বিল, বন্ডের মুনাফার ওপর কোনো কর কাটা হয় না। এখানে যে কোনো পরিমাণের বিনিয়োগ করা যায়। সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর ৫ থেকে ১০ শতাংশ কর কাটা হয়। এসব কারণে সাম্প্রতিক সময়ে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ কমেছিল। এর মধ্যে এপ্রিলে হঠাৎ বৃদ্ধির একটি বড় কারণ হতে পারে ওই মাসে সুদ পরিশোধের চাপ কম ছিল।

বাজেট ঘাটতি মেটাতে প্রতিবছরই সরকার অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎস থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে। আগামী অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ১৪ হাজার কোটি টাকায় নামানো হয়। সঞ্চয়পত্রে ঋণ নেতিবাচক থাকার পরও সংশোধিত বাজেটে এসে এই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মূলত বাজেটের হিসাব মেলানোর জন্য।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি অর্থবছরই শুধু এমন করা হয়েছে তা নয়। চলতি অর্থবছরসহ টানা তিন অর্থবছর ধরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ না বেড়ে কমছে। গত অর্থবছর সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ কমেছিল ২১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে কমেছিল ৩ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ পেয়েছিল ১৯ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। গত এপ্রিল পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা।

রাজস্ব আয়ে আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি নেই। গত এপ্রিল পর্যন্ত রাজস্ব আয় হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা মাত্র ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি। আর চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার অনেক কম। এ সময়ে বিদেশি ঋণ ও অনুদানও কমেছে। যে কারণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নির্ভরতা বাড়তে শুরু করেছে। অবশ্য এখনও তা লক্ষ্যমাত্রার নিচে রয়েছে।
আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার কমিয়ে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে বৈদেশিক উৎস থেকে ৯৬ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে। আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকায় নামানো হয়। চলতি অর্থবছরের ২১ মে পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ৬০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিগত সরকার দেশি-বিদেশি উৎসে মোট ১৮ লাখ কোটি টাকার ঋণ রেখে গেছে। এসব ঋণের সুদ পরিশোধে সরকারের প্রচুর ব্যয় হচ্ছে। এ ছাড়া পরিচালন ব্যয়ও প্রতিবছর বেড়ে থাকে। অথচ সে হারে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। এ রকম অবস্থায় সরকার এখন কম সুদের বিদেশি ঋণ নেওয়ায় জোর দিয়েছে। চলতি মাসে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার মতো পেতে যাচ্ছে সরকার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে যা শক্তিশালী করবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র র ঋণ ক র ঋণ কম ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষা, ফরম পূরণের সময় বাড়ল ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষার ফরম পূরণের প্রক্রিয়ার সময় ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

ফরম পূরণের বর্ধিত সময়—

১. আবেদন ফরম পূরণের বর্ধিত তারিখ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫।

২. ডাটা এন্ট্রি নিশ্চয়নের শেষ তারিখ: ২৮ সেপ্টেম্বর ১১:৫৯ মিনিট পর্যন্ত।

৩. সোনালী সেবার মাধ্যমে টাকা জমার শেষ তারিখ: ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

যারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে—

২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত, ২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১ ও ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের অনিয়মিত ও গ্রেড উন্নয়ন এবং ২০১৭-২০১৮ ও ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের শুধুমাত্র Promoted শিক্ষার্থীরা ‘F’ গ্রেড পাওয়া কোর্সে ২০২৪ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।

নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য—

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে রেজিস্ট্রেশন করা অনার্স কোর্সের সকল ছাত্রছাত্রী ২০২৩ সালের অনার্স প্রথম বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে Promoted হয়ে ২০২৪ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের কোর্স সম্পন্ন করেছে তারা নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে অনার্স কোর্সের সিলেবাস ও সংশোধিত রেগুলেশন অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।

আরও পড়ুনআয়ারল্যান্ড সরকারের বৃত্তি: মাস্টার্স ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ৮ ঘণ্টা আগেঅনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য—

২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১ ও ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের যেসব শিক্ষার্থী অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে Not Promoted হয়েছে অথবা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি ওই সব শিক্ষার্থী অনিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে ২০২৪ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। Not Promoted শিক্ষার্থীকে আগের বছরের পাস করা কোর্সের পরীক্ষা দিতে হবে না। তবে যারা ২০২৩ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে প্রথমবারের মতো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ‘C’ বা ‘D’ গ্রেড পেয়েছে শুধুমাত্র তারাই ২০২৪ সালের পরীক্ষায় উচ্চতর গ্রেডে উন্নীত করার জন্য পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবে সর্বোচ্চ দুটি কোর্সে এবং ‘F’ গ্রেড প্রাপ্ত সব কোর্সে পরীক্ষা দিতে হবে।

# বিস্তারিত তথ্য জানতে ওয়েবসাইট

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে ২ লাখ টাকার প্রশিক্ষণ, নন-আইটি স্নাতক শিক্ষার্থীদের সুযোগ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২১ দিনে প্রবাসী আয় ছাড়াল ২ বিলিয়ন ডলার
  • সঞ্চয়পত্র কেনাবেচার আলাদা বাজার তৈরির পরামর্শ দিলেন গভর্নর
  • নারায়ণগঞ্জে ভাগাড় থেকে ৫ বস্তা এনআইডি উদ্ধার, জিডি
  • দেশের বাজারের চেয়ে কম দরে ভারতে কীভাবে ইলিশ রপ্তানি হচ্ছে
  • দুই মাসে এনবিআরের রাজস্ব ঘাটতি ৬৫৭৭ কোটি টাকা
  • পরীক্ষায় নকল করতে গিয়ে ধরা ঢাবি হল সংসদ নেতাসহ ৬ শিক্ষার্থী
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষা, ফরম পূরণের সময় বাড়ল ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত
  • রাকসু নির্বাচনে এক বিভাগ থেকেই ভিপিসহ ২২ প্রার্থী
  • বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গন: রাশিয়া কেন নিষিদ্ধ, ইসরায়েল কেন নয়