সিলেটে বন্ধ থাকা পাথরকোয়ারি খুলে দেওয়াসহ ৫ দফা দাবিতে ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ৬টা থেকে সিলেট জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের এই ধর্মঘট শুরু হয়েছে। দাবি মানা না হলে ৪৮ ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

এর আগে গত বুধবার সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আয়োজনে নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ওই সময় এই ধর্মঘট কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনসিলেটে পর্যটকবাহী যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ২০৩ জুলাই ২০২৫

মালিক-শ্রমিকদের ৫ দফা দাবিগুলো হলো সিলেটে বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়া, ক্রাশার মেশিন ধ্বংস ও অভিযান বন্ধ, পাথর পরিবহনকারী ট্রাক আটকানো বন্ধ, চালকদের হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ এবং সিলেট জেলা প্রশাসকের অপসারণ।

ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অন্যতম কর্মক্ষেত্র পাথরকোয়ারি। এগুলো বন্ধ থাকায় কর্মসংস্থান হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। এ ছাড়া পরিবহন–সংশ্লিষ্ট হাজারো মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সিলেটসহ দেশের যেসব স্থানে পাথরকোয়ারিগুলো বন্ধ আছে, সেগুলো খুলে দিলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি জেলার অসংখ্য মানুষের জীবন-জীবিকার পথ সুগম হবে।

আরও পড়ুনসিলেটে পর্যটকবাহী যানবাহনে আন্দোলনকারীদের হামলা, আটক ২০১ জুলাই ২০২৫

এদিকে আজ বিকেলে সিলেট জেলার পাথর–সংশ্লিষ্ট মালিক ও ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের আহ্বানে পরিবহনশ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের কথা আছে। ওই বৈঠকে পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা কথা আছে।

জেলা পাথর–সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আজ সরকারি ছুটি ও রোববার আশুরার জন্য সরকারি ছুটি আছে। এর মধ্যে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি ছুটি এবং ধর্মীয় দিবসের দিনে এমন কর্মসূচি যৌক্তিক নয়।

জেলা পাথর–সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ পাথরকোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে এর আগে বিক্ষোভ ও অনশন কর্মসূচি পালন করেছিল।

আরও পড়ুনসিলেটে পাথর ভাঙার আরও ১৭টি যন্ত্র ধ্বংস, জব্দ ১ লাখ ৪০ হাজার ঘনফুট পাথর৩০ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর বহন

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
  • সেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি