রাজশাহীতে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের ভিজিডির কার্ড ভাগাভাগি, অভিযোগ জানাল এনসিপি
Published: 3rd, July 2025 GMT
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদে ঝুঁকিপূর্ণ নারী উন্নয়ন কর্মসূচির (ভিজিডি) কার্ড বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য গতকাল বুধবার জাতীয় নাগরিক পাটির (এনসিপি) নেতারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় যান। তবে কোনো সমাধান ছাড়াই তাঁরা ফিরে এসেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বেলপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিডির কার্ড ৪০০টি। এ জন্য আবেদন করেছেন ১ হাজার ৬৫৭ জন। ভিজিডির কার্ডের ২২৫টি নিয়েছে বিএনপি, আর জামায়াতে ইসলামী নিয়েছে ৯০টি। ওই কার্ড ভাগাভাগির খবর জানতে পেরে গতকাল সকালে ইউএনও এ কে এম নূর হোসেনের কার্যালয়ে যান এনসিপির রাজশাহী জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী শামীমা সুলতানাসহ কয়েকজন নেতা–কর্মী।
ইউএনওর কার্যালয় থেকে বেরিয়ে শামীমা সুলতানা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত নাকি বেলপুকুর ইউপির সব কার্ড ভাগাভাগি করে নিয়েছে। চেয়ারম্যানকে চাপ প্রয়োগ করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। তাহলে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? এই জুলাই অভ্যুত্থানের পরও কেন স্বৈরাচারী ব্যবস্থা থাকবে? এ জন্যই আমরা অভিযোগ জানাতে এসেছিলাম।’
শামীমা সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, তারা নিজের দলের জন্য ইউএনওর কার্যালয়ে যাননি। অভিযোগ পেয়েছেন, টাকার বিনিময়ে কার্ড বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। সেটি সমাধানের জন্য গিয়েছিলেন যাতে প্রকৃত দুস্থ মানুষ কার্ড পায়।
এদিকে জোর করে পদত্যাগ ও লাঞ্ছনার ভয়ে গতকাল ইউনিয়ন পরিষদের যাননি চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্যরা যাচাই-বাছাই করে তালিকা ইউনিয়ন কমিটিতে আনার কথা। ইউনিয়ন কমিটি এই তালিকা উপজেলা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠাবে। কিন্তু আমরা সেটা পারিনি। কয়েক দিন ধরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা এসে তালিকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। ফলে তালিকা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। আমি ইউএনওকে বলেছিলাম লটারি করার জন্য। এর মধ্যেই গত মঙ্গলবার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম ইউএনওর কাছে যান। তিনি লটারি না করে সমঝোতার মাধ্যমে তালিকা করার অনুমতি নিয়ে আসেন।’
বদিউজ্জামান আরও বলেন, ‘আমি ইউএনওকে আবার লটারি করে দেওয়ার জন্য বলেছি। এখন লটারিই হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিজিডি কার্ডের ভাগাভাগিতে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বাক্কার ও জামায়াত নেতা ফাইসুল ইসলাম জড়িত আছেন। এ সম্পর্কে আবু বাক্কার বলেন, ‘বিএনপির জন্য ২২৫টি কার্ড নিয়েছেন। জামায়াত নিয়েছে ৯০টি। বাকিগুলো চেয়ারম্যান ইউপি, সদস্য ও এনসিপিকে দিতে বলেছি।’
এ ব্যাপারে জামায়াত নেতা ফাইসুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব না হওয়ায় তাঁর ভাষ্য পাওয়া যায়নি।
ইউএনও এ কে এম নূর হোসেন বলেন, ‘কার্ডের যে ভাগাভাগি, সেটা এনসিপি চায় না। সেই দাবি নিয়ে তারা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বলেছি, ইউনিয়ন পরিষদ যদি না পারে, তাহলে লটারি হবে। ইউনিয়ন যাচাই-বাছাই কমিটি আমাদের লিখিতভাবে জানালে উপজেলা কমিটি লটারি করার ব্যবস্থা নেবে। তখন আর কোনো সমস্যা হবে না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য এনস প ইসল ম উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
আনোয়ারায় মানসিক প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় মানসিক প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে (২২) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গতকাল রোববার বিকেলে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মানসিক প্রতিবন্ধী ওই তরুণী কয়েক মাস ধরে আনোয়ারা এলাকায় রয়েছেন। ধর্ষণের কারণে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে তিনি কাতরাচ্ছিলেন। বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে এলে তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেন। এরপর জনপ্রতিনিধি ও গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে ওই তরুণীকে উদ্ধার করে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মানসিক প্রতিবন্ধী ওই তরুণীকে একাধিক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছেন। চিকিৎসার প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আনোয়ারার ইউএনও তাহমিনা আক্তার বলেন, স্থানীয়ভাবে মানসিক প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে ধর্ষণের খবর পেয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।