ছাত্রীদের যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলামকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আনা অভিযোগগুলো তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ শনিবার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড.

মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত দুই পৃথক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

অফিস আদেশ অনুযায়ী, আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (৫ জুলাই) হতে তাকে বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদের চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি বিধি অনুযায়ী জীবন ধারণ ভাতা পাবেন।

আদেশে আরও বলা হয়, শিক্ষক আজিজুলের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো তদন্তে গঠিত কমিটিতে আল ফিকহ অ্যান্ড ‘ল’ বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজিমুদ্দিনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. খোন্দকার আরিফা আক্তার ও আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাকসুদা আক্তার। কমিটিকে আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। 

কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নাজিমুদ্দিন বলেন, চিঠি পেয়েছি। সঠিকভাবে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা সম্ভব হলে আশা করি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।

প্রসঙ্গত, আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের হোয়াটসঅ্যাপে কুরুচিপূর্ণ মেসেজ প্রদান, ভিডিও কলে অপ্রাসঙ্গিক ও অশালীন কথা বলা, রুমে ডেকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন নিয়ে আপত্তিকর জিজ্ঞাসা, ক্লাসে সবার সামনে বিভিন্নভাবে আজেবাজে ইঙ্গিত, বিবাহিত ছাত্রীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, নিজের আন্ডারে প্রজেক্ট করতে পছন্দের ছাত্রীদের বাধ্য করা, বডি শেমিং, কথা মতো না চললে ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষার নম্বর কমিয়ে দেওয়া ও কোর্সে ফেল করানোর অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এসব অভিযোগ এনে গত ২২ জুন বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত ২৮ জুন অভিযুক্ত শিক্ষককে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে তাকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এই শাস্তিতে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে গত ২ জুলাই উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজিজুল ইসলামকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রশাসন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আজ জ ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

অনশন করতে গিয়ে শিক্ষকদের অনেকে অসুস্থ

মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবি আদায়ে শহীদ মিনারে অনশনরত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা যায় তিন দফা দাবি আদায়ে অনশনরত অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

পাশে আন্দোলনরত শিক্ষাকরা ‘এক দুই তিন চার, আবরার তুই গদি ছাড়’; ‘বিশ পার্সেন্ট বাড়ি ভাড়া, দিতে হবে দিয়ে দাও’; ‘অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন, দিতে হবে দিয়ে দাও’; ‘১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, দিতে হবে দিয়ে দাও’; ‘শিক্ষকদের ওপর হামলা কেন, বিচার চাই করতে হবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার জমিরুননেছা স্কুল এন্ড কলেজের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. ফখরুল আলম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “দাবি মেনে নিয়ে প্রজ্ঞাপন না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে। সরকারকে বলব শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত ক্লাসে ফিরে যেতে দিন।”

‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’- এর সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, “অনশনরত অনেক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিন দফা দাবি সম্পূর্ণ মেনে প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত আমাদের অবস্থান কর্মসূচি ও অনশন চলবে।”

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের তিনি দফা দাবিগুলো হলো- এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, ও কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে।

ঢাকা/রায়হান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ