পাট রপ্তানিকারকরা উদ্বিগ্ন বাজার হারানোর শঙ্কা
Published: 28th, June 2025 GMT
স্থলপথ দিয়ে বাংলাদেশের পাট ও পাটপণ্য আমদানিতে ভারতীয় নিষেধাজ্ঞায় এ খাতের রপ্তানি ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। সমুদ্রপথে পাট ও পাটপণ্য রপ্তানিতে ব্যয় বেশি। সময়ও বেশি লাগে। সমুদ্রপথে পাট ও পাটপণ্যের মতো ভারী পণ্য রপ্তানি লাভজনক নয়। সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ের সুবিধায় বাংলাদেশের এ ধরনের পণ্যের ৯৯ শতাংশই স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়ে থাকে। এ সুবিধায় দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পাট ও পাটপণ্যের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার ভারত।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাট ও পাটপণ্যের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৫ কোটি ৯৪ লাখ ডলার বা ১ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকার। এর মধ্যে স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছে ১৪ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের পণ্য।
গত শুক্রবার ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে কাঁচা পাট, পাটের রোল, পাটের সুতা ও বিশেষ ধরনের কাপড় আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির কথা জানানো হয়। স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি নিষেধাজ্ঞা দিলেও বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের এসব পণ্য ভারতে আমদানির সুযোগ রাখা হয়। ওইদিন থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
জানতে চাইলে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সংগঠনের সভাপতি ও ক্রিয়েশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল করিম মুন্না গতকাল সমকালকে বলেন, হঠাৎ করে ভারতের এ সিদ্ধান্তে পাটপণ্যের রপ্তানিতে একটা ধাক্কা লাগবে। কারণ, বাংলাদেশের পাটপণ্যের ভারতীয় আমদানিকারকরা মূলত কলকাতাভিত্তিক। স্থলপথে সহজেই কলকাতায় পণ্য পৌঁছানোর সুবিধা দুই দেশের জন্যই লাভজনক ছিল। এখন সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দরে পণ্য পৌঁছানো ও সেখান থেকে আবার কলকাতায় নিয়ে আসতে হবে। এতে পরিবহন ব্যয় যেমন বাড়বে সময়ও বেশি ব্যয় হবে। এতে পাটপণ্য বাণিজ্যিকভাবে আর লাভজনক হবে না। তবে ইউরোপ এবং আমেরিকার বাজার লক্ষ্য করে পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, মানোন্নয়ন এবং মূল্যসংযোজন করার পরিকল্পনা নেওয়া গেলে কাঁচা পাট রপ্তানির এ প্রতিবন্ধকতা পাট শিল্পের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুফল বয়ে আনতে পারে।
পাট ও পাটপণ্য আমদানিতে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তের প্রভাব এবং করণীয় নিয়ে চিন্তা করছে সরকার। জানতে চাইলে পাটকল করপোরেশনের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.
বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে গত তিন মাসে তিন দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল ভারত। গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দিয়েছিল। এর পর গত ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করে ভারত।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ট ও প টপণ য র কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
লাতিন আমেরিকায় নতুন সামরিক অভিযানের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
লাতিন আমেরিকায় নতুন করে সামরিক অভিযান চালাবে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। তাঁর দাবি, লাতিন আমেরিকা থেকে তৎপরতা চালানো ‘মাদক-সন্ত্রাসীদের’ নির্মূল করতে ওয়াশিংটন নতুন অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সম্প্রতি লাতিন আমেরিকার জলসীমায় সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিছু সামরিক অভিযানও চালিয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চলটিতে স্থলপথে হামলা চালাতে পারে ও এটা হলে সংঘাতের বিস্তৃতি বাড়বে এ আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই নতুন অভিযানের ঘোষণা দিল ওয়াশিংটন।
পিট হেগসেথ এক্সে দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, ‘আজ আমি অপারেশন সাউদার্ন স্পিয়ারের ঘোষণা দিচ্ছি। এ অভিযান আমাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করবে, আমাদের সীমানা থেকে মাদক-সন্ত্রাসীদের নির্মূল করবে। যেসব মাদক আমাদের মানুষকে মেরে ফেলছে, সেসবের প্রবেশও রোধ করবে।’
অভিযানের ঘোষণা দিলেও কবে থেকে শুরু হবে, সে বিষয়ে কিছুই জানাননি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এ ছাড়া এই অভিযানের পরিসর কেমন হবে এবং সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকার জলসীমায় যেসব অভিযান চালিয়েছে, সেসব থেকে এর পার্থক্য কী হবে, তা-ও জানানো হয়নি।
নতুন যে অভিযানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে জানতে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এএফপি। অবশ্য পেন্টাগনের মুখপাত্র মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দেওয়া তথ্য ছাড়া আর কিছু জানাতে রাজি হননি। তবে একাধিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিবিএস এ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় নতুন করে অভিযানের বিস্তারিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে তুলে ধরেছেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। এর মধ্যে স্থলপথে হামলা চালানোর বিষয়টি আছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এদিকে সূত্রের বরাতে রয়টার্স গতকাল শুক্রবার জানায়, ভেনেজুয়েলায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযান কীভাবে চালানো হবে, এ নিয়ে আলোচনা করতে এই সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা তিন দফায় বৈঠক করেন। হোয়াইট হাউসে হওয়া এসব বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, লাতিন আমেরিকায় অভিযান চালাতে যুক্তরাষ্ট্র এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ, পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন মোতায়েন করেছে। পাশাপাশি গত সপ্তাহে ওই অঞ্চলে পাঠিয়েছে মার্কিন বিমানবাহী রণতরি জেরাল্ড ফোর্ড। এই রণতরিতে ৫ হাজার সেনা ও ৭৫টি যুদ্ধবিমান রয়েছে।
মাদক চোরাচালান চক্রের বিরুদ্ধে ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব দিক থেকে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। গত সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ২০টি নৌযানে মার্কিন নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর হামলায় ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।